ফেনীতে ৩ নদীর পানি বাড়ায় ভেঙেছে ২০ বাঁধ, প্লাবিত ৬০ গ্রাম

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১০ ১০:২৮:০৬
ফেনীতে ৩ নদীর পানি বাড়ায় ভেঙেছে ২০ বাঁধ, প্লাবিত ৬০ গ্রাম

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার তিন উপজেলার অন্তত ২০টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পড়েছে। এতে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৯ জুলাই) পর্যন্ত ফেনী জেলার চারটি উপজেলায় ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৬ হাজার ৮২৬ জন মানুষ। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন।

ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের উত্তর সতর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “প্রতি বছরই বর্ষায় মুহুরী নদীর পানি এই এলাকায় প্রবেশ করে। এবার মাটিয়াগোধা, দক্ষিণ সতর নদীরকূল, দক্ষিণ সতর, উত্তর পানুয়া, কাশিপুর, নিচিন্তা, লক্ষ্মীপুরসহ ১০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।”

পাঠাননগর এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী জানান, পরশুরাম-ফুলগাজীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ছাগলনাইয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে সড়কগুলো তলিয়ে গেছে, ফলে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, “টানা তিনদিন ধরে জেলায় মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত) ফেনীতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।”

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার জানান, “বুধবার রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বাঁধ ভাঙার কারণে নতুন নতুন এলাকা এখনও প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পর বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ছাগলনাইয়ার ইউএনও সুবল চাকমা বলেন, “বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তীব্র স্রোতে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলায় ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে আছি।”

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক এলাকায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ বিতরণের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”

সত্য প্রতিবেদন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ