নিসানের বড় সিদ্ধান্ত:১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই

সত্য নিউজ: জাপানের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিসান বিশ্বজুড়ে আরও ১০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে পূর্বঘোষিত পরিকল্পনা মিলিয়ে মোট ছাঁটাইয়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ২০ হাজারে, যা কোম্পানিটির মোট কর্মীবাহিনীর প্রায় ১৫ শতাংশ। সোমবার জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে এ তথ্য জানায়।
নিসান বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে সতর্ক করে জানিয়েছিল, ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে তাদের নিট লোকসান দাঁড়াতে পারে ৭০০ থেকে ৭৫০ বিলিয়ন ইয়েনে, যা প্রায় ৪.৭৪ থেকে ৫.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৭ হাজার ৭০০ কোটি থেকে ৬২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। কোম্পানিটি মঙ্গলবার তাদের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। তবে ছাঁটাই বিষয়ক খবরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে নিসান।
বিশ্লেষকদের মতে, নিসানের এই সংকটের অন্যতম কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাজারে ব্যবসায়িক ধস। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যা নিসানের সবচেয়ে বড় বাজার, সেখানে নতুন হাইব্রিড গাড়ির ঘাটতি এবং পুরোনো গাড়ির লাইনআপ প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানকে দুর্বল করে ফেলেছে। অন্যদিকে, চীনে কঠিন প্রতিযোগিতা ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় নিসান অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আছে।
এ সংকট উত্তরণে নিসান আগামী বছরগুলোতে প্রায় ১০টি নতুন মডেলের গাড়ি বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য, নতুন উদ্ভাবনী পণ্যের মাধ্যমে বিক্রি বাড়িয়ে এই পতন ঠেকানো।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত নিসানে মোট কর্মী সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার। এর মধ্যে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার দ্বিতীয় ধাপে আরও ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণাটি নিসানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ঘাটতি এবং উচ্চমূল্যের কারণে বিক্রয় হ্রাস—সব মিলিয়ে নিসানের এই সংকট আন্তর্জাতিক গাড়ি শিল্পে এক নতুন বাস্তবতা তুলে ধরছে
সুদানের গৃহযুদ্ধ: সেনা ও আরএসএফ সংঘাত ও তীব্র মানবিক সংকট
সাত মিনিটে কোটি টাকার জুয়েল চুরি, আরও দুইজন আটক
ফ্রান্সের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরে কোটি টাকার জুয়েল ডাকাতির ঘটনায় আরও দুইজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদের একজন নারী এবং একজন পুরুষ। এর ফলে এ মামলায় এখন মোট চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো।
প্যারিসের প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী এবং ৩৭ বছর বয়সী পুরুষকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের সঙ্গে আরও তিনজনকে আটক করা হলেও তারা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তি পেয়েছেন।
আদালতে হাজিরার সময় নারী অভিযুক্ত কেঁদে ফেলেন এবং সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার বিরুদ্ধে সংগঠিত চুরি এবং অপরাধ পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারক বলেন, তাকে মুক্তি দেওয়া হলে তদন্তে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি প্যারিসের উপকণ্ঠ লা কুরনভ এলাকায় থাকেন।
পুরুষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চুরি ও অপরাধ চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। আগে চুরির ঘটনায় তার নামে মামলা ছিল বলে জানা গেছে। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তিনি কারাগারে থাকবেন। তবে দু’জনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
নারীর আইনজীবী বলেন, তার মক্কেল কোনো অপরাধ করেননি এবং এই সিদ্ধান্ত তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। আরেক আইনজীবী অভিযোগ তুলেছেন যে, পুলিশ সন্দেহভাজনদের যেন জালের মাছের মতো ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
গত মাসে দিনের বেলায় ল্যুভরে এই ডাকাতি ঘটে। মাত্র সাত মিনিটে চোরেরা পাওয়ার টুল ব্যবহার করে জাদুঘরের প্রদর্শনী থেকে প্রায় ১০২ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের জুয়েল চুরি করে। প্রথমে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা আংশিকভাবে অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বিমানবন্দরে দেশ ছাড়ার সময়, আরেকজনকে ধরা হয় তার বাসার কাছে।
চোরেরা পালানোর সময় নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির একটি হীরক-ও-পান্নাখচিত মুকুট ফেলে যায়। তবে সম্রাট নেপোলিয়ন প্রথমের উপহার হিসেবে পরিচিত মূল্যবান নেকলেসসহ আটটি জুয়েল এখনো নিখোঁজ।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ নিউনেজ বলেন, “আমরা নিশ্চিত—এই মূল্যবান জুয়েলগুলো উদ্ধার করতে পারব।”
-আলমগীর হোসেন
কেনিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১, নিখোঁজ অন্তত ৩০
পশ্চিম কেনিয়ায় টানা ভারি বর্ষণের কারণে ভয়াবহ ভূমিধসে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকোমেন শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে এ হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু হলেও রাতে তা স্থগিত রাখা হয়েছে; ভোর থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
ভূমিধসটি ঘটে রাতের অন্ধকারে, কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় মারাকওয়েট ইস্ট এলাকায়। বর্তমানে অঞ্চলটি বর্ষার মৌসুমে থাকায় পাহাড়ি ঢাল দুর্বল হয়ে পড়েছিল, যা ব্যাপক ধসের কারণ হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা উদ্ধারকর্মীদের। মাটির বিশাল অংশ ভেসে গিয়ে বহু গ্রামাঞ্চল তলিয়ে গেছে এবং ঘরবাড়ি, রাস্তা ও কৃষিজমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কেনিয়া রেড ক্রস দুর্গত এলাকা থেকে আকাশপথে ধারণ করা কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে বিস্তীর্ণ এলাকায় কাদার স্রোত, ধ্বংসস্তূপ এবং হঠাৎ সৃষ্ট বন্যার চিত্র দেখা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা সরকারি জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আহতদের বিমানযোগে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
রেড ক্রসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্যা ও ধসের কারণে বহু সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে উদ্ধারকর্মীরা। ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার কারণে অনেক এলাকা এখনো উদ্ধার দলের নাগালের বাইরে, ফলে নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন সকল বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জরুরি সতর্কতা জারি করেছে।
স্থানীয়দের মতে, ভূমিধস শুরু হলে অনেকেই ঘুমের মধ্যে ছিলেন। হঠাৎ মাটিধসে ঘরবাড়ি ধসে পড়ে এবং অনেক পরিবার মুহূর্তের মধ্যে মাটিচাপা পড়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ধাক্কা সামাল দিতে স্থানীয় জনগণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় অংশ নিচ্ছেন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আফ্রিকার এই অঞ্চলে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের হার স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি। ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি এখনও প্রবল রয়েছে।
-নাজমুল হাসান
অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে কেন নাইজেরিয়ায় প্রবেশের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের জন্য প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর ভয়াবহ সহিংসতা চালানো হচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্র এখন অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করতে ওই দেশে প্রবেশ করতে পারে।
তবে নাইজেরিয়া সরকার বারবার সে দেশে খ্রিস্টানদের ওপর হত্যার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। স্থানীয় প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার প্রধানত মুসলিম অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম সম্প্রদায়। সিএনএন এই খবর জানিয়েছে।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্টে ট্রাম্প নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর তথাকথিত 'বৃহৎ হত্যাযজ্ঞ'-এর সমালোচনা করেন; তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র 'অবিলম্বে নাইজেরিয়াকে দেওয়া সব ধরনের সাহায্য ও সহায়তা বন্ধ করবে' এবং দেশটির সরকারকে এই হামলার বিরুদ্ধে 'দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার' জন্য সতর্ক করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, "আমি আমাদের যুদ্ধ বিভাগকে সম্ভাব্য পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি; যদি আমরা আক্রমণ করি, সেটা হবে দ্রুত, কঠোর এবং কার্যকর—ঠিক যেমন ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রিয় খ্রিস্টানদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে!"
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ট্রাম্পের বক্তব্যের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, "হয় নাইজেরিয়া সরকার খ্রিস্টানদের রক্ষা করবে, নতুবা আমরা ওই ইসলামিক সন্ত্রাসীদের ধ্বংস করব।" তিনি বলেন, নিরীহ খ্রিস্টানদের হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
তবে বাস্তবে নাইজেরিয়ায় চরমপন্থী ইসলামপন্থীদের হামলায় খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ই ভুক্তভোগী। দেশটির সহিংসতার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে; কিছু ধর্মীয় সংঘাত, আবার কিছু কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে জমি ও সম্পদ নিয়ে বিরোধ থেকে শুরু করে জাতিগত ও সামাজিক টানাপোড়েনের ফল। যদিও ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই মুসলিম সম্প্রদায়।
সূত্র : সিএনএন।
রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
রাশিয়া সফলভাবে 'পসাইডন' নামের একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার এই ঘোষণা দেন। গ্রিক পুরাণের সমুদ্রদেবতা পসাইডনের নামে নামকরণ করা এই অস্ত্র সমুদ্রের নিচে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয় ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় অঞ্চল ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পুতিনের দাবি, এ ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র বিশ্বের আর কোনো দেশের কাছে নেই। রুশ পার্লামেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য এই টর্পেডোকে ড্রোন ও পারমাণবিক টর্পেডোর সংমিশ্রণ বলে অভিহিত করেছেন; তার দাবি, এটি পুরো একটি রাষ্ট্রকে অচল করে দিতে সক্ষম।
পসাইডনের কথা প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালে; তখন বলা হয়েছিল এটি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে এবং পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম, যা একে আটকানো প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
এর আগে ২১ অক্টোবর রাশিয়া 'বুরেভেস্তনিক' নামের পারমাণবিক চালিত নতুন এক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষারও ঘোষণা দেয়; রাশিয়ার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যে কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে পারে। ন্যাটো এই অস্ত্রটিকে 'এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল' নামে চিহ্নিত করেছে। পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক ছিল ২০১৮ সালে পুতিনের প্রকাশিত 'অজেয় অস্ত্রের' তালিকারই অংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার এসব ঘোষণা মূলত একটি রাজনৈতিক প্রচারণা। ব্রিটিশ রাশিয়া-বিশেষজ্ঞ মার্ক গ্যালিওটি বিবিসিকে বলেন, পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক মূলত 'আর্মাগেডন অস্ত্র'—এগুলো ব্যবহারের অর্থ হবে পৃথিবী ধ্বংস। তিনি মনে করেন, এসব অস্ত্র 'সেকেন্ড-স্ট্রাইক' বা প্রতিশোধমূলক হামলার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
অনেকে রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০১৯ সালে একটি রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণে পাঁচ রুশ পারমাণবিক প্রকৌশলী নিহত হয়েছিলেন; ধারণা করা হয়, সেই বিস্ফোরণ বুরেভেস্তনিক প্রকল্পেরই অংশ ছিল। আন্তর্জাতিক কৌশল গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসএস জানিয়েছে, পারমাণবিক প্রোপালশন প্রযুক্তিতে রাশিয়ার এখনো বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সংলাপ ভেস্তে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে; তারই পরপর পুতিনের এই অস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা আসে। বিশ্লেষক গ্যালিওটির মতে, পুতিনের লক্ষ্য হলো ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা।
উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার বাংলাদেশ সফরকালে তাকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি উপহার নিয়ে ভারতে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে, ড. ইউনূস জেনারেল মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন, যাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করে 'বিকৃত মানচিত্র' ব্যবহার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান, কূটনৈতিক প্রোটোকলের আওতাভুক্ত এমন একটি বিকৃত মানচিত্র সংবলিত গ্রাফিতি উপহার দেওয়াকে ভারত সমর্থন করে কি না।
এই প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমরা জেনেছি যে, 'আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ' নামের ওই বইটি জুলাই ২০২৪ সালের ঘটনা নিয়ে বানানো, সেখানে কিছু গ্রাফিতি আছে।" তিনি ইঙ্গিত দেন, এই বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যাখ্যাও চলে এসেছে।
মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর ফেসবুকের অফিশিয়াল ফ্যাক্ট চেক পেজে দেওয়া একটি বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তাদের বিবৃতিতে এই দাবিকে 'সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত' বলে উল্লেখ করেছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, "প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন 'দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ' বইটি উপহার দিয়েছেন পাকিস্তানের জেনারেলকে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বইটিতে কোনো বিকৃত মানচিত্র নেই।
ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে প্রবেশের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এটি ১৯৮০ সালের ‘রিফিউজি অ্যাক্ট’-এর পর থেকে সর্বনিম্ন সংখ্যা। ওই আইন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রতি বছর ৫০,০০০ শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি থাকলেও পরে তা পরিবর্তনযোগ্য। ১৯৮০ সালে দেশটির শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হয়। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে সর্বশেষ অনুমোদিত শরণার্থী সংখ্যা ১,২৫,০০০ জন।
ট্রাম্প প্রশাসন আরও জানিয়েছে, এই নতুন সীমার মধ্যে প্রাধান্য দেওয়া হবে শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের, যা আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
শরণার্থী হিসেবে কে প্রবেশ করতে পারবেন?
নতুন নীতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জন শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অনুমোদিত করা হবে। তাদের কঠোর নিরাপত্তা ও প্রমাণ যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। স্টেট সেক্রেটারি এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অনুমোদন ছাড়া কেউ দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না। জুন ২০২৫-এ ট্রাম্প একটি প্রেসব্রিফিংয়ে ঘোষণা করেন, “যদি কোনো বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে, তবে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
কেন ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দিচ্ছেন?
ট্রাম্পের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানরা “গণহত্যার” ঝুঁকিতে রয়েছেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২০৪’ স্বাক্ষর করেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ২০২৪ সালের ‘এক্সপ্রোপিয়েশন অ্যাক্ট ১৩’ এর পরিপ্রেক্ষিতে। আইনটি আফ্রিকার ভূমি পুনর্বণ্টনকে বৈধতা দেয়, কখনও কখনও ক্ষতিপূরণ ছাড়া। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই আইনের ফলে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের ভূমি অবৈধভাবে সংক্ষেপ করা হচ্ছে। মে মাসে ৫৯ জন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকান যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ শরণার্থী প্রোগ্রামের মাধ্যমে আসেন।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা ট্রাম্পকে জানিয়েছেন যে, দেশটিতে সহিংসতা সব নাগরিকের বিরুদ্ধে ঘটছে, শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গদের নয়। ইতিহাসবিদ সাউল ডুবো বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা একটি সহিংস দেশ, তবে এটি রাজনৈতিক নয়, বরং অপরাধজনিত সহিংসতা। ট্রাম্পের ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ দাবি ভিত্তিহীন।” বিশেষজ্ঞরা আরও মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকতে পারে, যেমন আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ও ইতিহাস
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির ইতিহাসে বহুবার সীমাবদ্ধতা ও বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে।
১৭৯০: ন্যাচারালাইজেশন অ্যাক্ট, যা শুধুমাত্র মুক্ত শ্বেতাঙ্গদের নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়।
১৮৭৫: পেজ অ্যাক্ট, মূলত এশীয় নারী শ্রমিক ও যৌনকর্মীদের লক্ষ্য করে প্রবর্তিত।
১৮৮২: চীনা এক্সক্লুশন অ্যাক্ট, চীনা শ্রমিকদের ১০ বছরের জন্য আমেরিকা প্রবেশ বন্ধ করে এবং নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করে।
১৯০৭: জেন্টলমেনস্ অ্যাগ্রিমেন্ট, জাপানি শ্রমিকদের প্রবেশ সীমিত করলেও শিক্ষার্থী কিছু অনুমতি পায়।
১৯১৭: এশিয়াটিক ব্যারড জোন অ্যাক্ট, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
১৯২৪: জনসন-রিড অ্যাক্ট, জাতীয় উৎস অনুযায়ী কোটা নির্ধারণ এবং এশীয়দের সম্পূর্ণভাবে প্রেরণ নিষিদ্ধ।
২০১৭: ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘মুসলিম ব্যান’, সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এবং শরণার্থী প্রোগ্রাম স্থগিত থাকে। ২০২১ সালে বাইডেন এটি প্রত্যাহার করেন।
২০২৫ সালে ট্রাম্প আবারও ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে আফ্রিকার কিছু দেশও রয়েছে। এছাড়া আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। সংবাদের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প এই তালিকাকে ৩৬টি দেশ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে পারেন, যার ২৬টি আফ্রিকান দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতির প্রভাব
নতুন সীমা ৭,৫০০ জন, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এটি সংখ্যাগতভাবে ও নীতিগতভাবে বৈষম্যমূলক। ট্রাম্পের শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দেওয়ার নীতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফট পাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রযুক্তি ও আশা
আশার আলো দেখা দিয়েছে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে মাইক্রোচিপে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, যা জালিয়াতি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে, তবে কেবল প্রযুক্তি যথেষ্ট নয়; আন্তর্জাতিক আস্থা ও বৈধ কূটনৈতিক সম্পর্কই দীর্ঘমেয়াদে পাসপোর্টের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ক্রমশ কঠোর হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শুধু সংখ্যাগতভাবে সীমিত নয়, বরং নির্দিষ্ট জাতি ও দেশের নাগরিকদের জন্য বৈষম্যমূলক। ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর এবং বৈষম্যমূলক অভিবাসন নীতি যা চীনা শ্রমিক, এশীয় নারী ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে তার ধারাবাহিকতা ২০২৫ সালে পুনরায় স্পষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি বহন করছে।
ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস,শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ
ফিলিস্তিনের এক বন্দির ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান আইনি কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইফাত টোমার-ইয়েরুশালমি। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) তিনি পদত্যাগ করেন এবং স্বীকার করেন যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ওই ভিডিও প্রকাশের অনুমতি তিনিই দিয়েছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।
এই ঘটনা ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিশেষ করে দেশটির ডানপন্থি রাজনীতিকরা এই তদন্তের কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখন তদন্তকারীরা সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশ করেন, তখন বিক্ষোভকারীরা দুটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন সশস্ত্র সেনা একজন বন্দিকে এক পাশে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এরপর ভেতরে কী ঘটছে, তা ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছিল না।
গত বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেছিলেন, ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ফৌজদারি তদন্ত চলছে এবং টোমার-ইয়েরুশালমিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে টোমার-ইয়েরুশালমি বলেছেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আইনবহির্ভূত কিছু করেননি; বরং তিনি সেনাবাহিনীর আইনি বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুদ্ধ চলাকালে তার বিভাগটি 'ভিত্তিহীন অপপ্রচারের লক্ষ্যবস্তুতে' পরিণত হয়েছিল।
বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের বড় ধস
বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের অবস্থান আরও নিম্নমুখী হয়েছে। হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সের ২০২৫ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত দেশটি এবার নেমে গেছে ৮৫তম স্থানে, যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ ধাপ নিচে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পতন ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক বিশ্লেষণে জানিয়েছে, বিশ্বের তুলনামূলকভাবে ছোট অর্থনীতি রুয়ান্ডা (৭৮তম), ঘানা (৭৪তম) এবং আজারবাইজান (৭২তম) পর্যন্ত ভারতের ওপরে অবস্থান করছে। অথচ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং নিজেকে ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করছে। এ অবস্থানকে ভারতের বৈশ্বিক প্রভাবের সঙ্গে বেমানান বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক জনপ্রিয় ট্রাভেল ইনফ্লুয়েন্সার সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী ভুটান ও শ্রীলঙ্কা ভারতীয়দের স্বাগত জানালেও ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলো এখনো ভিসা দিতে অনীহা প্রকাশ করে।” সেই হতাশা হেনলি ইনডেক্সের র্যাংকিংয়েও প্রতিফলিত হয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় পাসপোর্টধারীরা মাত্র ৫৭টি দেশে ভিসামুক্তভাবে ভ্রমণ করতে পারেন, যেখানে সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা ১৯৩টি, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৯০টি এবং জাপানের ১৮৯টি দেশে প্রবেশাধিকার পান। এশিয়ার এই তিন দেশই ধারাবাহিকভাবে শীর্ষে রয়েছে।
গত এক দশক ধরেই ভারতীয় পাসপোর্টের অবস্থান ৮০-এর ঘরেই স্থবির। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার সময় ভারতীয়রা ৫২টি দেশে ভিসামুক্তভাবে যেতে পারতেন এবং দেশের অবস্থান ছিল ৭৬তম। যদিও পরবর্তী বছরই তা নেমে আসে ৮৫তম স্থানে। মাঝে কিছুটা উন্নতি হলেও ২০২৫ সালে আবারও পতন ঘটেছে। ফলে ভারতের পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে স্থবির ও দুর্বল অবস্থায় রয়ে গেছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ কূটনৈতিক ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ঘাটতি। সাবেক রাষ্ট্রদূত আচল মালহোত্রা বলেন, “পাসপোর্টের শক্তি শুধু অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতিফলন নয়; এটি একটি দেশের আন্তর্জাতিক আস্থা, কূটনৈতিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিচ্ছবি।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট একসময় শীর্ষ ১০–এ ছিল, এখন তা ১২তম স্থানে। ভারতের ক্ষেত্রেও অনুরূপ একঘরে নীতি ও সীমিত কূটনৈতিক সক্রিয়তাই পতনের কারণ।”ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় পাসপোর্ট একসময় অনেক শক্তিশালী ছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভারতীয়রা পশ্চিমা বহু দেশে ভিসামুক্তভাবে ভ্রমণ করতে পারতেন। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে খালিস্তান আন্দোলন ও পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের নিরাপত্তা ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পশ্চিমা দেশগুলো ভারতের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালে দিল্লি পুলিশ ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে, যা আন্তর্জাতিক আস্থার ওপর আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে। ভারতের ই-পাসপোর্ট প্রকল্পকে বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন। এই পাসপোর্টে মাইক্রোচিপে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে জালিয়াতি প্রতিরোধ করা যাবে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মালহোত্রা বলেন, “ই-পাসপোর্ট প্রযুক্তি ভারতের ভিসা প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও নিরাপদ করবে, তবে কেবল প্রযুক্তিই যথেষ্ট নয়; দরকার নতুন কূটনৈতিক চুক্তি ও আস্থা পুনর্গঠন।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাসপোর্ট র্যাংকিং শুধু ভ্রমণ সুবিধার সূচক নয়, বরং একটি দেশের সফট পাওয়ার ও বৈশ্বিক প্রভাবের পরিমাপ। শক্তিশালী পাসপোর্ট মানে বাড়তি ব্যবসায়িক সুযোগ, আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও বিনিয়োগে অগ্রাধিকার; আর দুর্বল পাসপোর্ট মানে সীমিত চলাচল, জটিল ভিসা প্রক্রিয়া ও কম আস্থা। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েও ভারত সফট পাওয়ারে পিছিয়ে পড়ছে, যা তার বৈশ্বিক অবস্থান ও নাগরিকদের আন্তর্জাতিক চলাচল—উভয় ক্ষেত্রেই বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাঠকের মতামত:
- শেষ মুহূর্তে মেসির গোলেও বাঁচল না মায়ামি, ন্যাশভিলের দাপটে সিরিজ সমতায়
- সুদানের গৃহযুদ্ধ: সেনা ও আরএসএফ সংঘাত ও তীব্র মানবিক সংকট
- সাত মিনিটে কোটি টাকার জুয়েল চুরি, আরও দুইজন আটক
- রিপাবলিক ব্যাংক এর তৃতীয় প্রান্তিক (Q3) আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- এক্সিম ব্যাংক এর তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডের তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন
- মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক ফলাফল প্রকাশ
- শাহরুখের জন্মদিনে পরিবার, বন্ধু ও নতুন ছবি
- ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষ আন্দালিব রহমান পার্থের কঠোর হুঁশিয়ারি
- কেনিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১, নিখোঁজ অন্তত ৩০
- বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম আবারও বাড়ল, বাজুসের নতুন ঘোষণা
- অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে কেন নাইজেরিয়ায় প্রবেশের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
- জুলাই সনদ নিয়ে সরকারের মধ্যস্থতা, গোপন আলোচনায় কী ঘটছে
- টিভিতে আজকের ক্রীড়া সূচি
- ‘গোল্ডেন বুট’ হাতে, ‘গোলের বন্যা’ পায়ে
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- হাশরের ময়দান: যে অপরাধের জন্য পশু-পাখিরও বিচার হবে
- ০২ নভেম্বর: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধানের আগমন নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানা গেল
- ওষুধ ছাড়াই হাতের ব্যথা সারান সহজ এই ব্যায়ামটি ঘরে বসেই করতে পারবেন
- রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
- সহজ কিছু টিপস মানলেই আমেরিকা ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে
- রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কড়া সমালোচনা সালাহউদ্দিন আহমদের
- যুবদল নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
- সোনার বাংলাদেশ নয় এবার 'খেলাফতের বাংলাদেশ' দেখতে চান মাওলানা মামুনুল হক
- নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত
- আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে শান্তর নতুন চক্রের সূচনা তিন অধিনায়কের যুগ বহাল
- ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ইসি আনোয়ারুল
- ১৪ বছরের প্রতীক্ষা শেষে খুলনায় আধুনিক কারাগার চালু ফুল দিয়ে বরণ করা হলো কয়েদিদের
- ধাপে ধাপে জানুন বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া
- উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
- কঠিন ব্যাকরণ নয় শিশুদের মতো করে ইংরেজি শেখার সহজ কৌশল শিখে নিন
- বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত
- ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
- অভিনয় ছেড়ে শরীর নিয়েই বেশি চর্চা হয় কেন সিডনি সুইনি মুখ খুললেন নগ্ন দৃশ্য বিতর্কে
- তীব্র আর্থিক সংকটে অন্তর্বর্তী সরকার
- ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস,শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ
- বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের বড় ধস
- ওষুধ নয় প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি কমাবে রান্নাঘরের ৭ সুপারফুড
- নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না যারা তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়: জামায়াত নেতা
- ভারত কি পরামর্শ দেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করতে যা জানা গেল দিল্লিতে
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- নিম্ন-আয়ের মানুষের দুর্ভোগ গরিবের বরাদ্দ চাল নিয়ে 'চালবাজি' থামছে না
- বাংলাদেশ নেপাল শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তন কেন হলো বিশ্লেষণ করলেন ভারতের এনএসএ
- বাংলাদেশকে নিয়ে অজিত দোভালের করা মন্তব্যে তোলপাড়
- ট্রাম্পের দেওয়া রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখতে মূল্য পরিশোধ করলেন কিয়ার স্টারমার
- অস্কার আলোচনায় সিডনি সুইনি: পর্দায় প্রতিভা, রেড কার্পেটে রূপের জাদু
- আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম
- দীর্ঘমেয়াদি কাশি হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সার জেনে নিন সতর্কতার সংকেত
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ২৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ প্রভাবে ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস
- ২৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- আজকের বাজারের সেরা এবং খারাপ পারফরমার: লাভের সম্ভাবনা কোথায়?
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় বাবা হারানো: দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে স্ত্রীর আকুল আবেদন
- ২৮ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৭ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে
- গ্যাস খাতে তিতাসের নতুন দিগন্ত








