চাঁদপুরে যুবক হত্যার বিচারে মরদেহ নিয়ে থানার সামনে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৭:১১:৫৮
চাঁদপুরে যুবক হত্যার বিচারে মরদেহ নিয়ে থানার সামনে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ফরহাদ জুয়েল নামে এক যুবক হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মরদেহ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে ছেংগারচর বাজারে মতলব উত্তর থানার সামনে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় থানা চত্বরে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খাইরুল কবির ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক। তারা নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন যে, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে।

নিহত ফরহাদ জুয়েল (২৭) কলাকান্দা ইউনিয়নের সাতানি গ্রামের বাসিন্দা। তার এক স্ত্রী ও চার বছর বয়সী সন্তান রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জুলাই সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ফরহাদ নিখোঁজ হন। পরদিন হাইমচর উপজেলার নীলকমল এলাকায় মেঘনা নদীতে তার মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। উদ্ধার করা মরদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছে নৌ-পুলিশ।

নিহতের বাবা মো. আবুল হাশেম বলেন, "আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি, এখন চাই বিচার হোক। দোষীরা যেন কোনোভাবে রেহাই না পায়।"

ফরহাদের স্ত্রী সুরভি আক্তার বলেন, "আমার ছোট্ট সন্তান বাবাহারা হয়েছে। আমি শুধু বিচার চাই। চাই না আর কোনো পরিবার এভাবে ধ্বংস হোক।"

নিহতের মা সুফিয়া বেগম বলেন, "আমার বুক খালি হয়ে গেছে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"

সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল কবির জানান, "এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সম্পৃক্ত সন্দেহে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। দুপুরে নিহতের বাবা ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। তদন্ত কার্যক্রম গুরুত্বসহকারে চলছে।"

সত্য প্রতিবেদন/আশিক


খুলনায় ডুমুরিয়ায়া বাড়িতে ঢুকে যুবদল নেতাকে হত্যা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৩ ১২:০৬:৫৫
খুলনায় ডুমুরিয়ায়া বাড়িতে ঢুকে যুবদল নেতাকে হত্যা
নিহত শামীম হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ভাড়া বাড়িতে ঢুকে মো. শামীম হোসেন নামে যুবদলের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে উপজেলার আঠারো মাইল এলাকায় সৈয়দ ঈসা কলেজের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শামীম হোসেন তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের উথুলি গ্রামের আব্দুল গফ্ফার শেখের ছেলে ও সাবেক ইউপি সদস্য। তিনি তালা ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

তালা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুর রহমান সাইদ এটিকে একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।


১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেপ্তার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৩ ১০:৫০:৪৪
১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেপ্তার
ছবিঃ সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকায় ১১ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. আলামিন (৩০) নামে এক ইমামকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৪। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে সিলেটের সদর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহ র‍্যাব-১৪ সদর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার হওয়া মো. আলামিন গফরগাঁও উপজেলার মৃত আবুল কালাম আযাদের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে এক বছর ধরে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

র‍্যাব-১৪-র কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামসুজ্জামান বলেন, গত ৩১ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আলামিন স্থানীয় শিশু-কিশোরদের ছুটি দিয়ে ১১ বছরের ওই শিক্ষার্থীকে মসজিদের পাশের একটি মাদরাসায় ঝাড়ু আনতে পাঠান। শিশুটি একটি কক্ষে ঝাড়ু আনতে গেলে আলামিনও ওই কক্ষে ঢোকেন। এরপর শিশুটির মুখ চেপে ধরে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।

শিশুটির পরিবার এই ঘটনা জানার পর তার মা বাদী হয়ে ১ আগস্ট পাগলা থানায় আলামিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর র‍্যাব বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান নিশ্চিত করে সিলেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। আসামিকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


‘সীমিত আয়ের মানুষ খাবেটা কী?’: ইলিশের পর পটোলের দামও আকাশছোঁয়া

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৩ ০৯:৩৮:৩৯
‘সীমিত আয়ের মানুষ খাবেটা কী?’: ইলিশের পর পটোলের দামও আকাশছোঁয়া

বাজারের কম দামের সবজিগুলোর একটি পটোল। বর্ষায় ইলিশের সঙ্গে পটোলের তরকারি জনপ্রিয়। এবার ইলিশ কেনার উপায় নেই। দাম আকাশছোঁয়া। পটোলের দামও কম নয়। সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, প্রতি কেজি পটোল এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি।

শুধু পটোল নয়, বেশির ভাগ সবজির দাম এবার বেশি। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের বাজারদরের দৈনিক তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের ২১ আগস্টের চেয়ে এ বছরের ২১ আগস্ট (গত বৃহস্পতিবার) ১৬টি সবজির দাম গড়ে ২৬ শতাংশ বেশি।

প্রতিবছর জুলাই ও আগস্টে বৃষ্টি ও বন্যায় সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দামও বেড়ে যায়। বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমানও সে কথাই বলেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা শেষের এই সময়ে শাকসবজির দাম একটু বেশি থাকে। রবিশস্য আসার আগে এমনটা মেনে নিতে হবে। তবে বাজার যাতে ঠিক থাকে, সে জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’

অবশ্য কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, বর্ষার স্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে এবার সবজির দাম বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এবার আগস্টে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি কম হয়েছে।

সবজির সঙ্গে বেড়েছে মাছ ও মাংসের গড় দামও। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, পাঁচটি মাছের দাম বেড়েছে গড়ে ১৮ শতাংশ। মাংস ও ডিম শ্রেণিতে গড় মূল্যবৃদ্ধি ৭ শতাংশ।

সবজি, মাছ ও মাংস মানুষ নিয়মিত কেনে। এগুলোর দাম বাড়লে তা সংসারের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেয়। এখন চাল, ডাল ও তেলের দাম চড়া। সঙ্গে সবজি ও মাছের দর মানুষকে আরও চাপে ফেলছে।

রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেনকে বৃহস্পতিবার পাওয়া যায় স্থানীয় একটি গলিতে, যেখানে ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রি হয়। তিনি তিনটি মাঝারি বেগুন কিনছিলেন। দাম পড়েছিল ৬০ টাকা। তিনি জানালেন, এবার আগস্ট মাসের প্রথম ১৯ দিনে একটি ইলিশও কেনেননি। কারণ, দাম অত্যধিক চড়া। মৌসুমও শেষের পথে। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি আধা কেজি ওজনের একটি ইলিশ কেনেন ৮০০ টাকা দিয়ে।

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আধা কেজির ইলিশ আগে মোটামুটি ৪০০ টাকায় কেনা যেত। এখন দাম দ্বিগুণ। সঙ্গে বেগুনের দামও দ্বিগুণ হয়েছে। কেজি ১২০ টাকা। তিনি আরও বলেন, সীমিত আয়ের মানুষ মাছ কিনতে পারবে না, মাংস কিনতে পারবে না, ডিম কিনতে পারবে না, সবজি কিনতে পারবে না—তাহলে খাবেটা কী?’

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় বাজারদরের তালিকায় দেখা যায়, ১৬টির মধ্যে এবার ১৪টি সবজির সর্বনিম্ন দাম ৫০ টাকা বা তার বেশি। গত বছর ৫০ টাকা বা বেশি সর্বনিম্ন দর ছিল সাতটি সবজির।

এবার দুটি সবজি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ কেজির কমে—মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচা পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা। গত বছর ৯ ধরনের সবজির সর্বনিম্ন দর ছিল ২৫ থেকে ৪৫ টাকা। এসবের বাইরে এবার আলুর দাম বেশ কম, ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে রাতে সবজি নিয়ে আসেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার রাতে ও গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজারের আটজন ফড়িয়া ও আড়তকর্মীর সঙ্গে কথা বলে সবজির মূল্যবৃদ্ধির কয়েকটি কারণ জানা যায়। প্রথমত, বৃষ্টিতে সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এ কারণে সরবরাহ কমেছে, দাম বেড়েছে।

এ বিষয়ে বগুড়া থেকে বরবটি নিয়ে আসা ফড়িয়া রিপন আলী বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বলেন, বৃষ্টি-বর্ষায় খেত নষ্ট হয়ে গেছে। গাছের গোড়ায় পানি উঠে পচে গেছে, সে জন্য এখন বরবটির সরবরাহ কম। দাম একটু বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, যতটা মনে হচ্ছে, এখনো এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়নি।

সবজির মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় কারণ হিসেবে কেউ কেউ বলেছেন, গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তখন বেশ কিছুদিন চাঁদাবাজি, পরিবহন ও বাজারকেন্দ্রিক ‘সিন্ডিকেট’ ছিল না। এতে সবজির দাম কমে গিয়েছিল। এখন আবার আগের অবস্থা হয়েছে। তৃতীয়ত, বেশ কিছু মহাসড়কের পরিস্থিতি ভালো নয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় চলাচলে বেশি সময় লাগছে। এ কারণে ট্রাকভাড়াও কিছুটা বেশি চাওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের একজন ফড়িয়া বলেন, একজন সবজি নিয়ে আসার পর ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই বিক্রি হয়। আরেকজন কিনে নেন। এভাবে হাতবদলে দাম বাড়ে। গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশ কিছুদিন এসব ছিল না।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) গত ২৯ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলেছে, মধ্যস্বত্বভোগীদের আধিপত্য, যথাযথ তথ্যের অভাব, চাঁদাবাজি ও পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচের কারণে খুচরা বাজারে সবজির দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাম বাড়ছে, সেটা আমরা জানি। আসলে কী কারণে দাম বাড়ছে, কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তার জন্য বিস্তৃত গবেষণা দরকার। এত দিন যা হয়েছে, তা অস্থায়ী ভিত্তিতে হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো ও পরিস্থিতি বুঝতে একটি স্থায়ী কৌশলও থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, সবজি, মাছ ও মাংসের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।


মেঘনার বুকে ভেসে উঠল নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের লাশ, স্তব্ধ পরিবার-সহকর্মীরা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ২০:৪০:৩৭
মেঘনার বুকে ভেসে উঠল নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের লাশ, স্তব্ধ পরিবার-সহকর্মীরা

বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক ও আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার (৭১) নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও স্বজনেরা। শুক্রবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন বিভুরঞ্জন সরকার। দীর্ঘদিনের অভ্যাস অনুযায়ী বিকেল পাঁচটার মধ্যে তিনি বাসায় ফেরেন। কিন্তু সেদিন আর ফেরেননি। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মোবাইল ফোনটিও তিনি বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। রাত নামার পরও তাঁর কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। রাত ৯টার দিকে ছেলে ঋত সরকার আজকের পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নিশ্চিত হন যে তিনি অফিসেও যাননি। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ব্যর্থ হলে পরিবার রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

মেঘনায় ভাসমান মরদেহ

নিখোঁজ হওয়ার পরদিন শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে স্থানীয়রা মেঘনা নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখেন। পরে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ খবর দিলে কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত মরদেহটি মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ পাঠান বলেন, “মরদেহের ছবি রমনা থানায় পাঠানো হয়েছে। বিভুরঞ্জন সরকারের স্বজনেরা ছবিটি দেখে নিশ্চিত হয়েছেন যে এটি তাঁরই মরদেহ।” একই কথা জানিয়েছেন রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম। তাঁর ভাষায়, “পরিবারের দেওয়া ছবির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া মরদেহের মিল রয়েছে। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে ধরে নিচ্ছি এটি সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের লাশ।”

শোকাহত স্বজনদের প্রতিক্রিয়া

সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের শ্যালক দীপঙ্কর সাহা বলেন, “ছবিটি আমরা দেখেছি। এটি আমার ভগ্নিপতির সঙ্গেই মিলে গেছে।” তাঁর ছেলে ঋত সরকার জানান, “উদ্ধার হওয়া মরদেহটি বাবারই হতে পারে। আমরা মর্গের পথে রয়েছি।”

সাংবাদিক সমাজে শোকের ছায়া

বিভুরঞ্জন সরকারের আকস্মিক মৃত্যুতে সাংবাদিক মহলে নেমে এসেছে গভীর শোক। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সহকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন পেশাদারিত্ব, সততা ও দায়িত্বশীলতার প্রতীক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি নবীন সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও অনুপ্রেরণা দেওয়ার কাজেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

আজকের পত্রিকার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বিভুরঞ্জন সরকার সব সময়ই সংবাদকে দেখতেন জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে। তাঁর অনুপস্থিতি কেবল একটি পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো গণমাধ্যম অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া

পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি কোনো অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তবে প্রাথমিকভাবে তদন্ত চলছে।

মানবিক দিক ও প্রেক্ষাপট

বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু আবারও প্রশ্ন তুলেছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে। দেশে একের পর এক সাংবাদিক নিখোঁজ ও রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। পেশার কারণে তাঁরা অনেক সময় নানা ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েন। সহকর্মীরা মনে করছেন, বিভুরঞ্জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি।


বাউফলে এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১১:৪৮:৩৫
বাউফলে এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) বাসায় প্রবেশ করে চাঁদা দাবি ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে যুবলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা কাবিল মৃধা (৩৮) নওমালা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি এবং বটকাজল গ্রামের মৃত রুস্তম আলী মৃধার ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় মদ্যপ অবস্থায় কাবিল মৃধা হাতে ছুরি নিয়ে বাউফল উপজেলার এএসপি মো. শফিকুল ইসলামের বাসায় প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি এএসপির বাবা আব্দুল মোতালেবের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কাবিল বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করেন।

স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কাবিল মৃধার তাণ্ডব থামান এবং তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পরে রাত ৯টার দিকে বাউফল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করে।

বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, “চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরের অভিযোগে কাবিল মৃধাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

-রফিক


পাথর লুটে আমাদের কোনো কর্মীও জড়িত নয়, দুদককে ক্ষমা চাইতে হবে’: জামায়াত

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ২১:০৯:৪৪
পাথর লুটে আমাদের কোনো কর্মীও জড়িত নয়, দুদককে ক্ষমা চাইতে হবে’: জামায়াত
ছবিঃ সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামী সাদাপাথর লুটে তাদের নেতৃত্বকে জড়িয়ে করা দুদকের প্রতিবেদনের কোনো সত্যতা নেই বলে দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) নগরীর দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াত এই দাবি জানায়।

সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, দুদকের প্রতিবেদনে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীর নাম না থাকার পরও সংবাদমাধ্যম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী দুদকে খোঁজ নিয়েও এ ধরনের কোনো তদন্ত প্রতিবেদনের হদিস পায়নি।

ফখরুল ইসলাম গণমাধ্যমের রিপোর্টকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, কাল্পনিক ও ফরমায়েশি’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, প্রমাণ ছাড়া দুদক এ ধরনের প্রতিবেদন করলে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি আরও বলেন, পাথর লুটে জামায়াতের কোনো নেতা তো দূরের কথা, কোনো কর্মীও জড়িত নয়। প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. জয়নাল আবেদীন, মহানগর সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী এবং নায়েবে আমীর ড. নুরুল ইসলাম বাবুল।

/আশিক


আবারও খোলা হলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬ গেট, পানিবন্দি ২০ হাজার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ২০:০৮:২০
আবারও খোলা হলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬ গেট, পানিবন্দি ২০ হাজার

বিপৎসীমা অতিক্রম করায় রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি ছেড়ে দিতে আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট। এর ফলে রাঙামাটি সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এদিকে, উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। হ্রদে পানির উচ্চতা বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বুধবার রাত ৮টার পর বাঁধের সবগুলো গেট ৬ ইঞ্চি করে উঠিয়ে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর আবার ১০৮ ফুট (এমএসএল) অতিক্রম করেছে, যা বিপৎসীমার ওপরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুধবার রাত ৮টা থেকে গেট খুলে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৫টি ইউনিট চালু থাকায় আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি নির্গত হচ্ছে, যার ফলে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, পানি ছাড়ার কারণে ভাটি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। বৃহস্পতিবার সকালে হ্রদের পানির স্তর ছিল ১০৮ দশমিক ৩৫ ফুট উচ্চতায়, যেখানে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট।

তিনি আরও জানান, হ্রদের পানির গতিপ্রবাহ এবং বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। এর আগে, ৫ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত হ্রদের পানির স্তর ১০৯ ফুটের কাছাকাছি চলে যাওয়ায় বাঁধের গেটগুলো ৩ ফুট করে উঠিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হয়েছিল।

অন্যদিকে, লাগাতার বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, জুরাছড়ি, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। পানির নিচে তলিয়ে গেছে রাঙামাটির বিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু।

রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুহুল আমিন বলেন, সদরসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় দুর্গত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে। জেলা প্রশাসন থেকে পানিবন্দি লোকজনের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

/আশিক


পাথর লুটে জড়িত ৫২ জনের নাম প্রকাশ:তালিকায় রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের নাম

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৯:৩০:৩৩
পাথর লুটে জড়িত ৫২ জনের নাম প্রকাশ:তালিকায় রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের নাম
ছবিঃ সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর লুটপাটের পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ও সুবিধাভোগী ৫২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদনে। এই তালিকায় বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ, এনসিপি-এর নেতাদের পাশাপাশি খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর নামও রয়েছে।

দুদকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকা থেকে কয়েকশ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুবিধাভোগী হিসেবে খনিজ সম্পদ অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিগত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করা চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বিজিবি-এর নাম উঠে এসেছে। সরকারি সংস্থা ও প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও পাথর লুটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ, এনসিপিসহ ৪২ জন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার এনফোর্সমেন্ট বিভাগের নির্দেশে গত ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল সাদাপাথরে অভিযানে যায়। বুধবার (২০ আগস্ট) সেই প্রতিবেদন জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়।

দুদকের দল তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, স্থানীয় প্রশাসনের কিছু পর্যটন সেবা এবং নদীর তীরেই বিজিবি ক্যাম্প টহল চালু থাকা সত্ত্বেও বিগত কয়েক মাসে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ইন্ধন ও সরাসরি সম্পৃক্ততায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ এভাবে সরানো হয়েছে। পাথর আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশ ছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না থাকলেও গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে, বিশেষ করে গত ৩ মাস ধরে পাথর উত্তোলন চলতে থাকে। পর্যটন এলাকাটি সংরক্ষিত পরিবেশ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও ১৫ দিন আগে থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলন ও আত্মসাৎ হয়েছে। প্রায় ৮০ ভাগ পাথর তুলে এলাকায় অসংখ্য গর্ত ও বালুচরে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবীকে দায়ী করে বলা হয়, ৮ জুলাই তিনি পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছিলেন, ‘সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে যাবে না কেন?’ তার এই বক্তব্যটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে সাদাপাথর লুটপাটে ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সদিচ্ছার অভাব, অবহেলা ও ব্যর্থতা স্পষ্ট বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পাথর লুটপাট ঠেকাতে তিনি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে চরম ব্যর্থ হয়েছেন।

সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দিলেও তিনি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে বর্তমানে কর্মরত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চারজন ইউএনওকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাথরকাণ্ডের জন্য দায়ী করা হয়েছে। তারা হলেন আজিজুন্নাহার, মোহাম্মদ আবুল হাছনাত, ঊর্মি রায় ও আবিদা সুলতানা।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ করে পাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধভাবে উত্তোলিত প্রতি ট্রাক পাথর থেকে ১০ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হয়। যার মধ্যে পুলিশের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের জন্য ৫ হাজার টাকা বণ্টন হতো।

প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বিজিবিকেও দায়ী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সাদাপাথর এলাকায় বিজিবির ৩টি পোস্ট থাকা সত্ত্বেও কোম্পানি কমান্ডার ইকবাল হোসেনসহ বিজিবি সদস্যদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীরা খুব সহজেই পাথর লুটপাট করতে পেরেছে। বিজিবি সদস্যরা প্রতি নৌকা থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দিত এবং পাথর উত্তোলনের সময় কোনো বাধা দিত না।

রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের নাম:

প্রতিবেদনে পাথর লুটে জড়িত হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন:

বিএনপি: সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজি কামাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি লাল মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু, সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরান, কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম ওরফে স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স।

আওয়ামী লীগ: কার্যক্রম নিষিদ্ধ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া, শাহাবুদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া এবং সাইদুর রহমান।

জামায়াত: সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফকরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।

এনসিপি: সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।

অন্যান্য: আনর আলী, উসমান খাঁ, ইকবাল হোসেন আরিফ, দেলোয়ার হোসেন জীবন, আরজান মিয়া, মো. জাকির, আলী আকবর, আলী আব্বাস, মো. জুয়েল, আলমগীর আলম এবং মুকাররিম আহমেদ।

দুদকের প্রতিবেদনে নাম আসায় সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদী, মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন সাহান প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগগুলোকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, তারা এর নিন্দা জানান।

/আশিক


গ্যাস পাম্পে বিস্ফোরণ: নবীগঞ্জে সিএনজি স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১২:৩৯:১১
গ্যাস পাম্পে বিস্ফোরণ: নবীগঞ্জে সিএনজি স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
ছবিঃ সংগৃহীত

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে একটি সিএনজি ফুয়েল স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গ্যাস পাম্পে থাকা একটি বাস ও ১০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৬ জনকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পাম্পের সহকারী ম্যানেজার শোয়েব আহমদ জানান, ভোর ৫টার দিকে একটি বাস গ্যাস স্টেশনে গ্যাস নিতে আসে। বাসটিতে গ্যাস ভরা হচ্ছিল এমন সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর মুহূর্তেই আগুন পুরো পাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে গ্যাস নিতে আসা ১০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।

পাম্পের তিনতলায় ঘুমিয়ে থাকা কয়েকজন কর্মী প্রাণ বাঁচাতে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে পাম্পের কর্মী রাসেল (২৫) এবং ম্যানেজার জয়নাল আবেদিন (৪০)-সহ আরও ৪ জন সিএনজিচালক রয়েছেন।

নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তিনি জানান, আগুনে ১০টি সিএনজি ও একটি বাস পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ প্রাথমিকভাবে ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন।

পাঠকের মতামত: