দুই দিনে স্বর্ণের দাম কমলো ৪ হাজার টাকা!

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৩ ০৩:২০:২১
দুই দিনে স্বর্ণের দাম কমলো ৪ হাজার টাকা!

সত্য নিউজ: দেশের স্বর্ণবাজারে টানা দরপতনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে আবারও এক দফা কমানো হয়েছে স্বর্ণের দাম। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, তেজাবি স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৫ থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে।

এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করা হয় সোমবার (১৩ মে) বাজুসের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং’-এর এক বৈঠকে। বৈঠক শেষে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে দাম হ্রাসের তথ্য জানানো হয়। এর আগে সর্বশেষ গত ১১ মে স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারও আগে ৯ মে এক ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছিল ৩ হাজার ১৩৭ টাকা।

নতুন দামের তালিকা অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৯ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমেছে ২ হাজার ৫৬৬ টাকা, নতুন দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৪৫ টাকা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯৩ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৩৯ টাকায়।

স্বর্ণের দাম কমলেও রুপার বাজারে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের ২ হাজার ৭১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

গত চার মাসে দেশের স্বর্ণবাজারে দামের ব্যাপক ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অন্তত ২১ বার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। ৭ ও ৯ মে; ১১, ১৩, ১৭, ২০, ২২ ও ২৩ এপ্রিল; ২, ৬, ১১, ১৮ ও ২১ ফেব্রুয়ারি; ১৬, ২৩ ও ৩০ জানুয়ারিতে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। অপরদিকে, ৩, ৯, ১১ ও ১৩ মে; ৮, ১৪ ও ২৩ এপ্রিল; ২ ও ৯ মার্চ; ২৪ ও ২৮ ফেব্রুয়ারিতে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মূল্য।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দরপতনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং অভ্যন্তরীণ তেজাবি স্বর্ণের দামের নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে দেশের বাজারে এই দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত এসেছে। এর ফলে স্বর্ণ ক্রয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন সাধারণ ক্রেতা ও স্বর্ণশিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই দরপতন সাময়িক হতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন না এলে ভবিষ্যতে দাম আবারও বাড়তে পারে।

এদিকে বাজুস ভোক্তাদের স্বর্ণ কেনার সময় সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলছে, প্রতারণা এড়াতে প্রত্যয়নপত্রসহ স্বীকৃত জুয়েলারি দোকান থেকেই স্বর্ণ কেনা উচিত, যাতে স্বর্ণের মান ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত থাকে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ