সোশ্যাল মিডিয়ায় কতটা সময় হারাচ্ছেন জানেন? সংখ্যাটা ভাবনার চেয়েও ভয়াবহ

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ৩০ ১৬:৪৭:১৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় কতটা সময় হারাচ্ছেন জানেন? সংখ্যাটা ভাবনার চেয়েও ভয়াবহ

সকালে ঘুম থেকে উঠেই যে কাজটি অনেকেই সবচেয়ে আগে করেন, সেটি হলো মোবাইল ফোন হাতে নেওয়া। এলার্ম বন্ধ করা, সময় দেখা কিংবা একটিবার ফেসবুকে ঢুঁ মারা—এসব কাজের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় দিনের। কিন্তু এই ‘একটিবার’ ঢুঁই কখন যে ঘণ্টাখানেক স্ক্রলিংয়ে রূপ নেয়, তা অনেক সময়ই টের পাওয়া যায় না।

এরপর দিনের কাজের ফাঁকেও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা ইউটিউব—কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে চোখ পড়ে। অফিস শেষে বাসায় ফিরে আবারও ঘন্টার পর ঘন্টা চলে ভিডিও দেখা, চ্যাটিং, স্টোরি আপলোড করা কিংবা অন্যের পোস্টে মন্তব্য করা।

তবে প্রশ্ন হলো—এভাবে প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা আসলে কত সময় ব্যয় করছি?

সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, একজন সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গড়ে প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ২ ঘণ্টা ২১ মিনিট সময় কাটান। বছর শেষে এই সময় দাঁড়ায় প্রায় ৮৭০ ঘণ্টা, অর্থাৎ ৩৬ দিনের বেশি—একটি পূর্ণাঙ্গ মাসেরও বেশি সময় কেবল সোশ্যাল স্ক্রিনেই কাটছে!

স্ট্যাটিস্টা, ডাটা রিপোর্টাল এবং ই-মার্কেটের মতো গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেন। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশ তিন ঘণ্টা বা তার বেশি, আর ৫৩ শতাংশ এক থেকে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন প্রতিদিন।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ভৌগোলিক ভিন্নতাও রয়েছে। যেমন—ব্রাজিল ও নাইজেরিয়াতে গড়ে প্রতিদিন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট, অন্যদিকে জাপানে এই সময় মাত্র ৫০ মিনিট।

বিশেষ করে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের (Gen Z) মাঝে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি। নারীরা পুরুষদের তুলনায় দিনে গড়ে ১০–২০ মিনিট বেশি সময় এসব প্ল্যাটফর্মে কাটান বলেও গবেষণায় জানা গেছে।

বিশ্বব্যাপী বর্তমানে ৬৪ শতাংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন, যার সংখ্যা ৫.২৪ থেকে ৫.৪২ বিলিয়ন। যদিও এটি যোগাযোগ, তথ্যের আদান-প্রদান এবং আত্মপ্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে গবেষকরা সতর্ক করছেন—এর অতিমাত্রার ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা দিনে দীর্ঘ সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকেন, তারা বেশি অবসাদগ্রস্ত, নিদ্রাহীন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত অনুভব করেন। কিশোরদের মাঝে দেখা গেছে আত্মমূল্যহীনতা, একাকিত্ব ও বিষণ্নতা—যা অনেকটাই অতিরিক্ত ডিজিটাল নির্ভরতার ফল।

গবেষকরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারসাম্যপূর্ণ সময় নির্ধারণ এবং 'ডিজিটাল ডিটক্স' চর্চা এখন সময়ের দাবি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত