কিডনির যত্ন নিন প্রতিদিনের খাবারেই—জেনে নিন ৬টি উপকারী খাবার

বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে কিডনি রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় নিয়মিত রাখলে কিডনির নানা জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এসব খাবার শুধু শরীরকে বিষমুক্তই করে না, বরং কিডনির স্বাভাবিক কার্যকারিতা দীর্ঘদিন ধরে টিকিয়ে রাখতেও সহায়ক।

সম্প্রতি ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনই ছয়টি খাবারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে কিডনির সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।

১. লাল বেল মরিচ

কম পটাসিয়ামযুক্ত এই সবজিটি কিডনির জন্য অত্যন্ত নিরাপদ। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন A, C ও B6 এবং উচ্চমাত্রার ফাইবার, যা শরীর থেকে টক্সিন অপসারণে ভূমিকা রাখে। একইসঙ্গে এটি খাবারে স্বাদ বাড়ায়, ফলে লবণের ব্যবহার কমানো যায়।

২. ফুলকপি

ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন C, ফলেট ও ফাইবার—যা দেহকে ডিটক্সিফাই করে এবং কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি কিডনি রোগীদের জন্য পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি আদর্শ সবজি।

৩. রসুন

রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। এটি কিডনির ওপর চাপ কমায় এবং অতিরিক্ত লবণের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়, যা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও উপকারী।

৪. আপেল

ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আপেল কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের জন্য উপযোগী একটি ফল।

৫. বাঁধাকপি

এই সবজিতে পটাসিয়ামের পরিমাণ তুলনামূলক কম, ফলে কিডনির জন্য নিরাপদ। এতে রয়েছে ভিটামিন K, B6 ও ফাইবার, যা দেহে প্রদাহ প্রতিরোধ করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখে।

৬. বেরি জাতীয় ফল

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি ও রাসবেরির মতো বেরিগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এগুলো ফ্রি র‍্যাডিকেল হ্রাস করে কিডনির কোষ রক্ষা করে এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি ফাংশন ঠিক রাখে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন অন্তত ২–৩টি উপকারী উপাদান রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে লবণ, তেল ও চিনি কমিয়ে পানি গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে বলেছেন।

প্রতিদিন শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেওয়ার কাজে কিডনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্ত বিশুদ্ধ রাখে এবং শরীরকে পরিশুদ্ধ করে। সেজন্য শুধু ওষুধ বা চিকিৎসা নয়, কিডনি সুস্থ রাখতে চাই সচেতন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা।

যাদের কিডনি সমস্যা রয়েছে বা ঝুঁকিতে আছেন, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা উচিত।