“২০২৪ ছিল ডামি নির্বাচন”: আদালতে সাবেক সিইসির বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১৫:৩৬:৩০
“২০২৪ ছিল ডামি নির্বাচন”: আদালতে সাবেক সিইসির বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আদালতে স্বীকার করেছেন, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ছিল একটি “ডামি” বা প্রহসনের নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার অভাবই এ ধরনের প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের পেছনে মূল কারণ ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে শুনানিকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন হাবিবুল আউয়াল। আদালত তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “যদি নির্বাচন প্রহসনের হয়ে থাকে, তাহলে আপনি পদত্যাগ করেননি কেন?”—এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, “আমার আগের কোনো সিইসি পদত্যাগ করেননি, আমিও করিনি।” তিনি আলোচনায় শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের নির্বাচন এবং ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের অনিয়মের প্রসঙ্গও টানেন।

আদালত শুনানি শেষে হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যদিও পুলিশ তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল।

এর আগে গতকাল বুধবার রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। উল্লেখ্য, একই মামলায় গত রোববার আরেক সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার বাদী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান। তিনি গত রোববার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন, যেখানে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি কে এম নূরুল হুদা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়।

এছাড়া মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারাও সংযুক্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আবেদন বুধবার আদালত অনুমোদন দেয়। মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে আছেন সদ্য বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী ও এ কে এম শহীদুল হক।

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। একজন সাবেক সিইসি যখন আদালতে স্বীকার করেন যে নির্বাচন ছিল “ডামি”, তখন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো গুরুতর অভিযোগে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের বিচার কার্যক্রম ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত