ট্রাম্পের ‘পিস মুভ’ দেখে গুজব: নোবেল আসছে কি তাহলে!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১০:৫৩:২০
ট্রাম্পের ‘পিস মুভ’ দেখে গুজব: নোবেল আসছে কি তাহলে!

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত যুদ্ধক্ষেত্রে হঠাৎই শান্তির হাওয়া। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য এবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) মার্কিন কংগ্রেসের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি বাডি কার্টার নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই মনোনয়ন সুপারিশ করেন। চিঠিতে তিনি লিখেন, “সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি বাস্তবায়নে ট্রাম্পের অসাধারণ নেতৃত্ব বিশ্ব শান্তির জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।”

কার্টারের ভাষায়, “যা অনেকের কাছে অসম্ভব মনে হয়েছিল, সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ট্রাম্পের রাজনৈতিক সাহস ও সুদৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।”

উল্লেখযোগ্য যে, মাত্র একদিন আগেই, ২৩ জুন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। যদিও পরবর্তীতে উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। তবু, ট্রাম্পের ভূমিকাকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

বাডি কার্টার তার চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, “ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে ট্রাম্প যেভাবে কঠোর ও সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা ভবিষ্যৎ বিশ্বের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। বিশ্বের অন্যতম সন্ত্রাস পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র যেন পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত না হয়, সে নিশ্চয়তা দিতেই তার এই কার্যক্রম।”

এর আগেও ট্রাম্প ২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস বা ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মাধ্যমে ইসরায়েল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখায় শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবার ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের মতো চরম উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা তাকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

তবে বাস্তবতার কঠোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে এই শান্তির প্রচেষ্টাকেও। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৪ জুন ইসরায়েল দাবি করেছে—তারা ইরানে হামলা চালিয়ে আইআরসিজি (ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস)-এর দুই জেনারেলসহ মোট সাতজন উচ্চপদস্থ সদস্যকে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ৬১০ জন নিহত হওয়ার দাবি করা হয়েছে।

অপরদিকে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন ইসরায়েলি নাগরিক, যাদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। ধ্বংস হয়েছে উভয় দেশের একাধিক সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ওয়াশিংটনের দাবি অনুযায়ী, তারা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফল বিমান হামলা চালিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় কাতারে অবস্থিত মার্কিন আল উদেইদ ঘাঁটিতে পাল্টা মিসাইল নিক্ষেপ করে তেহরান, যার ফলে দু’পক্ষের উত্তেজনা আরও তীব্র হয়।

এই জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় ট্রাম্পের মধ্যস্থতামূলক উদ্যোগ কতটা টেকসই ও কার্যকর হয়—তা সময়ই বলবে। তবে যুদ্ধের পেছনে শান্তির প্রত্যাশায় যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক জোর প্রয়াস আন্তর্জাতিক মহলে এখন বড় আলোচনার বিষয়।

সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত