ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ

ফাঁস তথ্য ঘিরে উত্তপ্ত কূটনীতি, পারমাণবিক হুমকির ছায়া

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ০৯:০৩:০৩
ফাঁস তথ্য ঘিরে উত্তপ্ত কূটনীতি, পারমাণবিক হুমকির ছায়া

সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এক ফাঁস হওয়া প্রাথমিক মূল্যায়ন যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো বিশেষজ্ঞ মহলে এমন প্রশ্নই তুলে দিয়েছে—ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা আদতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস না করে বরং তাকে আরও ত্বরান্বিত করবে কি না।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এই হামলার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারলে এবং নিহত বিজ্ঞানীদের পরিবর্তে নতুনদের নিযুক্ত করতে পারলে, কর্মসূচির গতি কমার বদলে আরও গতিশীল হয়ে উঠতে পারে। যদিও হামলায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে এখনও সময় লাগবে।

ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিল, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে। তবে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এখনো বিতর্ক রয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, "ইরান কখনোই পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবে না।"

তবে কূটনৈতিক মহলে এখন এক ধরনের উপলব্ধি তৈরি হচ্ছে—ইরানের নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছে, একমাত্র পারমাণবিক শক্তিই ভবিষ্যতে তাদের সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের সুরক্ষা দিতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার উদাহরণ এখানে অনেকটাই প্রাসঙ্গিক। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও দেশটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এবং কোনো বড় ধরনের হামলার শিকার হয়নি।

এদিকে ইরানের সংসদ বুধবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করেছে, যাতে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)–র সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি ‘পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি’ (NPT) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও উঠেছে।

আরেকটি বড় উদ্বেগের বিষয় হলো—৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ প্রায় ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের ভবিষ্যৎ। এই মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য নির্ধারিত মাত্রার এক ধাপ নিচে রয়েছে। এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য এখনো প্রকাশ্যে আসেনি।

যদি ইসরাইল-ইরান যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা নতুন এক চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারেন। তবে সেই চুক্তি সহজ হবে না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের মূল শর্তই হলো—ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। আর ইরান বহুদিন ধরেই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, "এখনই সময় ইরানিদের সঙ্গে বসার এবং একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তি করার।" তবে এই শান্তিচুক্তি কতটা বাস্তবসম্মত—তা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত