কাতারের উপহার: ট্রাম্পের জন্য রাজকীয় জেট

সত্য নিউজ: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে অন্যতম আলোচিত নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭–৮ জাম্বো জেট গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো একে "উড়ন্ত প্রাসাদ" হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং জানিয়েছে, এটি হতে পারে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল কূটনৈতিক উপহার—মূল্য প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার।
বিতর্কিত উপহার: কূটনৈতিক সৌজন্য না রাজনৈতিক সুবিধা?
এই খবর প্রকাশের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ও নৈতিক বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সংবিধান অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা সরকারি কোনো কর্মকর্তা বিদেশি সরকার বা রাজপরিবারের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারেন না। যদিও ট্রাম্পপন্থী আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সরাসরি ট্রাম্পের হাতে না গিয়ে বিমানবাহিনীর মালিকানায় যাবে এবং পরবর্তীতে তা প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে সংরক্ষণের মাধ্যমে আইনি সীমাবদ্ধতা এড়ানো যাবে।
তবে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি একে ট্রাম্পের "ব্যক্তিগত লোভের বহিঃপ্রকাশ" হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, সাধারণ আমেরিকান নাগরিকরা যখন জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন ট্রাম্প নিজের ও ধনাঢ্য বন্ধুদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের দিকে নজর দিচ্ছেন।
কাতারের প্রতিক্রিয়া: উপহার নয়, কৌশলগত সহযোগিতা?
ওয়াশিংটনে কাতারের দূতাবাস এই বিতর্ককে সংযত করে বলেছে, এটি কোনো উপহার নয় বরং এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে সাময়িক ব্যবহারের জন্য একটি বিমানের সম্ভাব্য হস্তান্তর নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্প যদি রাষ্ট্রীয় পদকে ব্যবহার করে এমন উচ্চমূল্যের সামগ্রী ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেন, তাহলে তা আমেরিকার দুর্নীতিবিরোধী নীতির বড় ধরনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে। রিপাবলিকান ঘনিষ্ঠ কট্টর ডানপন্থী কর্মী লরা লুমার টুইটারে লেখেন, “আমরা স্যুট পরা জিহাদিদের কাছ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের উপহার নিতে পারি না।” তাঁর অভিযোগ, কাতার হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর অর্থদাতা।
হোয়াইট হাউসের অবস্থান
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস ও মার্কিন বিচার বিভাগ তাৎক্ষণিক মন্তব্য না করলেও এবিসি নিউজকে একাধিক সূত্র জানায়, আইনি দিক বিবেচনায় উপহারটি অসাংবিধানিক নয়, কেননা এটি সরাসরি প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত মালিকানায় যাবে না।
রাজনীতি ও বিতর্কের ছায়া
এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, যেভাবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসকে রাজনৈতিক পুঁজি ও ব্যক্তিগত লাভের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করেছেন—এটি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা ব্যবস্থার জন্য একটি বিপজ্জনক নজির। আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফরে বিষয়টি নিয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করছে নিউইয়র্ক টাইমস।
ট্রাম্পের কাতার সফর ও বিলাসবহুল উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত শুধু একটি কূটনৈতিক উপহার নয়, বরং এটি হয়ে উঠতে পারে আমেরিকান রাজনীতিতে নৈতিকতা, স্বচ্ছতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
এই ঘটনাটি শুধু ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক নীতিনির্ধারণ ও বৈদেশিক সম্পর্কেও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দীর্ঘ পতনের পর শেয়ারবাজারে এল সুখবর!
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট হবে কিনা জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা
- আকাশে বিস্ফোরণ, মাটিতে মৃত্যু: ক্লাস্টার বোমায় জর্জরিত ইসরায়েল
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের ১০টি বড় ক্ষতি
- জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মুখোমুখি বিশ্ব শক্তিগুলো
- শরীয়তপুরের ডিসির নারী কেলেঙ্কারি ও ভিডিও ফাঁস: সর্বশেষ আপডেট
- তবে কি বন্ধ হতে যাচ্ছে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম, যা জানা গেল
- প্রতিদিন ভোরে যে দোয়া পড়তেন বিশ্বনবী (সা.)
- শেয়ারবাজারে মুনাফা কমেছে যেসব ব্যাংকের
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- কারাবন্দি সংগীতশিল্পী নোবেলের সঙ্গে বাদীর বিয়ে: বিতর্ক সৃষ্টি