ইসলাম, জীবন ও বিজ্ঞান
নামাজে রুকু ও সিজদাহ: ধর্মীয় গুরুত্ব ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

নামাজ কেবল ধর্মীয় কর্তব্যই নয়, এটি একজন মুসলমানের জীবনে শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতার একটি পরিপূর্ণ পদ্ধতি। নামাজের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—রুকু (নত হয়ে ঝুঁকে দাঁড়ানো) ও সিজদাহ (ভূমিতে ললাট ও নাক স্পর্শ করে সেজদা)—শুধু ইবাদতের অংশ নয়, আধুনিক বিজ্ঞানের আলোয় এগুলোর রয়েছে বিস্ময়কর স্বাস্থ্যগত ও মনস্তাত্ত্বিক উপকারিতা।
ইসলামী দৃষ্টিতে রুকু ও সিজদাহর তাৎপর্য
আল-কুরআনের বহু আয়াতে এবং সহীহ হাদীসসমূহে রুকু ও সিজদাহর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, "হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু করো, সিজদাহ করো এবং তোমার রবের ইবাদত করো" (সূরা হজ: ৭৭)। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, "সেজদার সময়ই বান্দা তার প্রভুর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়" (সহীহ মুসলিম)। ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, রুকু একজন মুমিনের আত্মবিনয় এবং সিজদাহ আত্মসমর্পণের সর্বোচ্চ প্রকাশ।
ইমাম গাজ্জালী, ইবনে কাইয়্যিম প্রমুখ মনীষীদের মতে, সিজদাহ মানুষের অহংকার ভেঙে তাকে পরিপূর্ণ বিনয়ের শিক্ষায় দীক্ষিত করে। রুকু হল সেই মধ্যবর্তী অবস্থা যেখানে মানুষ নিজেকে নিচু করে বিনম্রভাবে আল্লাহর সামনে দাঁড়ায়, এবং সিজদাহ হল সেই পরম বিনয়ের অবস্থা, যেখানে সে নিজের ললাট ও নাক আল্লাহর সামনে মাটিতে ঠেকিয়ে দেয়। প্রাচীনকাল থেকেই ইসলামি স্কলাররা রুকু ও সিজদাহর গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, এই অবস্থানগুলো একজন মুমিনের অন্তরে বিনয় ও খোদার প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের চেতনাকে জাগ্রত করে।
শারীরিক উপকারিতা: চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে
১. পেশী ও অস্থিসন্ধির নমনীয়তা ও শক্তিশালীকরণ
রুকু ও সিজদাহ এমন দুটি ভঙ্গি যা মানুষের প্রায় সবধরনের প্রধান পেশী—ঘাড়, পিঠ, হিপ, হাঁটু ও গোড়ালির পেশীকে সক্রিয় রাখে। নিয়মিত রুকু করলে পিঠ ও মেরুদণ্ডের সোজাভাব বজায় থাকে, সিজদাহ হাঁটু ও গোড়ালির নমনীয়তা বৃদ্ধি করে এবং দেহে একধরনের স্বাভাবিক স্ট্রেচিং হয়। বিশেষ করে সিজদার সময় পেটের নিম্নাংশের পেশীগুলো সক্রিয়ভাবে সংকুচিত-প্রসারিত হয়, যা পেটের মেদ কমাতে ও কেন্দ্রীয় শরীরকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, এই ধরণের ন্যূনতম ব্যায়াম প্রতিদিন ১৭ রাকাতের মাধ্যমে ৩৪ বার করলে তা হাড়, সন্ধি ও পেশীকে সক্রিয় ও স্বাস্থ্যবান রাখে।
২. রক্ত সঞ্চালন ও হরমোনাল ভারসাম্য
সিজদার সময় মস্তিষ্ক হৃদপিণ্ডের নিচে চলে আসে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ে। এটি অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারিতা বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ধরনের মাথা নিচু অবস্থান cerebral blood flow বাড়ায়, যা স্মৃতি, মনোযোগ ও বিশ্লেষণক্ষমতা উন্নত করতে কার্যকর। শুধু তাই নয়, সিজদার সময় বাড়তি রক্তপ্রবাহ চোখ ও কানসহ অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের কার্যক্রমেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে ধারণা করা হয়।
৩. স্নায়ুতন্ত্রে প্রশান্তি ও হৃদপিণ্ডে ভারসাম্য
সিজদা করার সময় শরীর parasympathetic nervous system সক্রিয় করে—যেটি শান্তি, বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধারের জন্য দায়ী। নামাজের এই অংশে হার্ট রেট ও রক্তচাপ কমে আসে, স্নায়ুব্যবস্থায় স্বস্তি ফিরে আসে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ব্যক্তিরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তাদের স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল-এর মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
৪. হজমতন্ত্র ও অন্ত্রের কার্যক্রম
সিজদার সময় পেটের উপর সামান্য চাপ পড়ে, যার ফলে হজমতন্ত্রে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং অন্ত্রের গতি নিয়মিত হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, পেটের এই হালকা সংকোচন কোষ্ঠকাঠিন্য, অম্বল ও বদহজমের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়তা করতে পারে।
মানসিক ও স্নায়ুবৈজ্ঞানিক প্রভাব
১. মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধি
সালাত পড়ার সময় কুরআন তিলাওয়াত, প্রার্থনা ও ধারাবাহিক দেহভঙ্গিমা মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষিত করে মনোযোগ ধরে রাখার জন্য। বিশেষ করে সিজদাহ ও বৈঠকের সময় মনোযোগ সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রীভূত হয়, যা কার্যত mindfulness মেডিটেশনের মত কাজ করে।
২. উদ্বেগ ও মানসিক চাপ হ্রাস
নামাজ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের মাধ্যম। সিজদায় একজন মানুষ তার লজ্জা, দুঃখ, কৃতজ্ঞতা ও প্রার্থনা প্রকাশ করে—যা একটি মানসিক ভারমুক্তির অভিজ্ঞতা তৈরি করে। অনেক গবেষণা বলছে, নিয়মিত নামাজ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কার্যকর এবং এটি উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অতিরিক্ত চিন্তা দূর করতে সহায়তা করে।
৩. আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মানসিক শৃঙ্খলা
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্দিষ্ট সময়ে রুকু ও সিজদার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার দৈনন্দিন জীবনকে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ কাঠামোয় আনেন। এতে করে তার আচরণ, আবেগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারসাম্য তৈরি হয়।
আধুনিক গবেষণায় রুকু-সিজদাহ
ইউনিভার্সিটি অব মালয়েশিয়া, কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়, এবং ইরানের ইসলামি মেডিকেল ইউনিভার্সিটির গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে সালাত একটি পূর্ণাঙ্গ বডি-মাইন্ড ব্যালেন্সিং পদ্ধতি। এতে হৃদপিণ্ড, স্নায়ু, পেশী, হরমোন ও মস্তিষ্ক একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং শরীর-মনকে একটি প্রশান্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যায়।
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের সঙ্গে তুলনা
সিজদাহ যোগব্যায়ামের “বালাসন” বা “চাইল্ড পোজ”-এর মতো। রুকু অনেকটা “আর্ধ উত্তানাসন”-এর মতো। কিন্তু পার্থক্য হল, নামাজে এই ভঙ্গিমাগুলো আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ ও আধ্যাত্মিক মনোযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যেখানে যোগ বা মেডিটেশনে সাধারণত আত্মনির্ভরতার চর্চা হয়। এই অবস্থানগুলি মস্তিষ্কের সম্মুখপ্রান্ত (প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স) উদ্দীপিত করে এবং শরীর-মনের উপর এক ধরনের গ্রাউন্ডিং বা শান্ত প্রভাব ফেলে। ফলস্বরূপ শরীর থেকে মানসিক টক্সিন বা চাপ দূর হতে সাহায্য করে এবং অস্থিসন্ধির নমনীয়তা বৃদ্ধি, পেশীর দৃঢ়তা অর্জন, উচ্চ রক্তচাপ হ্রাসের পাশাপাশি স্ট্রেস-উদ্বেগ- মাথা ঘোরা ও ক্লান্তি কমাতেও অবদান রাখে। অর্থাৎ সালাতের শারীরিক ব্যায়ামপ্রধান দিকটি যোগব্যায়ামের মতোই দেহকে নমনীয়, দৃঢ় ও সুস্থ রাখতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকেও নামাজ ও মেডিটেশনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে। নামাজে খুশু (পূর্ণ মনোযোগ ও বিনয় সহকারে প্রার্থনা) ধারণাটি mindfulness ধ্যানের অনুরূপ, যেখানে মন একাগ্র হয়ে যায় এবং বাহ্যিক চিন্তা দূরে সরে যায়। নামাজ পড়ার সময় কুরআন তিলাওয়াত ও নিরবচ্ছিন্ন ধ্যানে মগ্ন হওয়া মূলত একজন মুসল্লিকে ধ্যানস্থ অবস্থার মতোই নির্দেশনা ও প্রশান্তি দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, নামাজ আদায়ের সময় মস্তিষ্কে আলফা তরঙ্গের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা সচরাচর গভীর প্রশান্তি ও ধ্যানের সাথে সংশ্লিষ্ট (প্যারাসিম্পেথেটিক সক্রিয়তার ইঙ্গিত)। আসলে, যোগাসন ও মেডিটেশনের যেসব সুফল হাজার বছর ধরে পরিচিত – যেমন শারীরিক ফিটনেস, মানসিক প্রশান্তি ও আত্মিক উন্নতি – সেগুলোর অনেকটাই নামাজের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনে সংযোজিত হয়ে যায়। একজন গবেষক তাই প্রস্তাব করেছেন, মুসলিম রোগীদের চিকিৎসায় মানসিক-শারীরিক থেরাপি হিসেবে সালাত ও যোগব্যায়ামের সমন্বয় একটি নবতর দৃষ্টিকোণ হতে পারে। তবে মুসলমানদের জন্য অতিরিক্ত কোন কৌশলের প্রয়োজন নেই – সঠিক নিয়মে নামাজ আদায়ই তাদের জন্য অন্তর্নিহিত ধ্যান ও যোগব্যায়ামের সুবিধা এনে দিতে সক্ষম। একই সঙ্গে শুদ্ধ সালাতে “স্ট্রেস হরমোন” বা উত্তেজক স্নায়ুবিক সক্রিয়তা হ্রাস পায় এবং হৃদযন্ত্রের ধকল কমে – ঠিক যেমনটি সুচিন্তিত মেডিটেশনের মাধ্যমে ঘটে থাকে। ফলে রুকু ও সিজদাহ শুধুই শরীর চর্চা নয়—এটি আত্মার প্রশান্তি ও আত্মিক শুদ্ধির পন্থা।
রুকু ও সিজদাহ নামাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ—যেখানে একদিকে লুকিয়ে আছে আত্মিক পরিশুদ্ধির উৎস, অন্যদিকে রয়েছে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অনন্য উপকারিতা। ইসলামের প্রতিটি নির্দেশনার মধ্যে যে বিজ্ঞান লুকিয়ে রয়েছে, রুকু ও সিজদাহ তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আধুনিক গবেষণা এই প্রাচীন ইবাদতের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়কর স্বাস্থ্যসুবিধাকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করছে। তাই রুকু ও সিজদাহ কেবল ইবাদত নয়—এটি মানুষের জীবনে আত্মশুদ্ধি, স্বাস্থ্য ও মানসিক শান্তির এক অমূল্য উপায়। নামাজের প্রতিটি রুকু ও সিজদাহ যেন হয় আমাদের আত্মশুদ্ধি, স্বাস্থ্য ও সুখের চাবিকাঠি—এটি শুধু আখিরাতের নয়, ইহজাগতিক কল্যাণেরও চাবিকাঠি।
তথ্যসূত্র: উপরের তথ্যাবলী IslamWeb এর প্রবন্ধ, জার্নাল অব অল্টারনেটিভ অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন, ইন্ডিয়ান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রি, জার্নাল অব পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং আন্তর্জাতিক যোগ ও ক্রীড়াবিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য নেয়া হয়েছে। '
তিন জিকিরে গুনাহ মাফ ও জান্নাতের সুসংবাদ
ইসলামে আল্লাহর জিকিরকে বলা হয় মুমিনের অস্ত্র, হৃদয়ের ওষুধ এবং রূহের খাদ্য। বিশেষত কিছু জিকির রয়েছে যেগুলোর গুরুত্ব কোরআন-হাদিসে অত্যন্ত জোর দিয়ে বলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি”, “সুবহানাল্লাহিল আযীম”, “আস্তাগফিরুল্লাহ”।
এই তিনটি পবিত্র বাক্য মুমিনের আখেরাত ও দুনিয়ার জন্য অসীম কল্যাণ ও বরকতের দুয়ার খুলে দেয়।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সহজতম উপায়—আস্তাগফিরুল্লাহ
“আস্তাগফিরুল্লাহ” এমন একটি বাক্য, যার মাধ্যমে বান্দা সরাসরি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। ইসলামের শিক্ষা হলো, আল্লাহ কখনো বান্দাকে হতাশ করেন না। একজন ব্যক্তি যদি আন্তরিকতার সঙ্গে বারবার এই দোয়া পড়েন, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন।
নবী করিম (সা.) নিজেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার ইস্তেগফার করতেন এটাই বলে দেয় এর গুরুত্ব কতটা। এই বাক্য মুমিনের জীবনে ভেতরের অন্ধকার দূর করে দেয়, হৃদয়কে করে আলোকিত।
আমলনামায় পাহাড়সম সওয়াব লিখিত হয়
“সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” এবং “সুবহানাল্লাহিল আযীম”- এই দুই বাক্যকে হাদিসে বলা হয়েছে “দুইটি অতি প্রিয় বাক্য, জিহ্বায় হালকা, কিন্তু আমলনামায় অত্যন্ত ভারী।” মানুষ দিনে অল্প কিছু সময় ব্যয় করে জিকির করলে প্রতিদিনের আমলে যুক্ত হয় অসাধারণ সওয়াব, যা পরকালে মুমিনের জান্নাতের ওজন বাড়াবে। সওয়াব অর্জনের এতো সহজ মাধ্যম খুব কমই আছে।
জান্নাতে খেজুর গাছ রোপণ—অমূল্য পুরস্কার
নবী করিম (সা.) হাদিসে বলেছেন, “যে ‘সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ রোপণ করা হয়।” জান্নাতে একটি গাছ মানে অনন্তকালের জন্য একটি সম্পদ, একটি মর্যাদা এবং একটি ঘর রোপণ। এই পুরস্কার এতটাই মূল্যবান যে, দুনিয়ার সব সম্পদ দিয়েও তার সমতুল্য পাওয়া অসম্ভব। শুধু একটি বাক্য আর জান্নাতে রোপিত হয় এক মূল্যবান সৌগাত।
হৃদয়ে শান্তি, আত্মায় প্রশান্তি
আল্লাহর জিকিরে রয়েছে মনে প্রশান্তি। কোরআনে আছে- “নিঃসন্দেহে আল্লাহর স্মরণেই অন্তরের প্রশান্তি।” এই দোয়াগুলো পড়লে মানুষের ভেতরের দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস, ভয় ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দূর হয়। আজকের ব্যস্ত জীবনে জিকিরই হতে পারে মনকে স্থির রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ—সৃষ্টিকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মর্যাদা
হাদিসে এসেছে, যদি কেউ সকালে ১০০ বার, সন্ধ্যায় ১০০ বার “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম আস্তাগফিরুল্লাহ” পাঠ করে তাহলে সৃষ্টিকুলের মধ্যে তার মর্যাদা সবচেয়ে বেশি হবে, যদি না কেউ তার চেয়ে বেশি জিকির করে। এটি এমন এক আমল, যা খুব কম সময় নিয়েই মুমিনকে পৌঁছে দেয় উচ্চ মর্যাদায়।
মুমিনের জীবনে আধ্যাত্মিক শক্তি যোগায় এই দোয়া
এই তিন দোয়া আল্লাহর পবিত্রতা, মহত্ত্ব ও ক্ষমার স্বীকৃতি দেয়। এগুলো মুমিনকে আল্লাহর আরও কাছে নিয়ে যায়। জিকিরের ফজিলত শুধু দুনিয়ার নয় আখেরাতেও তার প্রভাব অসীম। নিয়মিত পাঠ করলে মানুষ হয়ে ওঠে পরিশুদ্ধ, বিনম্র, আল্লাহভীরু ও আল্লাহভক্ত।
দোয়াগুলো জীবনের জন্য বরকতের উৎস
এই জিকির মুমিনের জীবনে নিয়ে আসে-
- রিজিকে বরকত
- গুনাহের পরিশুদ্ধতা
- অন্তরে শান্তি
- পরিবারের জন্য রহমত
- দুনিয়া–আখেরাত উভয়ের সুসংবাদ
আল্লাহর স্মরণ ছাড়া সত্যিকারের শান্তি ও প্রশান্তি পাওয়া যায় না।
জিকিরের গুরুত্ব: সবচেয়ে সহজ, কিন্তু ফলাফল সবচেয়ে বড়
এই তিন দোয়া এমন, যা-
- কম সময়ে পড়া যায়
- মুখে সহজ
- নিয়মিত পাঠ করা যায়
- এবং যার ফজিলত অপরিমেয়
একজন মুমিনের উচিত প্রতিদিনের রুটিনে জিকিরকে অন্তর্ভুক্ত করা।এর মাধ্যমে হৃদয় হয় পরিশুদ্ধ, মন হয় শান্ত এবং জীবন হয় আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ।
কোরআনের আলোকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ১০ উপায়
কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রহমত এমন একটি অসীম দান যা একজন মুমিনের জীবনকে পরিশুদ্ধ করে, তার বিপদ দূর করে এবং হৃদয়ে শান্তির আলো জ্বালায়। আল্লাহ নিজেই বলেছেন, তাঁর রহমত সমস্ত কিছুকে ঘিরে রেখেছে। সেই বিশাল রহমত লাভের জন্য ইসলাম বিশেষ কিছু পথনির্দেশ দিয়েছে। এসব নির্দেশনা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদত নয়, বরং মানবিক আচরণ, নৈতিকতা, আন্তরিকতা এবং সমাজকল্যাণকে কেন্দ্র করে সাজানো।
প্রথমত, মানবিক দয়া একজন মুসলিমের চরিত্রের মূল ভিত্তি। সৃষ্টির প্রতি দয়া প্রদর্শন আল্লাহর অসীম দয়ার কারণ হয়। পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর জন্যও ক্ষমা পাওয়ার ঘটনাটি এ মহত্ত্বের বড় প্রমাণ।
দ্বিতীয়ত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা ও জাকাতের মতো ফরজ ইবাদত পালন আল্লাহর আনুগত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ। কোরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ফরজ ইবাদত কায়েম করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত বর্ষিত হয়।
তৃতীয়ত, ইহসান অর্থাৎ আন্তরিকভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমল করা। যে আমলে হৃদয়ের পবিত্রতা থাকে, আল্লাহ তার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। সৎকর্মপরায়ণতা আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম।
তাকওয়া চতুর্থ উপায় যা মুমিনকে সব ধরনের গুনাহ থেকে বাঁচায় এবং আল্লাহর ভয় ও সচেতনতা তাকে রহমতের যোগ্য করে তোলে। আল্লাহ বলেন, তাঁর রহমত তাকওয়াবানদের জন্যই লিখে দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চমত, কোরআন তেলাওয়াত ও চর্চা। কোরআন শুধু পাঠ নয়, বরং বুঝে তার আলোকে জীবন গঠন করাই রহমত লাভের প্রকৃত পথ। এ ছাড়া মনোযোগ দিয়ে কোরআন শোনার ক্ষেত্রেও আল্লাহ বিশেষ রহমতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সপ্তম উপায় হলো দ্বীনি কাজে কষ্ট স্বীকার হিজরত, সংগ্রাম, দ্বীনের পথে ধৈর্য ধারণ করা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কারণ হয়। ইসলামের ইতিহাসে এ উদাহরণ অসংখ্য।
অষ্টমত, সুন্নাহ অনুসরণ। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শ অনুসরণ করলে রহমতের দ্বার খুলে যায় এ কথা কোরআনে সরাসরি উল্লেখ রয়েছে।
ইস্তেগফার, অর্থাৎ নিয়মিত ক্ষমা প্রার্থনা নবম উপায়। ইস্তেগফার যত বেশি, রহমত তত কাছে। গুনাহ থেকে মুক্তির পাশাপাশি জীবনযাত্রায় বরকতও নেমে আসে।
সবশেষে দোয়া যা রহমত প্রার্থনার সবচেয়ে সরাসরি মাধ্যম। সুরা কাহফের দোয়া "রব্বানা আতিনা মিন লাদুংকা রহমাহ" আল্লাহর রহমত আহ্বানের অন্যতম শক্তিশালী দোয়া হিসেবে পরিচিত।
একজন মুমিনের জীবনে আল্লাহর রহমত শুধু আধ্যাত্মিক মুক্তি নয় বরং দুনিয়াতেও নিরাপত্তা, শান্তি, প্রাচুর্য এবং সফলতার প্রতীক। ইসলাম সেই সব পথই সুস্পষ্টভাবে মানবজাতির সামনে তুলে ধরেছে।
রবিবারের নামাজের ওয়াক্তনামা এক নজরে
ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি হলো নামাজ, যা ইমানের পর মুসলমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাতের উল্লেখ করে এর গুরুত্ব বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। নামাজ শুধু আধ্যাত্মিক শান্তির উৎস নয়, বরং শৃঙ্খলা, সময় সচেতনতা এবং আত্মার পরিশুদ্ধির মাধ্যম। তাই প্রতিদিনের ব্যস্ততার মধ্যেও ওয়াক্তমতো নামাজ আদায় করা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
আজকের ফজরের নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ১ মিনিটে এবং শেষ হবে ভোর ৬টা ১৭ মিনিটে। আগামীকাল সোমবার ফজরের সময় এক মিনিট এগিয়ে ভোর ৫টা হবে। জোহরের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১১টা ৪৮ মিনিটে এবং শেষ হবে বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিট। এরপর আসরের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে এবং শেষ হবে বিকেল ৪টা ৫৩ মিনিটে। সন্ধ্যাবেলা মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হবে ৫টা ১৪ মিনিটে এবং থাকবে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। ইশার সময় শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে এবং বজায় থাকবে রাত ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত, যদিও শরিয়তের দৃষ্টিতে মধ্যরাতের আগেই ইশা আদায় করা উত্তম।
ঢাকার নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে কিছু বিভাগীয় অঞ্চল সময় যোগ-বিয়োগ করে অনুসরণ করবে। চট্টগ্রাম ও সিলেটে যথাক্রমে পাঁচ ও ছয় মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে খুলনা, রাজশাহী, রংপুর এবং বরিশালের জন্য নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তিন থেকে আট মিনিট পর্যন্ত যোগ করতে হবে। এসব সময় পার্থক্য ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে হয়ে থাকে এবং প্রতিটি এলাকার মুসলমানের জন্য সঠিক ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ আদায় করা আবশ্যক।
আজকের দিনটি রোজাদারদের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি উল্লেখ করা হয়েছে। সেহরির শেষ সময় ভোর ৪টা ৫৫ মিনিট এবং ইফতারের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিট। রোজাদারদের জন্য এই সঠিক সময় মানা ইসলামী বিধান অনুসরণে অপরিহার্য।
নফল নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রেও আজকের দিনটি বিশেষভাবে চিহ্নিত। ইশরাকের সময় শুরু হবে সকাল ৬টা ৩২ মিনিটে এবং চলবে সকাল ৮টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। চাশতের সময় থাকবে সকাল ৮টা ২৪ মিনিট থেকে ১১টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত। আর তাহাজ্জুদের সময় technically ইশার সঙ্গে শুরু হলেও উত্তম সময় হিসেবে ধরা হয় রাত ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে সুবহি সাদিক ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। নফল নামাজ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বিশেষ মাধ্যম, এবং অনেক পণ্ডিতের মতে নফল ইবাদত বান্দাকে আত্মিকভাবে আরও পরিশুদ্ধ করে।
ইসলামী শরিয়তে তিনটি সময়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজকের নিষিদ্ধ সময়গুলো হলো সকাল ৬টা ১৮ মিনিট থেকে ৬টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সূর্যোদয়কালীন সময়। এরপর দুপুর ১১টা ৪২ মিনিট থেকে ১১টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত সূর্য যখন মাথার উপর থাকে সেই সময়। এবং শেষত, বিকেল ৪টা ৫৪ মিনিট থেকে ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সূর্যাস্ত-পূর্ব মুহূর্ত। তবে দিনের আসরের নামাজ যদি নির্ধারিত সময়ে আদায় না করা হয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও তা আদায় করা যায়।
ভূমিকম্পের সময় মহানবী সা. যে বিশেষ আমল ও দোয়া পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন
ভূমিকম্প এমন একটি মুহূর্ত যখন মানুষ তার দুর্বলতা গভীরভাবে অনুভব করে এবং মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। বিপদ আপদ ও ভয় ভীতির সময় আল্লাহর জিকির দোয়া ও ইস্তিগফারই ইমানদারের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। রাসুলুল্লাহ সা. শিখিয়েছেন বিপদের মুহূর্তে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়াই হচ্ছে নিরাপত্তার একমাত্র পথ। তাই ভূমিকম্প বা বড় কোনো ঝাঁকুনির সময় পড়ার জন্য ৪টি ছোট ও কার্যকরী দোয়া নিচে তুলে ধরা হলো।
প্রথম দোয়া اللَّهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنَا بِذُنُوبِنَا، وَلَا تُهْلِكْنَا بِغَضَبِكَ দোয়াটির উচ্চারণ হলো আল্লাহুম্মা লা তুআখিজনা বিজুনুবিনা ওয়া লা তুহলিকনা বিগাদাবিকা। এর বাংলা অর্থ হে আল্লাহ আমাদের গুনাহের কারণে আমাদের পাকড়াও করো না এবং তোমার গজবে আমাদের ধ্বংস করো না।
দ্বিতীয় দোয়া حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ দোয়াটির উচ্চারণ হলো হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল। অত্যন্ত শক্তিশালী এই বাক্যটির অর্থ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক।
তৃতীয় দোয়া يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ، بِرَحْمَتِكَ نَسْتَغِيثُ দোয়াটির উচ্চারণ হলো ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা নাস্তাগীস। এর অর্থ হে চিরঞ্জীব হে পালনকর্তা তোমার রহমতই আমাদের সাহায্য।
চতুর্থ দোয়া أستغفرُ اللهَ العظيم দোয়াটির উচ্চারণ হলো আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম। সবসময় পড়ার মতো ছোট এই আমলটির অর্থ আমি মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই।
আলেমদের মতে ভূমিকম্প শুধুই একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয় বরং এটি মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় জাগিয়ে তোলে এবং আল্লাহর মহিমার সামনে বিনয় শেখায়। এ সময় দোয়া ইস্তিগফার ও তওবাই মুমিনের ঢাল হিসেবে কাজ করে। যে আল্লাহ পৃথিবীকে কাঁপান তিনিই আবার তা স্থির করেন। তাই বিপদের মুহূর্তে তাঁরই দিকে ফিরে যাওয়া মানুষের জন্য সর্বোত্তম কাজ।
ভূমিকম্প মুহূর্তে যে দোয়া পড়তেন রাসূল (সা.)
ইসলামে জীবনের প্রতিটি বিপদ ও দুর্যোগের জন্য শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ভূমিকম্প, মেঘের গর্জন, ঝড়–তুফান কিংবা আকাশ–জমিনের যেকোনো ভয়াবহতা আল্লাহর শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন, যা মানুষের জন্য সতর্কবার্তা ও আত্মসমালোচনার আহ্বান। এমন সংকটময় মুহূর্তে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে নির্ভর করতে বলেছেন আল্লাহর ওপর এবং নিয়মিত দোয়ার মাধ্যমে তাঁর সাহায্য কামনা করতে বলেছেন।
রাসূল (সা.) বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন এমন একটি দোয়া, যা তিনবার পাঠ করলে মানুষ আকাশ ও জমিনের ভয়ংকর দুর্যোগ থেকে নিরাপত্তা পায়। দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাহি লা ইয়াদ্বুররু মা’আসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়া লা ফিস্সামা’ই, ওয়া হুয়াস সামীয়ুল আলিম।
এই দোয়া মুসলিম সমাজে বহুল পরিচিত এবং বিপদ–আপদে সুরক্ষার অন্যতম আমল হিসেবে সুন্নাহতে প্রতিষ্ঠিত।
ভূমিকম্পের সময় আলাদা একটি দোয়া পাঠ করার কথাও এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। রাসূল (সা.) মাটির দিকে তাকিয়ে নিয়মিত পড়তেন-
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা শারিকালাহু, ফাবি আয়্যি আলা’ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান।”
এই তাসবিহ ও প্রশংসাবাক্য আল্লাহর শক্তি ও মহিমা স্মরণ করিয়ে দেয়, এবং মানুষের অন্তরকে স্থিরতা দেয়।
দুর্যোগের মুহূর্তে আরেকটি দোয়া রাসূল (সা.) বিশেষভাবে পড়তে বলেছেন-উচ্চারণ: আন্তা ওলিয়্যুনা ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা, ওয়া আন্তা খাইরুল গফিরিন।
অর্থ: “হে আল্লাহ, আপনি আমাদের রক্ষক—অতএব আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি করুণা বর্ষণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বাধিক ক্ষমাশীল।” (সূরা আরাফ ১৫৫)
জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
ইসলামের ইতিহাসে বাদশা জুলকারনাইন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি রহস্য, প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব ও ন্যায়বিচারের সমন্বিত প্রতীক। পবিত্র কোরআনে সূরা কাহফে তাঁর ইতিহাস বর্ণিত হলেও, তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিচয় নিয়ে আলেমদের মধ্যে এখনও মতভেদ রয়েছে। তিনি নবী ছিলেন নাকি একজন ন্যায়পরায়ণ শক্তিশালী শাসক ছিলেন এ প্রশ্নে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তবে কোরআনের বর্ণনাগুলোতে তাঁর চরিত্র যে উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের অনন্য উদাহরণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
পরিচিতি ও ‘জুলকারনাইন’ নামের অর্থ
“জুলকারনাইন” শব্দটি আরবি, যার অর্থ “দুই শিং–ওয়ালা” বা “দুই যুগের অধিকারী।” এই নামের ব্যাখ্যায় দুটি প্রধান মত রয়েছে।
একদিকে বলা হয়, তিনি পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম দু’প্রান্ত পর্যন্ত শাসন বিস্তার করেছিলেন। অন্যদিকে কিছু ঐতিহাসিকের মতে, তাঁর মুকুটে দুই শিং–এর প্রতীক ছিল, যা প্রাচীন রাজকীয় শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
ঐতিহাসিক পরিচয় নিয়ে মতভেদ
জুলকারনাইনের প্রকৃত পরিচয় কী এ নিয়ে ইসলামী ও পাশ্চাত্য গবেষক, উভয় মহলে বহু আলোচনা হয়েছে।
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট- প্রচলিত ঐতিহ্যগত পরিচয়
অনেক মুসলিম ও পাশ্চাত্য ঐতিহাসিক মনে করেন, জুলকারনাইন হচ্ছেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। কারণ তাঁর প্রাচীন মুদ্রাগুলোতে তাঁকে ভেড়ার শিং–যুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা দেবতা আমুন–রার প্রতীক। বহু যুগ ধরে এই মতটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।
সাইরাস দ্য গ্রেট-আধুনিক গবেষকদের শক্তিশালী মতবাদ
বর্তমান সময়ের আলেম ও গবেষকদের বড় অংশ বিশ্বাস করেন যে, জুলকারনাইন আসলে পারস্যের সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট। বাইবেলের বর্ণনায় সাইরাসকে “দুই শিংওয়ালা মেষ” হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো সাইরাস ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, ঈমানদার ও একত্ববাদী শাসক। কোরআনের বর্ণনার সাথে তাঁর ব্যক্তিত্বের বহু মিল পাওয়া যায়।
অন্যান্য ধারণা
কিছু গবেষক জুলকারনাইনকে আরবের হিমিয়ার রাজ্যের রাজা আফ্রিকিশ আল–হিমিয়ারী বা অন্য কোনো অজ্ঞাত শাসক হিসেবেও বিবেচনা করেন।
তিনি নবী ছিলেন নাকি রাজা?
অধিকাংশ ইসলামি আলেমের মতে, জুলকারনাইন ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ এবং আল্লাহভীরু রাজা। তাঁর কাছে আল্লাহ অসাধারণ ক্ষমতা, সামরিক শক্তি এবং ভূখণ্ড পরিচালনার দক্ষতা দান করেছিলেন। যদিও কিছু মত অনুযায়ী তিনি নবীও হতে পারেন, তবে কোরআনে তাঁর নবুয়ত সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ নেই।
জুলকারনাইনের প্রাচীর, ইয়াজুজ–মাজুজ থেকে রক্ষার মহাগঠন
জুলকারনাইনের নির্মিত প্রাচীরের অবস্থান নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, এটি দুই পর্বতের মধ্যবর্তী সরু পথে নির্মিত হয়েছিল, যেখানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী ইয়াজুজ–মাজুজের হামলায় অতিষ্ঠ ছিল।
কাস্পিয়ান সাগর ও ককেশাস অঞ্চল-সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত
অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, প্রাচীরটি কাস্পিয়ান সাগর এবং ককেশাস পর্বতমালার মধ্যবর্তী এলাকায় ছিল। রাশিয়ার দারিয়াল এবং দারবেন্ত অঞ্চলে আজও লৌহনির্মিত প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়, যা জুলকারনাইনের প্রাচীর বলে বিবেচনা করা হয়।
অন্যান্য ব্যাখ্যা
কিছু ব্যাখ্যায় বলা হয় প্রাচীরটি পূর্ব দিকে ছিল। বিখ্যাত ভ্রমণকারী ইবনে বতুতা চীনের মহাপ্রাচীরকে ভুল করে জুলকারনাইনের প্রাচীর ভেবেছিলেন।
আব্বাসীয় খলিফার তদন্ত অভিযান
আব্বাসীয় খলিফা ওয়াসিক বিল্লাহর নির্দেশে একদল বিশেষ দূত প্রাচীরটি প্রত্যক্ষ পরিদর্শনে গিয়েছিল। তাদের পর্যবেক্ষণ পরবর্তীতে ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, প্রাচীরটি ছিল লোহা ও তামা দিয়ে নির্মিত এক বিশাল দুর্গসদৃশ কাঠামো।
কোরআনে বর্ণিত জুলকারনাইনের তিন মহাঅভিযান
সূরা কাহফের ৮৩–৯৯ নং আয়াতে জুলকারনাইনের তিনটি বিশাল ভ্রমণ অভিযানের বিস্তারিত উল্লেখ আছে। এ অভিযানের প্রতিটিতেই তাঁর নেতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ফুটে ওঠে।
১. পশ্চিমমুখী অভিযান
তিনি পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছে দেখলেন সূর্য যেন কর্দমাক্ত ঝর্ণায় অস্ত যাচ্ছে। সেখানে তিনি এক জাতির মুখোমুখি হন। আল্লাহ তাকে এই জাতির ওপর ন্যায়বিচার প্রয়োগের ক্ষমতা দেন। তিনি সৎকর্মশীলদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন এবং অপরাধীদের শাস্তি দেন।
২. পূর্বমুখী অভিযান
তিনি পূর্ব দিকে যাত্রা করে এমন এক জাতির সন্ধান পান যারা সূর্যের আলো থেকে বাঁচার জন্য কোনো প্রাকৃতিক আড়াল পেত না। এখানেও তিনি ন্যায়বিচারের আদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।
৩. উত্তরের অভিযান—ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর নির্মাণ
সবশেষে তিনি দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় পৌঁছান, যেখানে লোকেরা ইয়াজুজ–মাজুজ নামক হানাদার জাতির নিপীড়নে ক্লান্ত ছিল। তারা জুলকারনাইনের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ না করে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুপ্রাণিত শক্তিতে লোহা ও গলিত তামা দিয়ে বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করেন এবং তাদের আক্রমণ থেকে অঞ্চলটিকে সুরক্ষিত করেন।
জুলকারনাইনের জীবনী থেকে শিক্ষা
জুলকারনাইনের চরিত্র ইতিহাস ও ধর্মীয় নৈতিকতার এক অনুপম উদাহরণ। তাঁর জীবন থেকে পাওয়া প্রধান শিক্ষাগুলো হলো:
১. ক্ষমতা ও নেতৃত্ব আল্লাহর দান, এটি অহংকারের জন্য নয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য।২. ভূখণ্ড, সম্পদ ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি বিনয়ী ছিলেন।৩. প্রতি সিদ্ধান্ত ও কাজে তিনি আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করেছেন।৪. তিনি পৃথিবীজুড়ে ন্যায় ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।৫. ইয়াজুজ–মাজুজের প্রাচীর কেয়ামতের আগ পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে এটি ইসলামি বিশ্বাসের অংশ।
ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন
আজ রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ এবং হিজরি ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। দিনটি শীতের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় নতুন ঋতুর আমেজ নিয়ে এসেছে। ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আজ ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজকের দিনে জোহরের সময় শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। দিনের দ্বিতীয়াংশে বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে আসরের নামাজের সময় প্রবেশ করবে। সন্ধ্যার অন্ধকার নামার আগে মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে, তবে আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১২ মিনিটে। রাতের শুরুতে এশার নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬টা ৩২ মিনিট।
আগামীকাল সোমবার ফজরের নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ০০ মিনিটে, আর নতুন দিনের সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ১৪ মিনিটে। দৈনন্দিন ইবাদতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মুসল্লিদের জন্য এ সময়সূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত।
-রাফসান
সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা
ইসলাম পরিবারে ন্যায়, সাম্য এবং দয়ার যে নীতি প্রতিষ্ঠার কথা বলে, তার সর্বোচ্চ প্রতিফলন দেখা যায় সন্তান প্রতিপালনের নির্দেশনায়। পুত্র ও কন্যা উভয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সমান আচরণ, সমঅধিকার এবং সমান স্নেহপ্রদর্শনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সন্তানদের মধ্যে সামান্য কোনো পার্থক্যও ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে, কারণ বৈষম্য প্রায়ই পারিবারিক অস্থিরতা, মানসিক ক্ষত এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়া সামাজিক ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন যে তিনি ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়স্বজনকে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করার নির্দেশ দেন। অশ্লীলতা, মন্দ কাজ এবং জুলুম থেকে তিনি কঠোরভাবে নিষেধ করেন। সুরা নাহল-এর ৯০ নম্বর আয়াতের এই শিক্ষাটি শুধু সমাজের জন্য নয়, বরং পরিবার‐পর্যায়ের নৈতিক কাঠামোর জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সন্তানের মাঝে ন্যায়বিচার রক্ষার মাধ্যমে পরিবারের অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামের অপরিহার্য নীতি।
হাদিসে নোমান ইবনে বশির (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন সন্তানদের মধ্যে সমান আচরণ করো এবং তাদের প্রতি ইনসাফ করো। এতে বোঝা যায়, সন্তানদের উপহার দেওয়া, আচরণে স্নেহ প্রদর্শন করা কিংবা সাধারণ আচার–আচরণ সবক্ষেত্রেই পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ অপরিহার্য। এই নির্দেশ কেবল একটি নৈতিক শিক্ষা নয়, বরং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।
একবার এক সাহাবি তাঁর পুত্রকে কোলে নিয়ে আপন ঊরুর ওপর বসালেন এবং কন্যাকে পাশে বসালেন। তখন নবী করিম (সা.) বিষয়টি লক্ষ্য করে তাঁকে সতর্ক করেন এবং জিজ্ঞেস করেন কেন তুমি উভয়ের সঙ্গে সমান আচরণ করলে না? সাহাবি পরে তাঁর কন্যাকে অন্য ঊরুতেও বসালে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন এখন তুমি ইনসাফ করলে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, নবী করিম (সা.) চাননি সন্তানদের মনে সামান্যতম বৈষম্যের বোধও তৈরি হোক।
আমাদের সমাজে কন্যাসন্তানকে অনেক সময় অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়, যা ইসলামী ন্যায়ের সম্পূর্ণ বিপরীত। অথচ ইসলামে কন্যাসন্তান লালন–পালন, তাদের প্রতি দয়া ও দায়িত্ব পালনকে জান্নাতের নিশ্চয়তার সুসংবাদ দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যার তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে, এবং সে তাদের সুরক্ষা দেয়, ব্যয়ভার বহন করে এবং তাদের সঙ্গে দয়ালু আচরণ করে তার জন্য জান্নাত অবধারিত। কোনো সাহাবি যখন জিজ্ঞেস করেন, কারো যদি দুই কন্যা থাকে? তখন নবী (সা.) বলেন দুই কন্যা হলেও একই প্রতিশ্রুতি।
ইসলাম শুধু কন্যার প্রতি কোমল আচরণ নয়, বরং কঠিন পরিস্থিতিতে কন্যার পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ সদকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। যখন কোনো মেয়ে বিবাহের পর স্বামীর গৃহে সমস্যার কারণে ফিরে আসে, তখন তার বাবা যদি তাকে আশ্রয় দেয়, ব্যয়ভার বহন করে ও যত্ন করে রাসুলুল্লাহ (সা.) এটিকে শ্রেষ্ঠতম দান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুরাকা ইবনে মালেক (রা.)-কে নবী করিম (সা.) বলেন, স্বামী–পরিত্যক্তা কন্যার দায়িত্ব গ্রহণ করা সবচেয়ে উত্তম দান কারণ তার উপার্জনকারী আর কেউ থাকে না।
সন্তানের লালন–পালনে বৈষম্য, পক্ষপাত অথবা আলাদা আচরণ সমাজে অস্থিরতার বীজ বপন করে। সন্তানেরা মনে করে তারা অবহেলিত বা প্রিয় নয় এই অনুভূতি তাদের ব্যক্তিত্বে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই সেখানে সমান আচরণ নিশ্চিত করা একটি ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।
এই নির্দেশনাগুলো পরিবারকে আরও মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং আদর্শিক সামাজিক কাঠামোতে পৌঁছে দেওয়ার পথ দেখায়। পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ শুধু একটি ধর্মীয় আদর্শ নয়, বরং মানবিকতার সর্বোচ্চ নীতির প্রতিফলন।
ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ
আজ শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ৩০ কার্তিক ১৪৩২ এবং হিজরি ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার জন্য আজকের নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার তথ্য অনুযায়ী প্রকাশ করা হলো।
আজকের জুমার নামাজ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। বিকেলের আসরের নামাজের সময় শুরু ৩টা ৩৭ মিনিটে। সন্ধ্যার মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে। রাতের ইশা শুরু হবে ৬টা ৩২ মিনিটে। আগামীকাল রবিবার ফজরের সময় শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে।
এ ছাড়া আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে।
পাঠকের মতামত:
- বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি দুই বড় প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীল লেনদেনে
- ডিএসই ৩০ সূচকে জোরদার উত্থান বাজারে ফিরছে আস্থা
- রেকর্ড ডে সামনে রেখে পদ্মা অয়েলের স্বচ্ছ লেনদেন নির্দেশনা
- প্রবাসী ভোটে নতুন রেকর্ড শীর্ষে যে দুই দেশ
- ভূমিকম্পে বাথরুম কি সত্যিই নিরাপদ? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত
- বাংলাদেশি ওষুধশিল্পের রেনাটার মাইলফলক
- ডিএসইতে একযোগে এনএভি প্রকাশ, কোন ফান্ড কোথায় দাঁড়াল
- ২১–১৮ ক্যারেটেও দাম কমছে, কেমন হবে বাজারের পরবর্তী ধাপ?
- দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন খালেদা জিয়া
- এবার তিন মুসলিম দেশে ভূমিকম্প
- পেকুয়ায় আওয়ামী লীগের ৩০ নেতার বিএনপিতে যোগদান
- কাক দিয়ে শহর পরিষ্কার করছে উন্নত যে দেশ
- দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তান
- তিন জিকিরে গুনাহ মাফ ও জান্নাতের সুসংবাদ
- রাজধানীতে আজ চারটি বড় কর্মসূচি
- ঢাকায় আজ সোমবার যেসব এলাকায় দোকান–মার্কেট বন্ধ
- ঢাকায় শুরু শীতের আলতো উপস্থিতি
- আবারও হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া
- ত্বক উজ্জ্বল করতে পানির ভূমিকা আসলে কতটুকু তা নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- মেজর সিনহা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে উঠে এল সেই রাতের রোমহর্ষক বর্ণনা
- স্বাস্থ্য খাত ও বেকারত্ব দূরীকরণে বিএনপির মেগা প্ল্যান তুলে ধরলেন আমীর খসরু
- পাঠ্যবই থেকে ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দেওয়া নিয়ে সোহেল তাজের কড়া সতর্কতা
- খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, দুই দেশের বিরুদ্ধে ইরানের গুরুতর অভিযোগ
- কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কাজ হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
- মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরাতে ভারতের কাছে ফের চিঠি পাঠাল ঢাকা
- শিরোপা জয়ের রেসে আজ বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান কার পাল্লা ভারীে
- অ্যাপোনিয়ার পর এবার তিশার বিরুদ্ধে কলকাতার প্রযোজকের গুরুতর অভিযোগ
- চট্টগ্রাম ১ আসনে বিএনপির নুরুল আমিন নাকি জামায়াতের সাইফুর রহমান কার পাল্লা ভারী
- রমজান ছাড়াও সারা বছর খেজুর খাওয়ার যে সাতটি বড় স্বাস্থ্যগুণের কথা বলছেন পুষ্টিবিদরা
- ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: তারেক রহমান
- ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পেতে স্মার্টফোনের যে অপশনটি এখনই চালু করা জরুরি
- ঘন ঘন ভূমিকম্পের আতঙ্কের মধ্যেই এবার সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা
- গান নিয়ে মন্তব্যের জেরে বাউল ও তৌহিদি জনতার সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মানিকগঞ্জ
- লা লিগায় উত্তেজনার রাত: শীর্ষে ফেরার মিশনে রিয়াল মাদ্রিদ, টানা পঞ্চম জয়ের খোঁজে আতলেতিকো!
- রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত: রিজভী
- ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে এক ভবনের ওপর হেলে পড়ল আরেকটি ভবন,এলাকায় চরম আতঙ্ক
- গায়ের রং ও গঠন নিয়ে সহপাঠীদের বিদ্রূপের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের করুণ পরিণতি
- টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শিক্ষক হয়ে গালিগালাজ করায় হাদির কড়া সমালোচনা করলেন নীলা
- নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল
- শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ
- বড় ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ৩০০ আসনের জন্য ১৪৮৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে এনসিপি শুরু করল বিশেষ কার্যক্রম
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৫৬টি দেশের পক্ষ থেকে যে বড় বার্তা পেল নির্বাচন কমিশন
- দাদা-দাদী-নানা-নানীর অতিরিক্ত আদরে বাড়ছে 'সিক্স পকেট সিনড্রোম', জানুন বিস্তারিত
- ফোবিয়া: সহজে চেনা, সময়মতো চিকিৎসা জরুরি
- বিশ্বের ১০ দামী খাবার, চোখ কপালে তোলার মতো মূল্য
- শিরোপা জয়ের রেসে আজ বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান কার পাল্লা ভারীে
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- আজকের ভূমিকম্প আমাদের কী শিক্ষা দিচ্ছে: একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ভয়ংকর ঝুঁকিতে দেশের তিন বড় শহর: মাটির নিচ থেকে আসছে বড় বিপদের বার্তা
- ইতিহাস ভারতের, বর্তমান বাংলাদেশের: পরিসংখ্যান ও শক্তির বিচারে কে এগিয়ে?
- ফায়ার সার্ভিসে ফোনের বন্যা, হেলে পড়েছে কয়েকটি ভবন
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
- রাকিবের দুর্দান্ত দৌড়, মোরসালিনের ফিনিশিং: শুরুতেই ব্যাকফুটে ভারত
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- ২৫০ বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ কি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে?
- ঢাকার বংশালে ভূমিকম্পে ৩ জনের মৃত্যু হলো যেভাবে
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়








