কেন আইসল্যান্ডে নেই মশা ও সরীসৃপ? বিজ্ঞান বলছে কারণ

সম্পাদকীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৩ ১৬:০৫:৫৯
কেন আইসল্যান্ডে নেই মশা ও সরীসৃপ? বিজ্ঞান বলছে কারণ

পার্কের মনোরম সন্ধ্যার কল্পনা করুন — মৃদু বাতাস বইছে, সূর্য ঢলে পড়ছে, মাটির সোঁদা গন্ধ বাতাসে ভাসছে, আর হাতে চায়ের উষ্ণ পেয়ালা। চোখ বুজে চুমুক নেওয়ার পরই হঠাৎ কানে আসে মশার ভোঁ ভোঁ শব্দ। সেই মুহূর্তেই শরীরে যেন সূঁচের মতো কাঁটা গেঁথে যায়। মশা মারার চেষ্টা করলেও সে ফুরুৎ করে উড়ে যায়, আর নিজের হাতেই আঘাত পড়ে বা দুই হাতে তালি বেজে ওঠে। এই বিরক্তিকর দৃশ্য বিশ্বজুড়ে প্রায় অভিজ্ঞতা হলেও পৃথিবীর একমাত্র দেশ আইসল্যান্ডে এই সব হয় না।

আইসল্যান্ডে এক ধরণেরও মশা নেই। পাশাপাশি সেখানে সাপ বা অন্যান্য সরীসৃপও পাওয়া যায় না। এর ফলে অনেক সময় আইসল্যান্ডকে ‘সাপমুক্ত দেশ’ও বলা হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সেখানে প্রাকৃতিক হ্রদ, পুকুর, জলাভূমি এবং প্রায় ১৩০০ প্রজাতির প্রাণী বাস করলেও মশার উপস্থিতি শূন্য।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আইসল্যান্ডের দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়া এবং ঠান্ডা জলবায়ু মশার ডিম ফুটে উঠা এবং লার্ভা হিসেবে বেঁচে থাকা কঠিন করে তোলে। মশা সাধারণত অগভীর, স্থির জলাশয়ে বংশবৃদ্ধি করে, যা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফুটে লার্ভা তৈরি করে। কিন্তু আইসল্যান্ডে জমে থাকা জল বেশিক্ষণ থাকে না। দেশটির প্রাকৃতিক নিষ্কাশন এবং দ্রুত প্রবাহমান জলবায়ু মশার প্রজননের জন্য অনুকূল নয়।

তাছাড়া, আইসল্যান্ডে জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব কম। ফলে মানুষের তৈরি স্থির জলাশয়ও খুব কম, যা মশার বংশবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। তাপমাত্রাও অত্যন্ত কম থাকে; রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় –৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই শীতল ও পরিবর্তনশীল পরিবেশে মশা বেঁচে থাকা বা বংশবৃদ্ধি করা প্রায় অসম্ভব।

মজার বিষয় হলো, আইসল্যান্ডে এমন একটি পতঙ্গ রয়েছে যা দেখতে মশার মতো হলেও তা কামড়ায় না এবং কোনো রোগ ছড়ায় না। অর্থাৎ, প্রকৃত মশার মতো নয়, কিন্তু বহিরাগত দর্শনে অনেকটা মশার সাদৃশ্যপূর্ণ।

এই সব কারণে আইসল্যান্ডকে বলা হয় এক শান্তিপূর্ণ, মশামুক্ত ও সাপমুক্ত দেশ — যেখানে প্রকৃতি মায়াবী ঠান্ডা সৌন্দর্যে ভরপুর, আর জীবন চলে নির্মল ও নিরবিচ্ছিন্ন শান্তিতে।

—সত্য নিউজ/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ