মিডনাইট হ্যামার: ইরানে কীসের ওপর বোমা ফেলল যুক্তরাষ্ট্র?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ২০:৩৩:৩৪
মিডনাইট হ্যামার: ইরানে কীসের ওপর বোমা ফেলল যুক্তরাষ্ট্র?

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ইরানে সরাসরি সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে পরিচিত এই সুনির্দিষ্ট ও সংগঠিত অভিযানে একযোগে আঘাত হানা হয়েছে ইরানের তিনটি কৌশলগত পরমাণু স্থাপনায়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম সাহসী ও উচ্চপর্যায়ের সামরিক পদক্ষেপ।

শনিবার (২১ জুন) রাতের এই অভিযানে অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের ১২৫টি যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মিসৌরি থেকে ৩৭ ঘণ্টার টানা যাত্রা শেষে ইরানে পৌঁছানো সাতটি বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান। এসব বিমানে বহন করা হয় মার্কিন বিমানবাহিনীর সবচেয়ে শক্তিশালী ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা। এগুলোর ১৪টি ছোড়া হয় ইরানের ফরদো ও নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায়।

একই সময়ে, পারস্য উপসাগরে অবস্থানরত মার্কিন সাবমেরিন থেকে ইস্পাহানে অবস্থিত আরেকটি গোপন পারমাণবিক ঘাঁটিতে নিক্ষেপ করা হয় প্রায় দুই ডজন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এসব আঘাত ছিল পূর্ণাঙ্গভাবে সমন্বিত ও প্রযুক্তিনির্ভর, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু সক্ষমতাকে ধ্বংস বা অন্তত গুরুতরভাবে ব্যাহত করা।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ফরদো ঘাঁটি এতটাই গভীরে অবস্থিত যে, সাধারণ বোমায় সেটির ক্ষতি করা সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে আসছিল বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহারের জন্য। শেষ পর্যন্ত সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযান পরিচালনা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক বিবৃতিতে দাবি করেন, "এই হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে।" প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একে “অভূতপূর্ব সাফল্য” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তবে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে ইরানি পক্ষ থেকে। ইরানের সরকারিভাবে এখনো কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানানো হয়নি। দেশটির রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো হতাহতের খবর তারা পায়নি। অন্যদিকে, কিছু অসত্যাপিত সূত্র দাবি করেছে, ইরান হামলার আগেই ফরদো ঘাঁটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ও উপাত্ত সরিয়ে ফেলে।

এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আঞ্চলিক রাজনীতিতে এর প্রভাব কতটুকু বিস্তার লাভ করবে, তা নির্ভর করছে ইরানের সম্ভাব্য জবাব ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ওপর।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত