ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

ইরানে হামলা নিয়ে সৌদি প্রিন্সের নতুন বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১০:০৭:২৯
ইরানে হামলা নিয়ে সৌদি প্রিন্সের নতুন বার্তা

ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান।

শনিবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৫১তম সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিতে বলেন।

প্রিন্স ফয়সাল বলেন, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসন শুধুমাত্র ইরানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করেনি, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বিপজ্জনক সংকেত পাঠিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক উত্তেজনাকে আরও জিইয়ে রাখার কৌশল। আমরা এই অগ্রহণযোগ্য হামলার নিন্দা জানাই এবং ইরানের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছি।”

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে বিশ্লেষকরা ‘সৌদি কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান পরিবর্তনের নিদর্শন’ হিসেবে দেখছেন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেহরান-রিয়াদ সম্পর্কের উষ্ণতায়।

ইরান ও সৌদি আরব এক সময় দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। সিরিয়া, ইয়েমেন ও লেবাননের ভূরাজনীতিতে দু’দেশ প্রায়শই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করত।

তবে গত বছর চীন ও ওমানের মধ্যস্থতায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ ও বোঝাপড়া বাড়তে শুরু করে। এই প্রেক্ষাপটে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলার পর সৌদি আরবের প্রকাশ্য অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে একটি নতুন আঞ্চলিক সংহতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ওআইসি সম্মেলনের বক্তব্যে প্রিন্স ফয়সাল আরও একবার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সৌদি আরবের ‘অটল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন ইস্যু মুসলিম উম্মাহর কেন্দ্রীয় সমস্যা। ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দখলদারিত্বের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় থাকব।”

প্রিন্স ফয়সালের বক্তব্যে উঠে এসেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই মাসে নিউইয়র্কে নির্ধারিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন যেখানে সৌদি আরব সহ-সভাপতিত্ব করছিল, সেটি ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের কারণে স্থগিত করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদির এই কূটনৈতিক বার্তা শুধু ইরানের প্রতি সমর্থন নয়, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একটি বৃহত্তর ঐক্যের বার্তা বিশেষত যখন মুসলিম দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিভাজন বিশ্ব রাজনীতিতে স্পষ্ট।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন সামষ্টিক কূটনীতির ইঙ্গিত দিতে পারে, যেখানে ঐতিহ্যগত প্রতিদ্বন্দ্বীরাও সংকট মোকাবিলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোতে আগ্রহী।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত