দেড় মাসেই আয়কর বাঁচানোর সুযোগ, এখনই বিনিয়োগের সময়

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১২ ১০:১১:৫৫
দেড় মাসেই আয়কর বাঁচানোর সুযোগ, এখনই বিনিয়োগের সময়

সত্য নিউজ:চলতি অর্থবছরের সমাপ্তি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র—আর দেড় মাসের মতো সময় হাতে আছে। এই সময়ের মধ্যেই করদাতাদের জন্য কর কমানোর সর্বোত্তম সুযোগ তৈরি হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর আইন অনুযায়ী নির্ধারিত কিছু নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে করছাড়ের সুবিধা দেয়, যা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করে বৈধভাবে কর কমানো যায়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে আয় বাঁচিয়ে সঞ্চয় করাটাই যেমন প্রয়োজন, তেমনি পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে কর কমিয়ে ব্যয় হ্রাস করাও হয়ে উঠেছে সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

বর্তমানে নয়টি নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগ করে কর রেয়াত পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। এ ছাড়া রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও ডিবেঞ্চার, জীবন বিমা, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা, কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠীবিমা, সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ড, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত সরকারি সিকিউরিটিজ এবং মাসিক ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাংক ডিপিএস। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বার্ষিক ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিপিএস সঞ্চয়ের ওপর কর রেয়াত পাওয়া যায়, যা নিয়মিত সঞ্চয়কারীদের জন্য বড় সুবিধা।

এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী, কর রেয়াতের পরিমাণ নির্ধারণে তিনটি সীমা বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং এদের মধ্যে যেটি সর্বনিম্ন, সেটিই রেয়াত হিসেবে প্রযোজ্য। প্রথমত, করদাতার মোট করযোগ্য আয়ের ৩ শতাংশ (সঞ্চয়পত্রের সুদ বাদ দিয়ে), দ্বিতীয়ত, স্বীকৃত খাতে মোট বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ, এবং তৃতীয়ত, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো করদাতার মোট করযোগ্য আয় হয় ৮ লাখ টাকা এবং তিনি বিনিয়োগ করেন ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, তাহলে কর রেয়াত হিসেবে ৩ শতাংশ বা ২৪ হাজার টাকার মতো রেয়াত পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এই বিনিয়োগের ফলে তাঁর করের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

এভাবে বিনিয়োগ করলে যেমন ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় গড়ে ওঠে, তেমনি বর্তমান আয়কর ব্যয়ও কমে আসে। যারা এখনো কোনো বিনিয়োগ পরিকল্পনা করেননি, তাঁদের জন্য এই দেড় মাস গুরুত্বপূর্ণ সময়। সঠিকভাবে খরচ বাঁচিয়ে, উপযুক্ত খাতে বিনিয়োগ করে বৈধ করছাড় নেওয়া যায়। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য এটি একটি বাস্তবসম্মত ও অর্থনৈতিকভাবে সহায়ক পন্থা হতে পারে। তাই আর দেরি না করে এখনই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। এটি শুধু ব্যক্তিগত স্বস্তি নয়, রাষ্ট্রীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ