ইরান-ইসরাইল সংঘাত
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মুখোমুখি বিশ্ব শক্তিগুলো

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ডাকা বিশেষ অধিবেশনে এক মঞ্চে মুখোমুখি হয়েছে বিশ্বের প্রধান কূটনৈতিক শক্তিগুলো। বৈঠকটি পরিণত হয়েছে এক ধরনের কূটনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে, যেখানে প্রতিটি পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় অভিযোগ তুলেছে এবং নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
ইরান: ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন
ইরানের জাতিসংঘ প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ইরানের বিভিন্ন শহরে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। তাঁর মতে, “এটি শুধুই একতরফা আগ্রাসন নয়, বরং সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং এক ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।” তিনি জাতিসংঘকে আহ্বান জানান যেন সংস্থা কেবল নিন্দা জানিয়ে থেমে না থেকে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
ইসরায়েল: ‘ক্ষমা নয়, আত্মরক্ষা’
ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন পাল্টা কড়া ভাষায় বলেন, “আমরা ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার জন্য ক্ষমা চাইব না। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার চূড়ান্ত এবং কোনোভাবেই আপসযোগ্য নয়।” তিনি ইরানকে ‘সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক’ রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, এই আগ্রাসন আত্মরক্ষার অংশ।
যুক্তরাষ্ট্র: ইরান দায়ী, ইসরায়েল আমাদের মিত্র
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত স্পষ্টভাবে ইসরায়েলের পাশে থাকার ঘোষণা দেন এবং বলেন, “ইরান যদি পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসতো, তাহলে আজকের এই সংঘাত ঘটতো না।” তিনি ইরানকে পরমাণু উত্তেজনার মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেন এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার প্রতি ওয়াশিংটনের ‘অবিচল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন।
রাশিয়া: কূটনৈতিক সমাধানে ইসরায়েলের ‘অবজ্ঞা’
রাশিয়ার প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পরমাণু আলোচনার ঠিক আগমুহূর্তে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে কূটনৈতিক সমাধানের পথ রুদ্ধ করেছে।” তিনি এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হিসেবে তুলে ধরেন।
চীন: সার্বভৌমত্বে আঘাত, যুদ্ধ বন্ধে আহ্বান
চীনের জাতিসংঘ স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং বলেন, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসন ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার সরাসরি লঙ্ঘন।” তিনি জাতিসংঘে বলেন, “ইসরায়েল যেন অবিলম্বে সকল সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করে এবং সংলাপে ফিরে আসে।”
IAEA: পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ‘রেডিওঅ্যাকটিভ বিপর্যয়ের আশঙ্কা’
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, “পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানলে শুধুমাত্র আক্রান্ত দেশ নয়, তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলও ভয়াবহ রেডিওঅ্যাকটিভ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।” তিনি সবাইকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের ১০টি বড় ক্ষতি
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- এবার পাকিস্তানকে হামলার হুমকি দিল ইসরায়েল
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান