ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

ইরানের ভয়ে ঘাঁটি খালি করছে যুক্তরাষ্ট্র!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২০ ১২:১১:৪৫
ইরানের ভয়ে ঘাঁটি খালি করছে যুক্তরাষ্ট্র!

মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটির বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কিছু যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ সরিয়ে নিয়েছে।

ইসরায়েল যখন ধারাবাহিকভাবে ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযানে সরাসরি সম্পৃক্ত হবে কি না সেই প্রশ্নের জবাব এখনো দেননি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে অনিশ্চয়তা থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর যুদ্ধ সম্ভাবনায় প্রস্তুতির ঘাটতি রাখছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, সেনাদের সুরক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কতটি যুদ্ধবিমান ও জাহাজ অপসারণ করা হয়েছে এবং কোথায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে তারা অস্বীকৃতি জানান। তবে তাদের একজন বলেন, কাতারের আল উদেইদ এয়ারবেসে খোলা স্থানে থাকা বিমানগুলো ইতিমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম বহর যে ঘাঁটিতে অবস্থান করে, সেখান থেকেও নৌবাহিনীর কিছু জাহাজ সরানো হয়েছে। তাদের মতে, এটি সম্পূর্ণই একটি প্রতিরক্ষামূলক ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা পূর্বপ্রস্তুতির অংশ।

প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, এমন সরিয়ে নেওয়া পদক্ষেপ ‘অস্বাভাবিক কিছু নয়’, বরং এটি একটি প্রমাণ যে মার্কিন প্রশাসন সেনাদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

এই উত্তেজনার মাঝে, কাতারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বৃহস্পতিবার সতর্কতা জারি করেছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন ঘাঁটি আল উদেইদ এয়ারবেসে কর্মীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়াও কাতারে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তবে ইরান তা বরাবরই অস্বীকার করে বলছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ গবেষণা ও শক্তি উৎপাদনের জন্য।

এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িত হওয়ার বিষয়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে যখন ইরানের জাতিসংঘ দূত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যদি ওয়াশিংটন ইসরায়েলের হামলায় সরাসরি জড়িয়ে পড়ে, তবে তেহরান কঠোর জবাব দেবে এবং এই বার্তা ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রশাসনের কাছে পৌঁছে গেছে।

রয়টার্স আরও জানায়, বেশ কিছু ট্যাংকার বিমান ইউরোপে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধবিমান মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থানরত একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরিও এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা সম্ভাব্য সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততার পূর্বাভাস হতে পারে।

সামগ্রিক পরিস্থিতিতে স্পষ্ট যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন এক কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে, যেখানে সরাসরি অংশগ্রহণ না করেও, সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য তার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এই উত্তেজনাকর পরিবেশে ট্রাম্প প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত শুধু মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নয়, বিশ্ব রাজনীতির গতিপথকেও প্রভাবিত করতে পারে।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত