নেটজারিমে গুলি, খাদ্য খুঁজতে এসে মৃত্যু

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নেটজারিম করিডরে সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা অসহায় জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা আরবি।
দেইর আল-বালাহর আল-আওদা হাসপাতালের এক সূত্রের বরাতে এই তথ্য নিশ্চিত করে সংবাদমাধ্যমটি। এর আগে আল-জাজিরা জানায়, ওই হামলায় ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও অনেক আহত হয়েছেন। তবে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থানে রাতভর ও বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত চলা পৃথক ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১১ জন নিহত হন, ফলে গাজাজুড়ে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা (২১:০০ জিএমটি) থেকে এই হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা গাজা ব্যুরো।
নেটজারিম করিডরটি গাজার কেন্দ্রস্থলে একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডর, যেখানে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছাতে শুরু করেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ও খাদ্যবঞ্চিত হাজার হাজার মানুষ সেখানে প্রতিদিন ভিড় করেন শুধুমাত্র খাবার, পানি ও জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী পাওয়ার আশায়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জনগণ যখন সহায়তা নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখনই ইসরায়েলি স্নাইপার ও সেনারা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে হতাহতের সংখ্যা মুহূর্তেই লাফিয়ে বাড়ে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে রক্তাক্ত মৃতদেহ ও আহত মানুষের আর্তনাদ দেখা যায়।
ঘটনার পরপরই গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একাধিক মানবাধিকার সংস্থা একে “মানবিক সহায়তা স্থলে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রসের প্রতিনিধিরা এই করিডরে সহায়তা সরবরাহের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে।
বহুমাস ধরে চলমান ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সংকট চরমে পৌঁছেছে। অন্তত ২.৩ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি গাজার বিভিন্ন অংশে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে এই ধরনের হামলা শুধু মানবিক সহায়তার প্রবাহে বাধা নয়, বরং মানবিক আইন লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে বলে মত দিচ্ছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
গাজার কেন্দ্রস্থলে সহায়তা নিতে আসা নিরস্ত্র মানুষদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণ নতুন করে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। গাজায় মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা এই সংঘাতকে আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান