ইরান- ইসরায়েল সংঘাত
ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের ‘শেল্টার ইন প্লেস’ নির্দেশনা

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষ দেশটির রাজধানী তেল আবিবে অবস্থানরত কর্মীদের ‘শেল্টার ইন প্লেস’ অর্থাৎ তাদের নির্দিষ্ট স্থানে নিরাপদে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে। এটি এক গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা পদক্ষেপ, যা দূতাবাস কর্মীদের চলাচল সীমিত করে এবং তাদেরকে সুরক্ষিত স্থানগুলোতে থাকার নির্দেশনা দেয়।
মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘর্ষ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অবনতির কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করছে এবং তাদের দ্রুত ও নিরাপদে দেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি হয়নি, তবে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রশাসন সতর্কতা অবলম্বন করছে। ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য জড়িত হওয়ার আশঙ্কায় দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটিগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। এই সংকটপূর্ণ সময়ে দূতাবাস কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই প্রাথমিক লক্ষ্য।
গত কয়েকদিনে ইরান থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং পাল্টা হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ইসরায়েলের বীরশেবা ও তেল আবিব শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলগুলো সক্রিয় করেছে।
এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, তারা ইসরায়েল থেকে মার্কিন নাগরিকদের ফেরত আনার জন্য বেসরকারি বিমান ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা গ্যারান্টি এবং প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে, যারা নিয়মিত এই সংঘর্ষের প্রভাব ও পরিস্থিতির উন্নয়ন নিয়ে রিপোর্ট দিচ্ছে। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত ও ব্যাপক পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কাও সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, তবে পরিস্থিতি কিভাবে বিকশিত হবে তা নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কূটনৈতিক ও সামরিক সিদ্ধান্তের ওপর।
সংক্ষেপে, ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাসের ‘শেল্টার ইন প্লেস’ নির্দেশ এবং নাগরিক প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি মার্কিন প্রশাসনের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে সতর্ক ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে মার্কিন নাগরিক ও কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে গুরুত্ব বহন করছে।
সূত্র: আল জাজিরা
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান