ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

মধ্যপ্রাচ্যে তিন তিনটি মার্কিন রণতরী- বড় সংঘাতের আভাস?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৯ ১১:০৭:৫০
মধ্যপ্রাচ্যে তিন তিনটি মার্কিন রণতরী- বড় সংঘাতের আভাস?

মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অত্যাধুনিক পারমাণবিক চালিত রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড ওই অঞ্চলে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিএনএনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জ্যাকারি কোহেনের বরাতে নিউইয়র্ক পোস্ট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ইউরোপ হয়ে রণতরীটি মধ্যপ্রাচ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় মোতায়েন করা হবে।

১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই বিমানবাহী রণতরীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আধুনিক নৌমহড়া প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। এটি ইউএসএস কার্ল ভিনসন ও ইউএসএস নিমিৎজ–এর পর তৃতীয় মার্কিন রণতরী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

ইউএসএস কার্ল ভিনসন ইতোমধ্যেই পারস্য উপসাগরে মোতায়েন রয়েছে এবং ইউএসএস নিমিৎজ সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে এই অঞ্চলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে।

যদিও ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ডের মোতায়েন পরিকল্পনা পূর্বেই গ্রহণ করা হয়েছিল বলে সূত্রে জানা গেছে, ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত নতুন মাত্রা পাওয়ায় এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেকগুণ বেড়ে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি নিয়মিত মহড়া নয় বরং ইঙ্গিত দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

বিশেষ করে ইরানভিত্তিক হামলার আশঙ্কা এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক নৌঘাঁটি ও রণতরী পুনর্বিন্যাসে ব্যস্ত, যা কূটনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশলও হতে পারে।

মার্কিন সামরিক উপস্থিতি শুধু বিমানবাহী রণতরী নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকছে না। বাহরাইনে অবস্থিত একটি মার্কিন নৌঘাঁটি থেকে আরও কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ সম্প্রতি রওনা দিয়েছে বলেও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে। ইরানের আশপাশে সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে এসব যুদ্ধজাহাজকে মোতায়েন করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটি ও সহযোগী দেশগুলোতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিমানবাহী রণতরী একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছে এটি সাম্প্রতিক সময়ে বিরল ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একতরফা শক্তি প্রদর্শন কেবল প্রতিরক্ষা নয়, বরং ইরানকে চূড়ান্ত বার্তা দেওয়ার কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

এছাড়া, ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ডের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকে এক ধরনের মানসিক আশ্বাস দিলেও, তাতে সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজের এই কৌশলগত মোতায়েন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই মহড়া কি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি, নাকি রাজনৈতিক চাপ তৈরির একটি প্রতীকী কৌশল?

যেকোনো সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের মুখে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে এবং বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান আগামী কয়েকদিনেই অধিক স্পষ্ট হবে।

সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত