ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

ইসরায়েলের আগ্রাসনে ফুঁসে উঠল নিউইয়র্ক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৯ ১০:০৫:২৭
ইসরায়েলের আগ্রাসনে ফুঁসে উঠল নিউইয়র্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যনীতি ও সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বাড়ছে বিক্ষোভের ঢেউ। ইরান ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভের পর এবার নিউইয়র্ক সিটিতেও রাস্তায় নেমেছেন শত শত আন্দোলনকারী।

ম্যানহাটনের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিরোধী যুদ্ধাপরাধের সম্ভাব্য অংশগ্রহণ ও ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে “Hands off Iran now” এবং “Stop funding genocide” - এমন বার্তা সম্বলিত স্লোগান দিচ্ছেন।

প্রতিবাদকারীদের ভাষ্যমতে, ইরানের ওপর হামলার হুমকি এবং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা-সদৃশ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। তারা মনে করেন, ওয়াশিংটন একটি পক্ষ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং একতরফা নীতির ফলে এই অঞ্চল আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।

এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ইসরায়েলকে কোটি কোটি ডলার সামরিক অনুদান দিয়ে, গাজায় শিশু হত্যাকে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে বৈধতা দিচ্ছে। এখন তারা আবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে চায়। এটাই কি গণতন্ত্র?”

বিক্ষোভকারীরা শুধু মার্কিন প্রশাসনের যুদ্ধনীতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও সামনে আনেন।তাদের বক্তব্য গাজায় সংঘটিত ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ (genocide) বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র কার্যকর ভূমিকা না নিয়ে উল্টো আগ্রাসী রাষ্ট্রকে সমর্থন দিচ্ছে। এই অবস্থান বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এর আগে, একই ইস্যুতে ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামরিক হস্তক্ষেপের নীতির সমালোচনা করেন এবং ইরানে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।

মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আয়োজিত এই বিক্ষোভে মার্কিন প্রশাসনের প্রতি বার্তা ছিল পরিষ্কার: “এ অঞ্চলে যুদ্ধ নয়, কূটনীতি চাই”।

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের হুমকি ও কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই নিজ দেশের ভেতর থেকে এভাবে প্রতিরোধের মুখে পড়া ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য এক চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “ভোটের বছরে মার্কিন জনগণের যুদ্ধবিরোধী মনোভাব প্রশাসনের নীতিতে পরিবর্তনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে।”

নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের এ বিক্ষোভ শুধু একটি নির্দিষ্ট হামলার বিরুদ্ধে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের পক্ষপাতদুষ্ট মধ্যপ্রাচ্যনীতি এবং আগ্রাসী সামরিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট নাগরিক বার্তা।

এ আন্দোলনের সূত্র ধরে প্রশ্ন উঠছে যুক্তরাষ্ট্র কি বিশ্বশান্তির রক্ষক, নাকি এক যুদ্ধ-নির্ভর পররাষ্ট্রনীতির ধারক?

সূত্র: আল জাজিরা

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত