ইরান-ইসরাইল সংঘাত
ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ‘ফাত্তাহ’ ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মাঝে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইরান এবার ইসরায়েল লক্ষ্য করে ‘ফাত্তাহ’ নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
‘ফাত্তাহ’ ইরানের স্বদেশে নির্মিত একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল, যা অত্যন্ত উচ্চগতিতে (ম্যাক ৫ বা তার বেশি) গমন করতে পারে এবং এর গতিপথ মাঝ আকাশে পরিবর্তন করা সম্ভব—যার ফলে এটি বর্তমান বিশ্বের অনেক উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। ইরান বলছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিড’স স্লিং’ এবং ‘এরো’ সিস্টেমের মতো বহুস্তর বিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও এড়িয়ে যেতে পারে।
এ ঘটনাটি ঘটে এমন এক সময়, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে টানা ছয়দিন ধরে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানের অভ্যন্তরে একাধিক সামরিক ও পরমাণু সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরানও পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। গত এক সপ্তাহে সিরিয়া, ইরাক এবং লেবানন হয়ে এই সংঘর্ষ গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার কেবল একটি কৌশলগত প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এটি তেহরানের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনেরও একটি সচেতন প্রচেষ্টা। কারণ, এ ধরনের অস্ত্র কেবল হামলার জন্য ব্যবহৃত হয় না, বরং এদের উপস্থিতি নিজেই এক ধরণের ‘ডিটারেন্স’ বা প্রতিরোধমূলক ক্ষমতা সৃষ্টি করে। এটি ইসরায়েলের জন্য শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ইরানের এই দাবির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইতোমধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনী উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও সক্রিয় করা হয়েছে এবং মিসাইল শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থার সক্ষমতা মূল্যায়ন চলছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ও এই পরিস্থিতিকে গভীর উদ্বেগের চোখে দেখছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জাতিসংঘ পর্যন্ত সবাই মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। তবে, হাইপারসনিক অস্ত্রের মাঠে সরাসরি ব্যবহার এই প্রথম ঘটলো কিনা, তা নিয়ে সামরিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।
এই মুহূর্তে বিশ্বের দৃষ্টি ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার ওপর নিবদ্ধ। প্রশ্ন উঠছে—এই সংঘাত কি এখানেই থামবে, নাকি এটি আরও বিস্তৃত হয়ে পড়বে একটি সরাসরি যুদ্ধের দিকে?
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান