আশুলিয়ায় গ্যাস বিস্ফোরণে ভবন ধস: দগ্ধ অন্তত ৬, অবস্থা আশঙ্কাজনক দুইজনের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৮ ১২:৫৮:০৩
আশুলিয়ায় গ্যাস বিস্ফোরণে ভবন ধস: দগ্ধ অন্তত ৬, অবস্থা আশঙ্কাজনক দুইজনের

নিম্নমানের নির্মাণ, গ্যাস লিকেজ আর অবহেলায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে সৃষ্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে একটি দ্বিতল ভবনের অংশবিশেষ ধসে পড়েছে। এতে অন্তত ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বুধবার (১৮ জুন) সকাল সোয়া ৭টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার মণ্ডল মার্কেট সংলগ্ন বাধিয়ারপাড়ে জুয়েল আহমেদের মালিকানাধীন ভবনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার বিবরণস্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। জানা গেছে, ভবনের নিচতলায় গ্যাস লাইনের রাইজারে লিকেজ থাকায় রাতভর গ্যাস জমে ছিল ঘরের ভেতর। সকালবেলা রান্না করার জন্য আগুন জ্বালাতেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, যার অভিঘাতে ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে এবং অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় পাশের বাড়ির জানালার কাচ পর্যন্ত ভেঙে গেছে।

দগ্ধ ও আহতদের পরিচয়এই দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন—জাহানারা (৪০), জুয়েল (২৪), শান্ত (২১), হাওয়া আক্তার (২৩), জহুরুল ইসলাম (২৬) ও নাসির (৩৮)।তাদের মধ্যে নাসির প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেলেও বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন জাহানারা ও জহুরুল ইসলাম।

অব্যবস্থাপনা ও নির্মাণ ত্রুটিস্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ভবনের মালিক জুয়েল মিয়া অপরিকল্পিতভাবে এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। ভবনটি গ্যাস নিরাপত্তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা ছাড়াই ভাড়া দেওয়া হয়, যেখানে রাইজারে আগেই লিকেজ দেখা দিয়েছিল। ভবনটির নিচতলায় থাকা ভাড়াটিয়া জহুরুল ইসলামের কক্ষে গ্যাস জমে বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যবাড়ির ম্যানেজার শামীম মিয়া বলেন,“জহুরুল ইসলামের ঘরের রাইজারে লিকেজ ছিল। সারা রাত গ্যাস জমে ছিল ঘরে। ভোরে রান্নার আগুন ধরাতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। এতে ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।”

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের প্রাথমিক মতজিরাবো মডেল ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার আল রিফাত তালুকদার বলেন,“প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে দীর্ঘসময় গ্যাস জমে ছিল। পরে আগুন লাগানোর মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটে। বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতা ও নিরাপত্তা শঙ্কাএই দুর্ঘটনা আবারও নগর উন্নয়ন ও ভবন নিরাপত্তা সংক্রান্ত দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। অপরিকল্পিত নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি এবং ভাড়াটিয়াদের নিরাপত্তার প্রতি উদাসীনতা এমন ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি ও সচেতনতা না থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।

—আশিক নিউজ ডেস্ক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত