ইরান-ইসরাইল সংঘাত

খামেনির অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের জানা, তবে এখনই ‘হত্যা’ নয়: ট্রাম্পের বিতর্কিত বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৮ ০২:০৯:২০
খামেনির অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের জানা, তবে এখনই ‘হত্যা’ নয়: ট্রাম্পের বিতর্কিত বার্তা

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে উত্তাপ ছড়াল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক মন্তব্য। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অবস্থান সম্পর্কে সচেতন, এমনকি তাঁকে হত্যা করাও সম্ভব—তবে অন্তত "এই মুহূর্তে" সে পথে হাঁটছে না যুক্তরাষ্ট্র।

আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) নিজের Truth Social অ্যাকাউন্টে একাধিক পোস্টে ট্রাম্প ইরান প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। এর একটি পোস্টে তিনি বলেন,

"আমরা জানি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু। তবে তিনি যে জায়গায় আছেন, সেখানে নিরাপদ। আমরা তাঁকে ‘অপসারণ’ করব না—অন্তত এখনই নয়।"

ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা চাই না যে ইরান থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন সেনাদের ওপর বা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ছোড়া হোক। কিন্তু আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।”এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সরাসরি খামেনিকে লক্ষ্য করেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর পাশাপাশি আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প ইংরেজি বড় অক্ষরে লেখেন—“UNCONDITIONAL SURRENDER!” অর্থাৎ ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ!’ যা একপ্রকার আলটিমেটাম হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। তার এই মন্তব্য ইরানকে সম্পূর্ণভাবে পিছু হটার আহ্বান এবং যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত বলেও অনেকে ব্যাখ্যা করেছেন।

অর্থপূর্ণ বার্তা, না উত্তেজনার রাজনীতি?ট্রাম্পের এমন বক্তব্যে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও ইরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা, বিশেষ করে সিরিয়া, লেবানন ও ইরাক প্রেক্ষাপটে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানকে কেন্দ্র করে যে শীতল যুদ্ধমুখী বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেটিকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে ট্রাম্পের এই ঘরানার বক্তব্য।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল একটি হুমকি নয়, বরং খামেনির সরাসরি নাম নিয়ে এভাবে মন্তব্য করা যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী কৌশলগত বার্তার প্রতীক, যা ভবিষ্যতের সংঘাতের দিকনির্দেশনা হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নেতাদের এমন ব্যক্তিকেন্দ্রিক মন্তব্য সাধারণত বিরল, বিশেষত যেখানে একজন রাষ্ট্রপ্রধান আরেকজন দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতার বিষয়ে সরাসরি ‘অপসারণ’ শব্দ ব্যবহার করেন। ট্রাম্পের এই বার্তা শুধু ইরানের জন্য নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যও নতুন দোলাচলের জন্ম দিতে পারে।

আপাতত ইরানের প্রতিক্রিয়া না আসা পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ অনিশ্চিত হলেও, একথা নিশ্চিত যে ট্রাম্পের এই বক্তব্য কূটনৈতিক ও সামরিক পরিমণ্ডলে জোর আলোচনা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত