ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র তান্ডব: অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ০৯:২৬:২৭
ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র তান্ডব: অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতি

ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি সম্প্রচার সংস্থা জানিয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র খোলা জায়গায় পড়েছে, যা সরাসরি প্রাণহানির কারণ হয়নি কিন্তু কয়েকজন ইসরায়েলি আহত হয়েছেন। আহতদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

সবচেয়ে বড় ধরণের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাইফা বন্দরের তেল পরিশোধনাগার, যা ইসরায়েলের দুই প্রধান রিফাইনারির মধ্যে একটি। ওই রিফাইনারিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক অবকাঠামোগত ধ্বংস সাধিত হয়েছে, যার ফলে পরিশোধনাগারটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এই রিফাইনারিটি ইসরায়েলের জ্বালানি সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পেট্রোল, ডিজেল এবং জেট ফুয়েলের বড় অংশ পরিশোধিত হয়, যা দেশের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য। হাইফার রিফাইনারির ক্ষতি ইসরায়েলের জ্বালানি ব্যবস্থায় বড় ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে এবং নতুন সংকট ডেকে আনতে পারে।

এর আগে এমন আক্রমণ বা তেমন বড় ধরণের ক্ষতি ইসরায়েলে শেষ ৪০-৫০ বছরে দেখা যায়নি। তাই দেশবাসীর মধ্যে এটি একটি বড় ধাক্কা এবং গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনসাধারণ এখন ধীরে ধীরে উপলব্ধি করছেন যে, দেশটি একটি একেবারে বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখোমুখি, যা শুধু সামরিকক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থাকেও প্রভাবিত করছে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতেও এই সংকটের প্রভাব পড়ছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা বেশ নিম্নমুখী এবং তার সরকারের কঠোর ডানপন্থী নীতির কারণে অনেকেই বিরক্ত, তবুও দেশের বিরুদ্ধে এই আক্রমণের সময় সাধারণ ইসরায়েলিরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রবণতা দেখাচ্ছেন। জাতীয় সুরক্ষা ও দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে তারা পতাকাটির নিচে একত্রিত হচ্ছেন, যা ইসরায়েলের জাতীয় ঐক্যের দৃঢ়তা নির্দেশ করে।

এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে এবং সম্ভাব্য পরবর্তী হামলার মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। তবে হামলার ধরণ ও আকার থেকে স্পষ্ট যে, এটি একটি ব্যাপক ও সংগঠিত আক্রমণ, যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আক্রমণের ফলে ইসরায়েলের সামরিক কৌশল, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক দৃশ্যপট দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই পরিস্থিতি মনোযোগ দিয়ে দেখছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নতুন এক মোড় নিতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত