ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ০৮:৪৮:৪৭
খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক মন্তব্য আরও একধাপ সরেস করে তুলেছে পরিস্থিতিকে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, “ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করা হলে সংঘাত তীব্র হবে না, বরং তা শেষ হয়ে যাবে।”

সাক্ষাৎকারে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা আছে কিনা। এর উত্তরে নেতানিয়াহু কূটনৈতিক জবাব দিলেও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেন, “আমরা যা প্রয়োজন, তাই করছি।”

তিনি ইরানকে দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “তারা চিরস্থায়ী যুদ্ধ চায় এবং ইসরাইলকে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় এনে ফেলেছে। আমরা এই আগ্রাসন ঠেকাচ্ছি, আর এর জন্য প্রয়োজনে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কঠোরভাবে দাঁড়াতেই হবে।”

নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনী। আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সাইয়্যাদ বলেন, “ইসরাইলিরা যেন তাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দ্রুত ত্যাগ করে।”

তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “আপাতদৃষ্টিতে সুরক্ষিত বাংকার কিংবা আন্ডারগ্রাউন্ড শেল্টারও আর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। ইরানের প্রতিক্রিয়া কঠোর এবং তা অব্যাহত থাকবে।”

ইরান ইতোমধ্যে ইসরাইলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। কিছু খবরে দাবি করা হয়েছে, ইরানি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ইসরাইলের সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর সরাসরি এই ধরণের হুমকি শুধু তাৎক্ষণিক উত্তেজনাই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা হুমকির জন্ম দিতে পারে। আয়াতুল্লাহ খামেনি ইরানের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আলোচনায় আনা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলবে।

নেতানিয়াহুর বক্তব্য ও ইরানের পাল্টা অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে একটি বিপজ্জনক স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রিত না হয়, তাহলে তা শুধুমাত্র ইরান-ইসরাইল নয়, গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তাকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলের জন্য এখন জরুরি তাদের কূটনৈতিক ভূমিকা জোরদার করা এবং পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত