আব্দুল হামিদের বিদেশযাত্রা তদন্তে তিন উপদেষ্টার কমিটি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৯:১৭:৩১
আব্দুল হামিদের বিদেশযাত্রা তদন্তে তিন উপদেষ্টার কমিটি

ত্য নিউজ: সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ৭ মে তারিখে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশের বাইরে গমন নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে উদ্বেগ দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ রোববার (১১ মে) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই তথ্য জানানো হয়।

গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এই কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটি সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ গমনের প্রক্রিয়া, তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এবং এ ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম ভঙ্গ বা দায়িত্বে গাফিলতির ঘটনা ঘটেছে কি না—তা খতিয়ে দেখবে। বিশেষ করে, রাষ্ট্রের সাবেক সর্বোচ্চ পদাধিকারী হিসেবে তাঁর বিদেশযাত্রা অনুমোদন, কূটনৈতিক সমন্বয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষদের ভূমিকা কতটা সঠিক ছিল, তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।

কমিটির কার্যপরিধিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

৭ মে আব্দুল হামিদ কীভাবে এবং কার অনুমোদনে বিদেশে গমন করেন, তা নির্ধারণ করা। এ প্রক্রিয়ায় কোন সংস্থা বা কর্মকর্তার দায়িত্বে ব্যত্যয় বা গাফিলতি ছিল কি না, তা অনুসন্ধান করা। দায়িত্বে ব্যর্থতা থাকলে সংশ্লিষ্টদের পরিচয় শনাক্ত এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ পেশ। প্রয়োজনীয় তথ্য, দলিলপত্র, যন্ত্রপাতি ও সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের ক্ষমতা প্রয়োগ করা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ গ্রহণ করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা।

কমিটির কাজে সহায়তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজনে অতিরিক্ত সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে এবং সরকারি-বেসরকারি যেকোনো সংস্থা বা ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দিতে বা তথ্য দিতে আহ্বান জানাতে পারবে।

তদন্ত কমিটির গঠনে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—সাবেক একজন রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্দিষ্ট প্রটোকল এবং নিরাপত্তা পদ্ধতি উপেক্ষা করে বিদেশে চলে যেতে পারেন, এবং সেই তথ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলের অজানা থেকে যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই তদন্ত কেবল একটি নির্দিষ্ট ঘটনা নয়, বরং দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের চলাচল, নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সমন্বয় নিয়ে প্রশাসনিক শৃঙ্খলার একটি পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সরকারি মহলের সূত্র মতে, তদন্তের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় পদাধিকারীদের ভ্রমণসংক্রান্ত নিয়ম-কানুন আরও কঠোর ও স্বচ্ছ করার সুপারিশ আসতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ