ভবিষ্যৎ সরকারে ড. ইউনূসকে চায় বিএনপি, তাহলে কি বিএনপি-ইউনূস সমঝোতা চূড়ান্ত?

বাংলাদেশে সম্ভাব্য রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভবিষ্যৎ সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অধ্যাপক ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি কৌশলগত মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্র ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন, বিএনপি যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তবে অধ্যাপক ইউনূসের অভিজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারে অগ্রাধিকার দেবে।
বৈঠকের সূচনালগ্নে তারেক রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে সালাম জানালে অধ্যাপক ইউনূসও আন্তরিকভাবে জবাব দেন যা দুই পক্ষের মধ্যে হৃদ্যতা ও আস্থার ইঙ্গিত দেয়। বৈঠকের পর দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৬ সালের রমজানের আগেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে, তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারে দৃশ্যমান অগ্রগতি জরুরি।
বিএনপি সূত্র বলছে, লন্ডনে আলোচিত বৈঠকে তারেক রহমান দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইউনূসের পরামর্শ এবং অংশগ্রহণের প্রস্তাব দেন। বিএনপি মনে করে, ইউনূসের মতো আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বকে পরামর্শদাতা বা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় যুক্ত করলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আগামীতে যদি আমরা সরকার গঠন করি, তাহলে অবশ্যই অধ্যাপক ইউনূসকে দেশের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রয়াসে যুক্ত করতে চাই। তাকে আমরা সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছি, তিনি হয়তো বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করবেন।”
এদিকে রাজনৈতিক উত্তাপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতাও বেড়েছে। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সংলাপে বসছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন, এবং আগামী নির্বাচন যেন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করতে মতামত ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
এই ধারাবাহিকতায়, ১৭ জুন ঢাকায় বিএনপি একটি মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলতি জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ২৪ বা ২৫ তারিখে একটি উচ্চপর্যায়ের বিএনপি প্রতিনিধিদল চীন সফরে যাবে। সফরটি মূলত চীনা সরকার ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক সংলাপ জোরদারের উদ্দেশ্যে আয়োজিত।
প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্বে থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এজেডএম জাহিদ হোসেন, জহিরউদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ। চীন সফরের পাশাপাশি জামায়াতসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলও আলাদাভাবে চীনা কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ পেয়েছে বলে জানা গেছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ জানান, তারাও আমন্ত্রণ পেয়েছেন, তবে সফরের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?