ইসরায়েলের হয়ে গোয়েন্দাগিরি! ইরানে ধরা ১৩ ভারতীয়

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৫ ০৯:৪৫:৫৯
ইসরায়েলের হয়ে গোয়েন্দাগিরি! ইরানে ধরা ১৩ ভারতীয়

ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) সম্প্রতি এক অভিযানে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৩ জন ভারতীয়সহ মোট ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই অভিযানে ধৃত ব্যক্তিরা একাধিকবার ইরানের সামরিক স্থাপনাসমূহ, বিশেষ করে নেতৃত্ব পর্যায়ের গতিবিধি এবং উচ্চ নিরাপত্তার এলাকার তথ্য ফাঁস করার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

সম্প্রতি ইরানের সামরিক বাহিনীর ওপর পরিচালিত একটি প্রাণঘাতী ড্রোন হামলা এই গোয়েন্দা অভিযানের সূত্রপাত ঘটায়। ওই হামলায় উচ্চপদস্থ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন, আহত হন অনেকেই। তদন্তে উঠে আসে যে, এই হামলা ছিল ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ভাঙনের’ ফলাফল এবং এতে ইরানের অভ্যন্তরেই একাধিক এজেন্ট জড়িত ছিল।

ইরানি কর্তৃপক্ষের মতে, এই হামলার পেছনে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (R&AW বা ‘র’) যৌথভাবে কাজ করেছে। এজেন্টদের অনেকে ইরানে বৈধ ভিসায় প্রবেশ করে বিভিন্ন পেশার আড়ালে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছিলেন।

ইরানি তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আটককৃত ১৩ ভারতীয় নাগরিক সরাসরি ওই ড্রোন হামলা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ, টার্গেট ম্যাপিং ও প্রযুক্তিগত সহায়তার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের কেউ কেউ রাজধানী তেহরানের একটি সামরিক কম্পাউন্ডে যাতায়াতও করতেন বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ইসরাইলের কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলছেন, মোসাদ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের র-এর সঙ্গে কৌশলগত ও গোয়েন্দা পর্যায়ে সহযোগিতা করে আসছে। এমনকি ভারতের ভূখণ্ডে মোসাদের একাধিক ‘ফরোয়ার্ড অপারেটিং সেল’ সক্রিয় রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে তারা মধ্যপ্রাচ্যে পরিচালিত মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে থাকে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় নাগরিকদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ইঙ্গিত করে, গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি কেবল দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নয়, বরং এটি বৃহৎ আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক সংকটের প্রতিফলন।

ভারত সরকার এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিষয়টি যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তবে ভারত-ইরান সম্পর্কের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। ইরান সরকারও ইঙ্গিত দিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে না।

IRGC বলছে, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আরও আন্তর্জাতিক সংযোগ ও ষড়যন্ত্রের তথ্য সামনে আসতে পারে। এই ঘটনা ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত