লন্ডনে ঐতিহাসিক মুহূর্ত: সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ইউনূস-তারেক বৈঠক শুরু

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ১৪:৫৯:১১
লন্ডনে ঐতিহাসিক মুহূর্ত: সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ইউনূস-তারেক বৈঠক শুরু

অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকটি শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা), লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ডরচেস্টার হোটেলে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন প্রথম আলো-কে নিশ্চিত করেন যে বৈঠক শুরু হয়েছে।

তারেক রহমান হোটেলে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এটি একটি স্পষ্ট বার্তা যে, আলোচনা উচ্চপর্যায়ে এবং আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আগ্রহ ও জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা ও সাধারণ নির্বাচন ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে চলেছে।

বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো আশা করছে, এই বৈঠক চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এবং নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুসমূহে একটি সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে তারেক রহমান নির্বাচন সময়সূচি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন। বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “তারেক রহমান স্পষ্টভাবে তুলে ধরবেন কেন এপ্রিল নির্বাচন উপযুক্ত নয় এবং কেন ডিসেম্বর নির্বাচন হতে পারে একটি বাস্তবসম্মত সময়। তবে যদি জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কিছু নমনীয়তা থাকতে পারে।” তিনি আরও জানান, “তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আসতে পারে।”

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের এই বৈঠক দেশের রাজনীতিতে একটি সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। আমরা এটি গভীর মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি।”

লন্ডন হাইকমিশনে গত ১০ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “তারেক রহমান বাংলাদেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা। অন্যদিকে ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। ফলে, তাদের আলোচনায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন, ‘জুলাই সনদ’, এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ যেকোনো জাতীয় ইস্যু উঠে আসতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হবে, সেটি দুজন নেতার নিজস্ব সম্মতিতে নির্ধারিত হবে।”

বৈঠকের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লন্ডনে উপস্থিত হয়েছেন। যদিও এখনো নিশ্চিত নয় যে তিনি বৈঠকে অংশ নেবেন কি না।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড়। একদিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদিকে ১৭ বছর ধরে নির্বাসিত থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসা প্রবাসী রাজনীতিক—এই দুই নেতার মুখোমুখি বৈঠক দেশ ও প্রবাসের সব মহলে গভীর পর্যবেক্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

বৈঠকের পরবর্তী পর্যায়ে কী সিদ্ধান্ত আসে এবং তা নির্বাচন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় কী ভূমিকা রাখে—সেই দিকেই এখন দৃষ্টির কেন্দ্রে বাংলাদেশ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত