ভিপি নুরকে ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ, বিএনপি নেতার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে উঠে আসছে ঘটনার নানা দিক, যা বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ককে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্র জানায়, বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া গ্রামে প্রয়াত এক দলীয় কর্মী বাদল মেম্বারের স্মরণসভা শেষে ফেরার পথে হামলার শিকার হন ভিপি নুর।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বটতলা বাজার এলাকায় নুরুল হকের গাড়িবহর পথরোধ করে একটি গ্রুপ। এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর।
নুরুল হক তার ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন, “বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের অনুসারীরা আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে আমরা গাছ ফেলে ও রড-রামদা নিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতেও তারা সরে যায়নি।”
তিনি আরও দাবি করেন, এই হামলায় ৮–১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং স্থানীয়দের ওপর শারীরিক হামলা চালানো হয়।
রাতভর অবরুদ্ধ থাকার পর ভোররাত ৪টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ নুরুল হককে উদ্ধার করে উপজেলা ডাকবাংলোয় নিয়ে যায়।গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম ফাহিম বলেন, “টানা পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ ভিপিকে উদ্ধার করে। পরে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়ে তাকে গলাচিপা ছেড়ে জেলা শহরে চলে যেতে বলা হয়।”
নুরুল হক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসেও সন্ত্রাসীদের রাস্তা থেকে সরাতে পারেনি। এটা কি প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়?”
বিএনপি নেতা হাসান মামুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“নুরুল হক নুর সম্প্রতি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি তার লোকজন চরবিশ্বাস বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এক সময় সুসম্পর্কের দাবি করলেও দুই পক্ষের মধ্যে প্রকাশ্য উত্তেজনা এখন নজরে এসেছে। শহিদুল ইসলাম ফাহিম অভিযোগ করেন, “বিএনপির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু হাসান মামুনের এই ধরনের আচরণ সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। আমরা আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী অবস্থান জানাবো।”
ঘটনার পর একাধিকবার গলাচিপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সৈয়দুজ্জামান এবং গলাচিপা থানার ওসি মো. আশাদুর রহমান-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য দেননি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তিগত বিরোধ নয়; বরং চলমান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যকার সংঘাতের বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার, মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা এবং মাঠে প্রভাবশালী অবস্থান তৈরির চেষ্টার অংশ হিসেবেই এই ধরনের ঘটনার জন্ম হতে পারে।
-ইমরান, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- কবে থামবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভেদের রাজনীতি?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- ২০২৬ সালের এপ্রিলেই জাতীয় নির্বাচন: জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা
- নির্বাচনের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: বিএনপি অসন্তুষ্ট, জামায়াত সন্তুষ্ট, এনসিপি শর্তসাপেক্ষে সমর্থন
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- রোজা, পরীক্ষা ও বাজেটের মাঝে নির্বাচন অযৌক্তিক: বিএনপি
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?