ইরানে ইসরায়েলি হামলা নিয়ে ট্রাম্প যা বললেন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ০৯:২২:৩৭
ইরানে ইসরায়েলি হামলা নিয়ে ট্রাম্প যা বললেন

বিশ্ব রাজনীতির আঙিনায় শুক্রবার ভোরে ঘটে গেল এক নাটকীয় এবং সম্ভাব্যভাবে গতি পরিবর্তনকারী ঘটনা। ইসরায়েল চালিয়েছে একটি সুপরিকল্পিত ও ব্যাপক বিমান ও ড্রোন হামলা, যার লক্ষ্য ছিল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনা। তবে এই হামলা এমন এক সময় এলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তিনি এই পদক্ষেপ দেখতে চাননি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একে ‘নেশন অব লায়ন্স’ নামে অভিহিত করেছে একটি পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযান, যা প্রায় দুই ডজন যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জামের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়।ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ দাবি করেছেন, এটি ছিল “একটি আগাম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ” যার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “আমি চাই না তারা এখন কোনো পদক্ষেপ নিক। আমি চাই চুক্তির পথ খোলা থাকুক।”ট্রাম্প আরও বলেন, “সংঘাত এড়ানোই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো ধরনের আগ্রাসন কূটনৈতিক সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।”

স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরান ও তার উপকণ্ঠে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে। রাজধানীর উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম এবং মহাল্লাতিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ছয় থেকে নয়টি বিস্ফোরণ শনাক্ত করা হয়েছে।আলজাজিরা, বিবিসি, রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, বেশ কিছু বিস্ফোরণ ঘটেছে আবাসিক এলাকাগুলিতেও, যেখানে ইরানি সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবার এবং বেসামরিক নাগরিকরা বাস করেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, “এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে উচ্চমাত্রার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামো।” তিনি বলেন, “অভিযানটি ছিল সুনির্দিষ্ট, নির্ভুল ও লক্ষ্যকেন্দ্রিক।”

ইরান সরকার তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ একাধিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। যদিও বিমানবন্দর সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, তবে আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণমাত্রার সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা প্রবলভাবে বেড়ে গেছে।জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে এমন এক অগ্নিসংযোগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, যার থেকে ফেরার পথ কঠিন। ইসরায়েল মনে করছে, সময়ক্ষেপণ না করে ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস করতে হবে। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের একাংশ, বিশেষ করে ট্রাম্প, বিশ্বাস করেন সংলাপই একমাত্র কার্যকর পথ।সত্যিকার অর্থেই, এই আক্রমণ এখন শুধু যুদ্ধের সম্ভাবনা নয়, কূটনীতির ভবিষ্যৎও প্রশ্নের মুখে এনে দিয়েছে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত