ইরানে গর্জে উঠল ইসরায়েলের বোমা! ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা চরমে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ০৯:১৪:১০
ইরানে গর্জে উঠল ইসরায়েলের বোমা! ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা চরমে

ইরানে শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েলের এক বিস্ময়কর এবং পূর্বপরিকল্পিত বিমান হামলায় কেঁপে উঠেছে রাজধানী তেহরানসহ একাধিক শহর। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে, তারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ‘সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট’ হামলা চালিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা, ব্রিটিশ বিবিসি, রয়টার্স এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমসহ একাধিক সূত্র এ হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দাবি করেন, “উচ্চ মানের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের গবেষণাগার ও সামরিক কমান্ড সেন্টারগুলোতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানা হয়েছে।”প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জানান, “এই অভিযান তখনই শেষ হবে, যখন আমাদের নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে। যতদিন প্রয়োজন, ততদিন এই অভিযান চলবে।”

তেহরানের স্থানীয় সময় ভোর ৩টা। হঠাৎ করেই উত্তর-পূর্ব, পশ্চিম এবং মহাল্লাতি এলাকার আকাশজুড়ে গর্জে উঠে একের পর এক বিস্ফোরণ। আলজাজিরার তেহরান প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শহরের অন্তত ছয় থেকে নয়টি এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ধোঁয়ার কুণ্ডলি এবং ভবনের ধ্বংসাবশেষের বর্ণনা দিয়েছেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়ার আস্তরণ। এই এলাকা বিশেষভাবে সামরিক কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারবর্গের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত হলেও, অনেক বেসামরিক নাগরিকও সেখানে বসবাস করেন।

আলজাজিরার ভিডিও চিত্র ও স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক ভবন পুরোপুরি আবাসিক। ফলে শুধু সামরিক সদস্য নয়, সাধারণ নাগরিক এবং শিশুরাও প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, বিমানবন্দর সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা ও উদ্বেগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য আরও নড়বড়ে হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আলোচনা শুরু হয়েছে।

এই হামলার প্রতিক্রিয়া, ভূ-রাজনৈতিক পরিণতি এবং ইরানের সম্ভাব্য জবাবদিহিতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজর এখন তেহরান ও তেল আবিবের দিকেই। যদিও ইসরায়েলের এই আক্রমণ কৌশলগতভাবে সফল হতে পারে, মানবিক ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ ও দীর্ঘমেয়াদি।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত