বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১২ ২০:১৬:৪৬
বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ঐতিহাসিক বাকিংহাম প্যালেসে প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী এই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক সংস্কার এবং বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রধান উপদেষ্টা প্যালেসে পৌঁছালে রাজা চার্লস তাকে সাদরভাবে অভ্যর্থনা জানান। এরপর তারা একটি নিরিবিলি পরিবেশে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে রাজা চার্লস ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা মডেল এবং মাইক্রোক্রেডিটের মাধ্যমে বৈশ্বিক দারিদ্র্য নিরসনে তার যুগান্তকারী উদ্যোগের প্রশংসা করেন। আলোচনায় বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়েও বিস্তারিত মতবিনিময় হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “এই বৈঠকটি সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর একটি। রাজা চার্লস আগে থেকেই ড. ইউনূসের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং সংস্কারমুখী এই উদ্যোগগুলোকে তিনি আন্তরিকভাবে সমর্থন জানিয়েছেন।”

বৈঠকে ইউনূস ফাউন্ডেশনের বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুবসম্প্রদায়ের ভূমিকার বিষয়েও আলোকপাত করা হয়। রাজা চার্লস এসব উদ্যোগে তাঁর আগ্রহ ও সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

বৈঠকের পর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের পক্ষ থেকে ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। এই সম্মাননার মাধ্যমে কেবল ড. ইউনূসের নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক উদ্ভাবন ও মানবিক অর্থনীতির দর্শন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি পেল।

প্রেস সচিব আরও জানান, “এই অ্যাওয়ার্ড মূলত মাইক্রোক্রেডিট এবং সামাজিক ব্যবসার বিশ্বব্যাপী প্রভাবকে স্বীকৃতি দিতে প্রদান করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সম্মানের বিষয়।”

এ সফরের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরাও ব্রিটেনের বিভিন্ন আর্থিক এবং কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। উদ্দেশ্য বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থের সূত্র অনুসন্ধান ও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। বিষয়টিকে সফরের আরেকটি কৌশলগত লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে এই উচ্চপর্যায়ের সাক্ষাৎ কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতা আরও শক্তিশালী করার একটি কৌশলী পদক্ষেপ।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত