অপরাধের স্বর্গরাজ্য শেখ হাসিনার সাবেক বাসভবন

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১২ ১১:০২:১৭
অপরাধের স্বর্গরাজ্য শেখ হাসিনার সাবেক বাসভবন

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক বাসভবন ‘সুধা সদন’ এখন পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এক ভবনে পরিণত হয়েছে। নজরদারির অভাবে ভবনটি কিশোর গ্যাং, মাদকসেবী ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে, যা আশপাশের এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পরপরই শেখ হাসিনার ধানমন্ডি ৫/এ এলাকায় অবস্থিত এই ঐতিহাসিক বাড়িটি হামলার শিকার হয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর থেকে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে এবং এখনো পর্যন্ত তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ভবনের প্রতিটি তলায় ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোরদের জটলা। কেউ মাদক নিচ্ছে, কেউ উচ্ছৃঙ্খল আচরণে লিপ্ত। এমনকি কিছু প্রাপ্তবয়স্ককেও প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতে দেখা গেছে। বাড়ি থেকে নারীদের বেরিয়ে আসতেও দেখা গেছে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে আরো সন্দেহ ও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।

আশপাশের কেয়ারটেকার ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত নামলেই বাড়িটির ভেতরে নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়। সন্ধ্যার পর বাড়ির চারপাশে সন্দেহজনক লোকজনের আনাগোনা চোখে পড়ে। বিশেষ করে ধানমন্ডি লেকের কাছাকাছি হওয়ায় স্থানটি এক ধরনের আড়াল হয়ে উঠেছে অপরাধীদের জন্য।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জিসানুল হক সাংবাদিকদের জানান, “বাড়িটি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। নিয়মিত টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।” তবে এলাকাবাসীর বক্তব্য ভিন্ন; তাদের দাবি, পুলিশি তৎপরতা খুবই সীমিত এবং দৃশ্যমান নয়।

সুধা সদনের পাশের বাড়ির বাসিন্দা নিরঞ্জন জানান, “প্রথম দিকে আমরা নিজেরাই নজরদারি করতাম, কিন্তু এখন আর সম্ভব না। বাড়িটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই কিশোর গ্যাং আর মাদকসেবীদের আস্তানা হয়ে গেছে। কেউ যেন কিছু দেখেও দেখছে না।”

তথ্যসূত্র: আজকের পত্রিকা


‘আমার বাবাকে কাকা-কাকাতো ভাই মেরে ফেলেছে’

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৩:৩১:৩৯
‘আমার বাবাকে কাকা-কাকাতো ভাই মেরে ফেলেছে’
ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সামান্য ছাদের পানি পড়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক বিরোধের জেরে ভাইয়ের হাতে প্রাণ হারালেন আনন্দ ঘোষ (৪৫)। পারিবারিক কলহ থেকে শুরু হওয়া এ ঘটনা এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার উনশিয়া গ্রামের ঘোষবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মৃত সুধীর ঘোষের ছেলে ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আনন্দ ঘোষের সঙ্গে তাঁর তিন ভাই—গৌরাঙ্গ ঘোষ (৫২), কালা ঘোষ (৫০) ও যুগল ঘোষের (৩০) দীর্ঘদিন ধরে ছাদের পানি পড়া নিয়ে বিরোধ চলছিল। রোববার দিনের বৃষ্টির পর বিষয়টি আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে রাতের বেলায় আনন্দ ঘোষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে গৌরাঙ্গ, কালা ও যুগল ঘোষের সঙ্গে তাঁদের ভাতিজা নয়ন ঘোষ এবং সৌরভ ঘোষ লাঠি নিয়ে আনন্দ ঘোষকে বেধড়ক মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় পরিবার ও স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত আনন্দ ঘোষের স্ত্রী মিতা ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, “দিনে বৃষ্টি হয়েছিল। ছাদ থেকে পানি পড়া নিয়ে রাতে আমার দেবর আর ভাসুররা বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।”

অন্যদিকে নিহতের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে অথৈ ঘোষ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, “আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি নার্স হই। আমারও স্বপ্ন ছিল নার্স হওয়ার। কিন্তু কাকা আর কাকাতো ভাইয়েরা মিলে আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। এখন আমার স্বপ্নও শেষ হয়ে গেল।”

প্রতিবেশী বাচ্চু হাওলাদার বলেন, বিষয়টি নতুন নয়। ছাদের পানি পড়াকে কেন্দ্র করে আগে একাধিকবার গ্রামে সালিশ বৈঠক হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আনন্দ ঘোষের ভাইয়েরা কোনো সিদ্ধান্ত মানেননি। শেষ পর্যন্ত সেই বিরোধ রক্তক্ষয়ী পরিণতি ডেকে আনল।

ঘটনার পর স্থানীয়রা গৌরাঙ্গ, কালা ও যুগল ঘোষের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে কাউকেই পাওয়া যায়নি।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, “লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

-রফিক


উন্নয়নের মুখোশ না মহা লুটপাট? শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৫ লাখ কোটি টাকার রহস্য

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ০৯:৫১:৩৭
উন্নয়নের মুখোশ না মহা লুটপাট? শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৫ লাখ কোটি টাকার রহস্য

বাংলাদেশে একদিকে যখন পদ্মা সেতুর ঝলমলে আলো, মেট্রোরেলের আধুনিক গতি আর কর্ণফুলী টানেলের স্বপ্নকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল, তখন অন্যদিকে আড়ালে চলছিল দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থলুণ্ঠন। ব্রিটিশ দৈনিক ফাইনান্সিয়াল টাইমস তাদের অনুসন্ধানী তথ্যচিত্র “বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন: চোখের সামনেই চুরি”-তে যে চিত্র দেখিয়েছে, তা কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ইতিহাসেরও এক অন্ধকার অধ্যায়।

২৩৪ বিলিয়ন ডলারের অদৃশ্য স্রোত

২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার করে পাচার হয়েছে—মোট প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ২৫ লাখ কোটি টাকার সমান। এই বিপুল অংক কেবল কল্পনাতেই নয়, বাস্তবেও জাতীয় অর্থনীতিকে দারিদ্র্য ও বৈষম্যের গভীরে ঠেলে দিয়েছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্নীতি নয়, বরং ছিল সুসংগঠিত রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ডাকাতি।

পাচারের কৌশল: সিনেমার মতো নিখুঁত পরিকল্পনা

অর্থ পাচারের মূল কৌশল ছিল—

ওভার ইনভয়েসিং: আমদানির সময় পণ্যের দাম কাগজে বহুগুণ বেশি দেখানো। এক কোটি টাকার যন্ত্রপাতিকে দেখানো হতো পাঁচ কোটি টাকা, আর অতিরিক্ত চার কোটি টাকা বৈধভাবে বিদেশে চলে যেত।

আন্ডার ইনভয়েসিং: রপ্তানির ক্ষেত্রে ঘটত উল্টোটা। পাঁচ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে দেখানো হতো মাত্র এক কোটি টাকা। চার কোটি টাকা বিদেশে পাচারকারীর অ্যাকাউন্টে থেকে যেত।

হুন্ডি নেটওয়ার্ক: ব্যাংকিং খাতকে দখল করে ভুয়া ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হতো। ইসলামী ব্যাংকের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানও এই প্রহসন থেকে রক্ষা পায়নি। ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আবদুল মান্নানকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, পরে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর হয় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কাছে।

ব্যাংক লুট থেকে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য

এস আলম গ্রুপ একাই ভুয়া ঋণের মাধ্যমে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই টাকার বড় অংশ লন্ডনের রিয়েল এস্টেট বাজারে বিনিয়োগ করা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে যুক্তরাজ্যে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই এখন ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের জব্দ করা তালিকায়।

টিউলিপ সিদ্দিকীর ফ্ল্যাট থেকে বৈশ্বিক কেলেঙ্কারি

এই কেলেঙ্কারিতে শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীর নামও উঠে এসেছে। মাত্র ২২ বছর বয়সে লন্ডনের কিংস ক্রসে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট পাওয়ার ঘটনা এবং পরবর্তীতে দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রিত্ব হারানোর ঘটনা দেখায়, কীভাবে পরিবারতন্ত্র আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গেছে।

উন্নয়নের জোয়ারের আড়ালে লুণ্ঠনের স্রোত

পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া, কিংবা অন্যান্য বড় প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, সবই প্রমাণ করে উন্নয়নের নামে জাতিকে এক মরিচিকার আড়ালে আটকে রাখা হয়েছিল। উন্নয়নের ঢাকঢোলের আড়ালে এ যেন ছিল এক নির্লজ্জ মহালুটপাটের উৎসব।

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থলুণ্ঠন

অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাষায়, “এটি সম্ভবত কোনো দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থলুণ্ঠন।” এই লুণ্ঠন কেবল অর্থনীতিকে নয়, রাষ্ট্রের নৈতিক ভিত্তিকেও ধ্বংস করেছে। আর আজ প্রশ্ন উঠেছে—উন্নয়নের স্বপ্ন নাকি লুটপাটের অন্ধকার, কোনটি আসল উত্তরাধিকার?


শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অস্ত্র মামলায় নতুন মোড়

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৬:১৭:০৯
শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অস্ত্র মামলায় নতুন মোড়
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলী (৬১) এবং তার তিন সহযোগীর জামিন আবেদন নাকচ করেছে আদালত। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৫–এর বিচারক সাইফুর রহমান মজুমদার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল।

আদালতে সুব্রত বাইনের পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন, তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান তার বিরোধিতা করেন। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করে অভিযোগপত্রভুক্ত চার আসামির উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম গত ১৩ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।

পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৫–তে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় সুব্রত বাইনের পাশাপাশি আরও তিনজন আসামি রয়েছেন আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ এবং আরাফাত ইবনে নাসির।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মে ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া থেকে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে হাতিরঝিল থেকে শ্যুটার আরাফাত ও শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৮ মে হাতিরঝিল থানার এসআই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন।

সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯১ সালে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হত্যার মাধ্যমে তার অপরাধ জগতে উত্থান ঘটে। ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে, সেখানে সুব্রত বাইন ছিলেন অন্যতম।

তিনি ঢাকার অপরাধ জগতের কুখ্যাত সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেলে ২০০৩ সালের দিকে তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং দীর্ঘদিন সেখানেই অবস্থান করেন।

-রাফসান


খুনের পরিসংখ্যানে বৃদ্ধি: দেরিতে দায়ের হওয়া মামলার প্রতিফলন

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৭:১৫:১৭
খুনের পরিসংখ্যানে বৃদ্ধি: দেরিতে দায়ের হওয়া মামলার প্রতিফলন
ছবিঃ বি এস এস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৩ মাসের অপরাধের চিত্র আজ প্রকাশ করেছে সরকার। এতে দেখা গেছে, এ সময়ে খুনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি মনে হলেও এর বড় অংশ আসলে পূর্ববর্তী ১৬ বছরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, যেগুলোর মামলা ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের’ পর দায়ের করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তত ১,১৩০টি খুনের মামলা, যা শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত হয়েছিল, সেগুলো দীর্ঘদিন গোপন রাখা হয় এবং পুলিশের নিরুৎসাহের কারণে মামলা করা যায়নি। কিন্তু শাসন পরিবর্তনের পর এসব মামলা আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের অপরাধের বিভিন্ন সূচক কিছুটা উঁচু মনে হলেও এটি নতুন কোনো সহিংসতার ঢেউ নয়; বরং দেরিতে বিচারপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া। এখন সাধারণ নাগরিকরা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ভয়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন না, ফলে তারা অপরাধের মামলা করতে পারছেন নির্ভয়ে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ডাকাতির ঘটনা ২০২৪ সালের ১,৪০৫ থেকে ২০২৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১,৩১৪-তে। তবে ২০২৩ সালের আগের সময়ের তুলনায় এটি এখনো বেশি। এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক দিক হলো—পুলিশি হস্তক্ষেপমুক্ত পরিবেশে এখন সব ডাকাতির মামলা নিবন্ধিত হচ্ছে এবং নাগরিকরা আরও বেশি সচেতন হয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন।

এছাড়া, দ্রুত বিচার আইনে অপরাধের মামলা ২০২৪ সালের ১,২২৬ থেকে ২০২৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫১-এ। একই সময়ে দাঙ্গা মামলার সংখ্যা ১২৫ থেকে কমে ৫৯-এ এবং চুরির মামলা ৮,৬৫২ থেকে নেমে এসেছে ৬,৩৫৪-এ।

প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “যদিও খুনের সংখ্যা বেশি মনে হচ্ছে, বাস্তবে এটি নতুন সহিংসতা নয়, বরং পূর্বের দমন করা মামলার প্রকাশ।” অনেক হত্যাকাণ্ডের মামলা এমনকি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পুরোনো সময়ের।

সরকারের দাবি, এখন ভুক্তভোগীরা রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভয় পাচ্ছেন না। পুলিশও আর মামলা নিতে বাধা দিচ্ছে না। ফলে খুনের মতো গুরুতর অপরাধের তথ্য সামনে আসছে, আবার সাধারণ অপরাধ যেমন চুরি, ডাকাতি ও দাঙ্গার ঘটনা কমছে।

এভাবে অপরাধের চিত্র নতুন বাস্তবতাকে তুলে ধরছে—একদিকে দেরিতে হলেও ন্যায়বিচারের পথ উন্মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

-সুত্রঃবি এস এস


চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৩:৪২:৪৯
চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
ছবিঃ সংগৃহীত

অনলাইনে ভুয়া চাকরির প্রলোভন এবং টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ধানমন্ডি, ঠাকুরগাঁও সীমান্তঘেঁষা একটি গ্রাম এবং দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে সমন্বিত অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো চক্রের মূলহোতা আকাশ (২২), রাশাদ (২৮) এবং তাদের সহযোগী আসাদ (৩০)। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, এই প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষকে ভুয়া খণ্ডকালীন চাকরির প্রলোভন দিতো। পাশাপাশি টেলিগ্রাম অ্যাপে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়ে অল্প সময়ে কয়েকগুণ মুনাফা দেওয়ার আশ্বাস দেখাতো। তাদের টোপে পড়ে অনেকেই লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে, আর এর মাধ্যমেই চক্রটি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। সিআইডির ধারণা, এই চক্রের সঙ্গে দেশি-বিদেশি আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও ছদ্মনামে নিবন্ধিত একাধিক সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ ঢাকার ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার সূত্র ধরেই এই অভিযানে চক্রের মূল সদস্যদের আটক করা সম্ভব হয়েছে।

-রফিক


স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল বহিষ্কার, মালিবাগ হামলায় মামলা

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৩:৩১:১২
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল বহিষ্কার, মালিবাগ হামলায় মামলা
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর মালিবাগে বুধবার দিবাগত রাতে সোহাগ পরিবহনের মালিকের ভাইসহ অন্তত সাতজনকে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করেছে একদল দুর্বৃত্ত। হামলাকারীরা এ সময় সোহাগ পরিবহনের কার্যালয় ও মালিকের বাসায় ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল হোসেনকে অভিযুক্ত করে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাত ১১টা ৭ মিনিটে কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ব্যক্তির দিকে কয়েকজন চাপাতি, ছুরি ও রড নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ হাততালি দিয়ে উল্লাস করছিলেন এবং পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে কর্মচারীদের মারধর ও টিকিট বিক্রির অর্থ লুট করেন।

সোহাগ পরিবহনের মালিক মো. ফারুক তালুকদার বলেন, সেদিন রাতে একটি বাস কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে যাত্রীরা নামছিলেন। এ সময় দুই ব্যক্তি যাত্রী নামার পথেই ধূমপান করছিলেন। কর্মীরা তাঁদের সরে যেতে বললে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় ৫০ জন অস্ত্রধারী এসে হামলা চালায়। এতে তাঁর ভাই আলী হাসান তালুকদারসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তিনি অভিযোগ করেন, হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন।

ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন জানান, বিল্লালকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোহাগ গ্রুপের নিরাপত্তা কর্মকর্তা দেওয়ান মো. আল আমিন বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করেন। মামলায় বিল্লালসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও ১৮-২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রাখা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীরা গ্যারেজ ও নিরাপত্তা কক্ষ ভাঙচুর করে এবং আলী হাসান তালুকদার, তাঁর চালক মাসুদ, কর্মী হাসান তপন, ফরহাদ হোসেন, নাইমুর রহমান আদিব ও মাসুদকে কুপিয়ে আহত করে। এছাড়া প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ১৭ হাজার ৫৭০ টাকা লুট করে নেয়।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম ফারুক জানান, এজাহারভুক্ত আসামি পারভেজ এবং ভিডিও দেখে শনাক্তকৃত জয়নালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, হামলা ও ভাঙচুরে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বিবৃতি দিয়ে এই হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

-রফিক


মেঘনায় রুদ্ধশ্বাস বন্দুকযুদ্ধ: অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হামলা

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৬ ০৭:২৩:৪৪
মেঘনায় রুদ্ধশ্বাস বন্দুকযুদ্ধ: অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হামলা
গোলাগুলি। প্রতিকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে সদ্য চালু হওয়া জামালপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের ওপর নৌ ডাকাত দলের ভয়াবহ হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেল সোয়া পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত মেঘনা নদীতে প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলে পুলিশের সঙ্গে নৌ ডাকাতদের বন্দুকযুদ্ধ। এ সময় ডাকাতরা পুলিশ ক্যাম্পে একের পর এক গুলি ও ককটেল ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, তবে পাল্টা প্রতিরোধে পুলিশও গুলি চালায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উভয় পক্ষ মিলিয়ে শতাধিক গুলি বিনিময় হয়েছে।

আতঙ্কে নদীবেষ্টিত গ্রামাঞ্চল

স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল দেওয়ান বলেন, বিকেলের দিকেই প্রচণ্ড গুলির শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে তিনি দেখেন, পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় ট্রলারযোগে আসা ডাকাতরা পুলিশের দিকে গুলি চালাচ্ছে। এতে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষ ভয়ে ঘরে অবস্থান করতে শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাকাত নয়ন, পিয়াস ও রিপনের নেতৃত্বে ৩০–৪০ জন সদস্য ট্রলার নিয়ে নদীতে মহড়া দিচ্ছিল। পুলিশ প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পেয়ে তারা প্রথমে আড়াল নেয়, পরে অস্ত্র, ককটেল ও হেলমেট পরে ক্যাম্পের ওপর সরাসরি হামলা চালায়।

পুলিশের প্রতিরোধ ও পাল্টা গুলি

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডাকাতরা থানা থেকে লুট করা দেশি-বিদেশি অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ডাকাত দলের দিক থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়, পুলিশও অন্তত ২০ রাউন্ড পাল্টা গুলি চালায়। আধাঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে ডাকাতরা মতলবের দিকে পালিয়ে যায়। সৌভাগ্যবশত কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি। তবে ডাকাতদের কেউ আহত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

দীর্ঘদিনের সন্ত্রাসের ইতিহাস

স্থানীয়রা জানান, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদী ও আশপাশের শাখা নদীতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালুমহাল দখল, নৌযানে চাঁদাবাজি ও প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে নয়ন, পিয়াস, রিপন ও লালু বাহিনী। তাদের তাণ্ডবে গত এক বছরে বাবলা নামের এক প্রতিদ্বন্দ্বী ডাকাত নিহত হন, আর বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় আবদুল মান্নান ও হৃদয় আহমেদ নামে দুজন গ্রামবাসী গুলিতে প্রাণ হারান। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই গত শুক্রবার জামালপুর গ্রামে নতুন পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়।

পুলিশের বার্তা: ভয় নেই, সন্ত্রাসীরা দমন হবে

ঘটনার সময় ক্যাম্পে থাকা গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ জানান, ডাকাতরা সুসংগঠিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশ পিছু হটেনি এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ক্যাম্প চালুর পর নৌ ডাকাতরা আর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না। এ কারণেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তার ভাষায়, “পুলিশ জনগণের পাশে রয়েছে। ডাকাত–সন্ত্রাসীরা যতই শক্তিশালী হোক, তাদের নির্মূল করে গুয়াগাছিয়াকে অপরাধমুক্ত করা হবে।”

মানুষের আতঙ্ক ও ভবিষ্যৎ শঙ্কা

স্থানীয় অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ডাকাত বাহিনীর ভয়ে শতাধিক পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ছিল। পুলিশ ক্যাম্প চালুর পর ধীরে ধীরে মানুষ গ্রামে ফিরতে শুরু করে। কিন্তু হামলার ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, পুলিশকে আরও শক্তিশালী ও স্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তুলতে হবে, নাহলে যে কোনো সময় ডাকাতরা আবারও ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে।


থানায় ঢুকে এএসআইকে ছুরিকাঘাত, পরদিন মিলল যুবকের লাশ

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৫ ১২:৫৭:০৩
থানায় ঢুকে এএসআইকে ছুরিকাঘাত, পরদিন মিলল যুবকের লাশ

গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় এক অজ্ঞাত যুবকের আচরণ ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) ছুরিকাঘাত করার পর পালিয়ে যাওয়া ওই যুবকের মরদেহ পরদিন সকালে কাছাকাছি বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এক যুবক আচমকাই সাঘাটা থানার মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন ডিউটিতে থাকা কনস্টেবল সেরাজুল ইসলামের কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বাধা দিতে গেলে এএসআই মহসিন আলীর ওপর ছুরি দিয়ে আক্রমণ চালান তিনি। এতে গুরুতর আহত হন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনার পর হামলাকারী দৌঁড়ে থানার পাশের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে ঝাঁপ দেন এবং সেখানেই নিখোঁজ হয়ে যান।

রাতভর অভিযান চালানোর পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল কচুরিপানায় ঢাকা পুকুরের নিচ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঘটনার পর থেকেই উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। ধারণা করছি, মরদেহ কচুরিপানার নিচে আটকে ছিল।”

পরে মরদেহটি সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যুবকটি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। মরদেহের পকেট থেকে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি প্রবেশপত্র পাওয়া গেছে। সেখানকার তথ্য অনুযায়ী, তার নাম সাজু মিয়া, পিতা দুলাল মিয়া ও মাতা রিক্তা বেগম। প্রবেশপত্রে থাকা ছবি ও তথ্য যাচাই করে পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।

এএসআই মহসিন আলীর আঘাত গুরুতর না হলেও তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন নাকি পূর্বপরিকল্পিত তা খতিয়ে দেখছে। পুরো ঘটনার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা উসকানি আছে কি না, সেটিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক


গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা, লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম! 

অপরাধ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৮ ১৩:৩৪:৪২
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা, লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম! 
এনসিপি নেতাদের হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা (বামে), লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত ও পরিমার্জিত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয় সন্ত্রাসী হামলা। এনসিপির অভিযোগ, ওই হামলার পেছনে ছিল ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনা। জানা গেছে, ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেন শেখ হাসিনা এবং এনসিপির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে দলটির গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার পাঠানো একাধিক অডিও বার্তাও এই ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

ভয়াবহ অডিও বার্তায় শেখ হাসিনার কণ্ঠ

যুগান্তরের হাতে থাকা একটি অডিও বার্তায় শোনা যায়, শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালকে বলেন, “ওরা নাকি গোপালগঞ্জে যাচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় আমার বাবার কবর ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এবার টুঙ্গিপাড়ায় হামলা চালাবে। তোমরা বসে আছ কেন? প্রতিহত করো। ওদের কাউকে যেন গোপালগঞ্জের মাটি থেকে জীবিত ফিরে যেতে না দেওয়া হয়।”

আরেকটি অডিও বার্তায় শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লাকে বলতে শোনা যায়, “ওরা আশপাশের জেলা থেকে লোক জড়ো করছে। পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, ফরিদপুর—সব দিক থেকে ঢুকবে গোপালগঞ্জে। একটাই নির্দেশ—প্রতিহত করো। যদি টুঙ্গিপাড়ায় ঢুকেই পড়ে, একজনও যেন জীবিত না ফিরে যায়।”

হামলার বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে সহিংসতা

এই অডিও বার্তাগুলোর পরদিনই, ১৭ জুলাই সকালে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের দিন আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়। একইদিন শহরের মোহাম্মদপাড়ায় এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে গুলি ও বোমা হামলাও চালানো হয়।

ভারতে ও লন্ডনে থাকা নেতাদের সমন্বয় ও উসকানি

এই হামলার পেছনে শুধু ছাত্রলীগ নয়, জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। অভিযোগ রয়েছে, কলকাতা থেকে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ফুপাত ভাই ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম হামলাকারীদের সমন্বয় করেন। লন্ডন থেকে তদারকি করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান এবং শরীয়তপুর-১ এর সাবেক সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম কাজল মাঠপর্যায়ের তৎপরতা পরিচালনা করেন।

লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম

কলকাতায় আত্মগোপনে থাকানিষিদ্ধঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ফেসবুক লাইভে এসে সরাসরি বলেন, “ওদের প্রতিহত করতে হবে, কাউকে ছেড়ে দিও না।” ওই লাইভ থেকেই এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

নারীদের সংগঠনে জড়িত মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী

এনসিপির অভিযোগ অনুযায়ী, কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ও শফিকুল আলম কাজলের স্ত্রী ইয়াসমিন আলম স্থানীয় নারী নেত্রীদের সংঘবদ্ধ করে এনসিপি কর্মীদের ওপর হামলায় অংশগ্রহণ করান। পরে পুলিশ তাকে আটক করে।

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৭ জুলাই গোপালগঞ্জে সমাবেশ ও রোডমার্চের আয়োজন করে এনসিপি। গোপালগঞ্জে কর্মসূচি শেষে দলটির শরীয়তপুরের জাজিরায় যাওয়ার কথা ছিল।

শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো এই পদযাত্রাকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এনসিপির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘গোপালগঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হলেও, বের হতে দেওয়া হবে না’—এই ছিল শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ মহলের নির্দেশনা। এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা, উসকানি ও হামলা—সবই সমন্বিতভাবে চালানো হয়।

পাঠকের মতামত: