ড্যাফোডিল ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্য কর্মসূচি

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১২ ০৯:৪৬:৪৯
ড্যাফোডিল ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্য কর্মসূচি

ঈদুল আজহার দিন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিরাপত্তাকর্মীদের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছে বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ১০ জুন সকালে, যখন ছাত্রশিবিরের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া পেজে কর্মসূচির ছবি প্রকাশ করা হয়। অন্যান্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবির পাশাপাশি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দৃশ্যও সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

এই উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যেমন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কারণ, ড্যাফোডিলে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, এবং শিবিরের কোনো প্রকাশ্য কর্মসূচি বা কমিটি এর আগে কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে চোখে পড়েনি।

বহুমাত্রিক প্রশ্নের মুখে শিবিরের উপস্থিতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না এলেও শিক্ষার্থীদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে একটি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন, যার কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরেই অপ্রকাশিত ছিল, এবার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কর্মসূচি চালাতে পারল।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইসলামী ছাত্রশিবির দীর্ঘদিন ধরে "সামাজিক সংগঠন" হিসেবে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে নানান প্রকল্প পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কম খরচে বাসস্থান প্রকল্প, বৃক্ষরোপণ, শীতবস্ত্র বিতরণ ইত্যাদি।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি রেজাউল করিম একাধিক গণমাধ্যমকে জানান, কর্মসূচিটি ছিল ছাত্রশিবিরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগ।

তিনি বলেন, "আমাদের যেসব শহীদ সদস্য আছেন, তাঁদের পক্ষ থেকে আমরা এই কোরবানি করেছি। বেশিরভাগ মাংস বিতরণ করা হয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিরাপত্তাকর্মীদের মাঝে। শহীদদের ও আহতদের পরিবারেও দেওয়া হয়েছে ১০টি ছাগল। এমনকি, রিকশাচালক, দারোয়ান ও গৃহকর্মীদের মাঝেও বিতরণ করা হয়েছে।" তিনি আরও জানান, ড্যাফোডিলে বিতরণের সময় শাখা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট কোনো শাখা কমিটি না থাকলেও শিবিরের দাবি, "জোনভিত্তিক কাঠামোর" আওতায় তারা কাজ করছে। আশুলিয়া জোনের অধীনস্থ ইউনিট হিসেবে ড্যাফোডিলে কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, "প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত আমাদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি। প্রকাশ্য কমিটি গঠন বা কার্যক্রম চালানো হবে কি না, তা নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের মতামত ও প্রশাসনের অনুমতির ওপর।"

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে এখনো কোনো বিবৃতি না দিলেও বিষয়টি তদন্তাধীন বলে জানা গেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও কোনো সংগঠনের এইভাবে সরাসরি কার্যক্রম চালানো, সেটি রাজনৈতিক হোক বা সামাজিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ