মাওরা থাকলে আমি নই: হর্ষবর্ধন

বিনোদন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৩:১৬:১৬
মাওরা থাকলে আমি নই: হর্ষবর্ধন

সত্য নিউজ:ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি এক সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন। ভয়াবহ এই ঘটনার রেশ গিয়ে লেগেছে উপমহাদেশের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। শুধু রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক স্তরেই নয়, এই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বিনোদন অঙ্গনেও। এই প্রেক্ষাপটেই আলোচনায় এসেছেন বলিউড অভিনেতা হর্ষবর্ধন রানে, যিনি পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাওরা হোসেনের সঙ্গে আবারও স্ক্রিন ভাগ করার বিষয়ে স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছেন।

২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোমান্টিক বলিউড চলচ্চিত্র সনম তেরি কসম-এ হর্ষবর্ধনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন পাকিস্তানি তারকা মাওরা হোসেন। সিনেমাটি সেই সময় ভালো ব্যবসা করেছিল এবং সম্প্রতি আবার মুক্তি পেয়ে ফের সাড়া ফেলেছে। এই সাফল্য থেকেই নতুন করে ভাবনা চলছে সিক্যুয়াল সনম তেরি কসম ২ নির্মাণের। কিন্তু বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় সিনেমাটির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

সামরিক সহানুভূতির বার্তা

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে হর্ষবর্ধন স্পষ্টভাবে জানান, তিনি পাকিস্তানের কোনো অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক নন। তাঁর ভাষায়,

‘সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার দেশের বিরুদ্ধে যেসব মন্তব্য শুনেছি বা পড়েছি, সেগুলোর পর আমি সম্মানের সঙ্গে জানাচ্ছি—যদি আগের অভিনেত্রীদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকে, আমি এই সিনেমার অংশ হতে পারব না।’

তিনি আরও লেখেন,

‘আমি পৃথিবীর যেকোনো দেশের, এমনকি মঙ্গল গ্রহের মানুষ ও শিল্পীদের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমার দেশের প্রতি অসম্মানজনক কিছু বললে, সেটা আমি কখনো মেনে নেব না। আমার ফলোয়ার কমলেও চলবে, তবু দেশের গর্বে আঘাত সহ্য করব না।’

সিনেমার ভবিষ্যৎ কী?

এই মন্তব্য সামনে আসার পর সনম তেরি কসম ২ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বলিউডে গুঞ্জন চলছে, ছবিটির নির্মাতারা মাওরার বদলে শ্রদ্ধা কাপুর-কে নিতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা ও শিল্পীদের দায়

এ ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রভাব ফেলছে দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বিনোদন জগতেও। একসময় বহু ভারতীয় নির্মাতা পাকিস্তানি শিল্পীদের কাজের প্রশংসা করতেন এবং যৌথ প্রযোজনার সিনেমাও হতো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই দ্বার ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে।

হর্ষবর্ধনের সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত হলেও তা নিঃসন্দেহে বৃহৎ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। তিনি দেশের স্বার্থে তারকা পরিচয় নয়, নাগরিক দায়বোধকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, উপমহাদেশে রাজনীতি এবং বিনোদন একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বা সীমান্তসংক্রান্ত সংকট খুব সহজেই অন্য দেশের চলচ্চিত্র, সংগীত কিংবা শিল্পজগতেও ছায়া ফেলতে পারে। হর্ষবর্ধন রানের অবস্থান যেমন ব্যক্তিগত সাহসিকতার পরিচয়, তেমনি তা শিল্পী ও নাগরিক পরিচয়ের দ্বন্দ্বকেও সামনে নিয়ে এসেছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ