তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৯ ১৬:১১:৩১
তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলমান লন্ডন সফর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে তার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি সম্ভাব্য বৈঠকের খবর। সরকারি ও কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আগামী ১৩ জুন এই বহুল আলোচিত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে এই সম্ভাব্য সাক্ষাৎ ঘিরে দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক কৌতূহল ও কল্পনার জন্ম নিয়েছে।

চার দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন ড. ইউনূস। এ সফরে তিনি ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং কিং চার্লস হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। এছাড়া লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন তিনি। তবে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি এখন নিবদ্ধ তারেক রহমানের সঙ্গে তার বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকের দিকে। সফরের শুরু থেকেই এই সম্ভাব্য বৈঠক ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছিল, যা এখন দৃশ্যত বাস্তবের কাছাকাছি চলে এসেছে।

বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই বৈঠক মূলত একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও তা নিছক সৌজন্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেখানে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন, প্রস্তাবিত রাজনৈতিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের ৫ জুলাই ঘটে যাওয়া বর্বর পুলিশি অভিযানের বিচার প্রসঙ্গও আলোচনায় আসতে পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই আলোচনাগুলো বাংলাদেশের বর্তমান সংকটময় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। ড. ইউনূস ও তারেক রহমান—উভয়ের অবস্থান বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এবং ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় প্রভাব বিস্তার করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনপূর্ণ থাকলেও এই বৈঠককে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে সংলাপ প্রয়োজন, এই বৈঠক তারই সূচনাবিন্দু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একইসঙ্গে, যদি এই আলোচনায় একটি সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তবে তা দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক উত্তাপ প্রশমনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে।

এই প্রেক্ষাপটে বৈঠকটিকে একটি সম্ভাব্য ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। কারণ, বিগত বছরগুলোর রাজনৈতিক মেরুকরণের পরিপ্রেক্ষিতে এমন একটি সংলাপ দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পথ উন্মুক্ত করতে পারে। যদিও কোনো একক বৈঠক থেকে তাৎক্ষণিক ফল প্রত্যাশা করা বাস্তবসম্মত নয়, তথাপি এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ভিত্তি তৈরি করতে পারে।

সর্বোপরি, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের এই সম্ভাব্য বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন গতিপথ তৈরি করতে পারে—যা দেশের নির্বাচন, সংস্কার ও মানবাধিকারের প্রশ্নে নতুনভাবে ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটি শুধু একটি সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি সম্ভাব্য দিক পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত