ফখরুলের হুঁশিয়ারি: রোডম্যাপে দেরি মানে সরকারের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ১৭:৩১:০৫
ফখরুলের হুঁশিয়ারি: রোডম্যাপে দেরি মানে সরকারের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে

নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণায় দীর্ঘসূত্রতা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত একটি সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনমনে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ উত্তরণ, ন্যায়বিচার এবং কাঠামোগত সংস্কারের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে, বাংলাদেশ সময় ৬টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। বর্তমানে তিনি চোখের অস্ত্রোপচারের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। যদিও চিকিৎসার কারণে বিমান ভ্রমণ তার জন্য আপাতত নিষিদ্ধ, তিনি জানিয়েছেন যে দেশের রাজনীতির সর্বশেষ পরিস্থিতি তিনি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং গঠনমূলক ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছেন।

তার বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, “চোখের অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে আমি আরও কয়েক দিন ভ্রমণ করতে পারছি না। তবে আমি বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছি এবং ইতিবাচক ফলাফলের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

মির্জা ফখরুল গত সোমবার (২ জুন) অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠকের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে দেখে আমি আনন্দিত। এটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের সম্ভাব্য পথ তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আশা করি, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুধু গণতন্ত্রই নয়, গত ১৫ বছরে যেসব মানুষ অন্যায়ভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য সুবিচার এবং একটি কার্যকর রাজনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ন্যায়বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার এই তিনটি বিষয় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং একে অপরের পরিপূরক। এগুলোকে একসঙ্গে বাস্তবায়ন না করলে একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।”

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বার্তাটি তিনি দিতে চেয়েছেন, সেটি হলো নির্বাচনি রোডম্যাপের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয়তা। তার ভাষায়, “আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রজ্ঞা ও সামর্থ্য আছে। তবে এ প্রক্রিয়ার সূচনা হওয়া উচিত দ্রুত একটি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে। রোডম্যাপ ঘোষণায় যত দেরি হবে, জাতি তত বেশি উদ্বিগ্ন ও সংশয়ে পড়বে এবং তখন সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”

তার এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা গুরুত্ব সহকারে দেখছেন, কারণ এটি শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ নয়, বরং বৃহত্তর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে ইঙ্গিত দেয়।

বিবৃতির শেষাংশে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক যাত্রা প্রসঙ্গে একটি আশাবাদী বার্তা দিয়ে বলেন, “আসুন, আমরা সবাই মিলে এই পরিবর্তনের মুহূর্তকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাই এবং বাংলাদেশকে প্রকৃত গণতন্ত্র ও কার্যকর জবাবদিহিতার পথে পরিচালিত করি। জাতির স্বার্থে আমাদের এ সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।”

এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংলাপের সম্ভাবনার বিষয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। অনেকের মতে, মির্জা ফখরুলের বক্তব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বচ্ছতা ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত