ফখরুলের হুঁশিয়ারি: রোডম্যাপে দেরি মানে সরকারের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে

নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণায় দীর্ঘসূত্রতা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত একটি সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনমনে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ উত্তরণ, ন্যায়বিচার এবং কাঠামোগত সংস্কারের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে, বাংলাদেশ সময় ৬টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। বর্তমানে তিনি চোখের অস্ত্রোপচারের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। যদিও চিকিৎসার কারণে বিমান ভ্রমণ তার জন্য আপাতত নিষিদ্ধ, তিনি জানিয়েছেন যে দেশের রাজনীতির সর্বশেষ পরিস্থিতি তিনি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং গঠনমূলক ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছেন।
তার বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, “চোখের অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে আমি আরও কয়েক দিন ভ্রমণ করতে পারছি না। তবে আমি বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছি এবং ইতিবাচক ফলাফলের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
মির্জা ফখরুল গত সোমবার (২ জুন) অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠকের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে দেখে আমি আনন্দিত। এটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের সম্ভাব্য পথ তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আশা করি, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুধু গণতন্ত্রই নয়, গত ১৫ বছরে যেসব মানুষ অন্যায়ভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য সুবিচার এবং একটি কার্যকর রাজনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ন্যায়বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার এই তিনটি বিষয় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং একে অপরের পরিপূরক। এগুলোকে একসঙ্গে বাস্তবায়ন না করলে একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।”
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বার্তাটি তিনি দিতে চেয়েছেন, সেটি হলো নির্বাচনি রোডম্যাপের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয়তা। তার ভাষায়, “আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রজ্ঞা ও সামর্থ্য আছে। তবে এ প্রক্রিয়ার সূচনা হওয়া উচিত দ্রুত একটি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে। রোডম্যাপ ঘোষণায় যত দেরি হবে, জাতি তত বেশি উদ্বিগ্ন ও সংশয়ে পড়বে এবং তখন সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”
তার এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা গুরুত্ব সহকারে দেখছেন, কারণ এটি শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ নয়, বরং বৃহত্তর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে ইঙ্গিত দেয়।
বিবৃতির শেষাংশে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক যাত্রা প্রসঙ্গে একটি আশাবাদী বার্তা দিয়ে বলেন, “আসুন, আমরা সবাই মিলে এই পরিবর্তনের মুহূর্তকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাই এবং বাংলাদেশকে প্রকৃত গণতন্ত্র ও কার্যকর জবাবদিহিতার পথে পরিচালিত করি। জাতির স্বার্থে আমাদের এ সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।”
এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংলাপের সম্ভাবনার বিষয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। অনেকের মতে, মির্জা ফখরুলের বক্তব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বচ্ছতা ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে পারে।
দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থায় আস্থা প্রকাশ করলেন জামায়াতের আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হওয়ার পথে হাঁটেননি। শুধু অর্থ সাশ্রয় করার জন্য নয়, বরং দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস থেকেই তিনি দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। তাঁর মতে, এটি বিদেশমুখী মানসিকতার বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ এবং দেশের সক্ষমতার প্রতি আস্থা জাগ্রত করার একটি উদাহরণ।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এক মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ক্যাম্পটি অনুষ্ঠিত হয় মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ইব্রাহীমপুর শাখায়। এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব চিকিৎসা-অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, তিনি দেশে থেকে সফলভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এতে তিনি সন্তুষ্ট। এজন্য সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, দেশের চিকিৎসকরা আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং বিদেশমুখী চিকিৎসার প্রবণতা কমে আসবে।
জামায়াতের তরুণ ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, যদি দলের কেউ নির্বাচিত হয় তবে তারা যেন স্বল্পমূল্যে ফ্ল্যাট কিংবা ট্যাক্সবিহীন গাড়ির মতো ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ না করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা জনসেবার জন্য দায়িত্ব নেবো, কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থে লিপ্ত হবো না।”
তিনি আরও দাবি করেন, অতীতে জামায়াতের দুজন মন্ত্রী জনগণের কল্যাণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, যা দলীয় নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন। শফিকুর রহমান বলেন, “আল্লাহ সবকিছু দেখেন। তাঁকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়। যারা এই বিশ্বাসে জীবন পরিচালনা করে, তারা জনগণের সম্পদে কখনো হাত দিতে পারে না।”
-রাফসান
“তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ভোলাহাট রামেশ্বর স্কুল মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সারাদিন জুড়েই ভোলাহাটে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাউসারুল ইসলাম রঞ্জু এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সেলিম।
আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ। তিনি বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে হলে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের সবাইকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বেই এই ঐক্য সম্ভব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি সব ধরনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি খিজির হায়াত মোল্লা, সহসভাপতি মো. সারওয়ারদ্দী, সহসভাপতি জামাল উদ্দিন মেম্বার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, এবং প্রচার সম্পাদক মো. শামিম আকতার। তাঁরা সবাই দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সরকারের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশাত্মবোধক গান, নাটক ও অন্যান্য পরিবেশনা দর্শকদের মাতিয়ে তোলে। নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ একসঙ্গে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন, যা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
অনুষ্ঠান ঘিরে ভোলাহাট উপজেলায় এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিএনপি নেতারা আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের কর্মসূচি দলকে সংগঠিত করবে, কর্মীদের মনোবল বাড়াবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জনগণের সমর্থন আদায়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
-রাফসান
কুমিল্লা-৪ আসনে বিএনপির কোন্দল, হাসনাত আবদুল্লাহ কি চমক দেখাবেন?
কুমিল্লার দেবিদ্বার আসনে বিএনপির রাজনীতি এখন ত্রিমুখী বিভক্তির মধ্যে দিয়ে চলছে। একসময় দলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে বর্তমানে তিনটি আলাদা গ্রুপ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ বিভাজনকে কেন্দ্র করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি বিএনপি ধরে রাখতে পারবে কিনা, নাকি নবীন রাজনৈতিক দল এনসিপি অঘটন ঘটাবে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে।
নবীন শক্তি হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছেন। শুধু সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডই নয়, এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রমও তিনি নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করছেন। ফলে স্থানীয়ভাবে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে এবং বিএনপির বিভক্ত রাজনীতিকে পুঁজি করে হাসনাত কতটা সফল হতে পারেন, তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, জামায়াত ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সহিদও নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সক্রিয় উপস্থিতি নির্বাচনের সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির ভেতরে তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ঘিরে তিন ভাগে বিভক্ত রাজনীতি চলছে। সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সী এবং সাবেক ছাত্রনেতা এমএ আউয়াল খান এই তিনটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে মঞ্জু ও তারেকের গ্রুপকে তুলনামূলকভাবে বেশি শক্তিশালী মনে করা হচ্ছে। প্রতিটি গ্রুপ আলাদা শোডাউন করছে, লোকসমাগম ঘটিয়ে নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণের চেষ্টা করছে এবং মনোনয়ন পেতে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার কৌশল নিচ্ছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির এই ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব এনসিপির হাসনাত আবদুল্লাহর জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। তিনি কোনো নেতিবাচক মন্তব্য বা রাজনৈতিক উসকানিতে না জড়িয়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করছেন। পাশাপাশি জনগণকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলছেন। এ কারণেই অনেকে মনে করছেন, বিএনপির বিভক্তি যদি অব্যাহত থাকে, তবে হাসনাত আবদুল্লাহ আসন্ন নির্বাচনে চমক দেখাতে পারেন।
তবে স্থানীয়রা মনে করেন, দেবিদ্বার বরাবরই বিএনপির শক্ত ঘাঁটি। এখানে ধানের শীষ প্রতীককে মানুষ আবেগের সঙ্গে দেখেন। স্থানীয় ভোটারদের মতে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা যদি বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন, তবে ভোটের মাঠে বিএনপি আবারও বিজয়ী হতে পারে।
ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর ছেলে ও কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রেজবীউল আহসান মুন্সী বলেছেন, “আমার বাবার হাত ধরে এই এলাকায় বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের পরিবারের নেতৃত্বে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন ঐক্যবদ্ধ আছে।” অপরদিকে, এএফএম তারেক মুন্সী বলেন, “আমি দলের জন্য কাজ করছি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার জন্য কাজ করব। ধানের শীষ প্রতীক যাকে দেওয়া হবে, দেবিদ্বারে তিনিই বিজয়ী হবেন।”
এদিকে, নবীন সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ ইতিমধ্যেই এলাকায় আলোচনায় উঠে এসেছেন। ’২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সামনের সারির এ নেতা মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব বৈঠকে তিনি বলেন, “কোনো প্রার্থী যেন জনগণকে ধোঁকা দিতে না পারে, সেজন্য আমরা মানুষকে সচেতন করছি। এনসিপি গুণগত পরিবর্তনের রাজনীতি চায়। আগামী নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে, তিনিই সংসদ সদস্য হবেন।”
-রাফসান
তারাকান্দায় বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ উপলক্ষে উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তারাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মালেক আর্মি। র্যালিটি উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে রূপ নেয়। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন এবং দলীয় স্লোগানে পরিবেশ মুখরিত হয়ে ওঠে।
পরে আয়োজিত সমাবেশে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। তারা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তাৎপর্য তুলে ধরে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন তালুকদার। তিনি ফুলপুর-তারাকান্দা আসন (ময়মনসিংহ-২, আসন নং ১৪৬) থেকে আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবেও পরিচিত। তার উপস্থিতি নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস আরও বাড়িয়ে তোলে।
এ সময় উপজেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তারা ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
-শরিফুল
নূর শুরু, নুর দিয়ে শেষ হবে না: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের ওপর হামলার বিচার না হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, “ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে নিজেদের গলার রশিটার যত্ন নিতে হবে। মাথায় রাখবেন—নুর শুরু, নুর দিয়ে শেষ হবে না।”
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত নূরকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।
হামলার বিচার না হলে পরিণতি ভয়াবহ
ফুয়াদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সব ধরনের চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগের সময়কার গুম, খুন ও হত্যার বিচার না হওয়ার যে সংস্কৃতি ছিল, এখনো একই অবস্থা চলছে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “যদি দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হয়, তবে আপনাদের অনেক উপদেষ্টার নাম ইতোমধ্যেই অ্যাসাসিনেশন প্ল্যানের তালিকায় আছে। তাদের লাশও কয়েক দিন পর পড়বে। তখন বিচার করার মতো মানুষও থাকবে না।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত সপ্তাহে যৌথবাহিনী ও পুলিশ নির্মমভাবে নূরের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় নূর গুরুতর অসুস্থ। তার নাকের হাড় ভেঙে যাওয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হচ্ছে এবং তিনি ঘুমাতে পারছেন না। রক্ত পরিষ্কার করতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন, যার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানও গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানান ফুয়াদ।
ফুয়াদ বলেন, “যৌথবাহিনী ও পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। কোমরের হাড় ডিসপ্লেস হয়ে যাওয়ায় সে হাঁটতে পারছে না। তার পা ও কোমরে গুরুতর চোট লেগেছে এবং দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হবে।”
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার ক্ষোভহামলার এক সপ্তাহ পার হলেও কোনো অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবি পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, “যারা কমান্ড দিয়েছে—সিনিয়র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, মেজর জেনারেল—তাদের কাউকেই সাসপেন্ড করা হয়নি। সেনাবাহিনীতে এখনো 'আয়না ঘরের' সেই ক্রিমিনাল নেটওয়ার্ক আছে। তাদের অনেকে জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরের আত্মীয় হয়ে সুবিধা নিচ্ছে।”
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং বিদেশে পাঠানোর কথা বলছে, কিন্তু প্রকৃত কাজ করছে না। “২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী পুলিশ সদস্য ও যৌথবাহিনীর সদস্যদের স্ট্যান্ড রিলিজ করা উচিত ছিল,” মন্তব্য করে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে “সম্পূর্ণ অযোগ্য, অপদার্থ ও ইউজলেস” হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার মতে, “তারা প্রতিদিন গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে অন্যায় ও বেইমানি করছে।”
হামলাকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ দাবি
ফুয়াদ অভিযোগ করেন, নূরের ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, বরং একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে খবর পাচ্ছি, এস আলমের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে হাইপ্রোফাইল অ্যাসাসিনেশনের পরিকল্পনা হয়েছে। এর সঙ্গে 'র', আওয়ামী লীগ ও দিল্লিভিত্তিক শেখ হাসিনা কাজ করছে।” তিনি আরও দাবি করেন, বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার নামও সেই তালিকায় আছে। দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, তাদেরও টার্গেট করা হচ্ছে বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন।
জাতীয় পার্টিকে নিয়ে অভিযোগ
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা একা মিলে গত ১৬ বছরে দিল্লির আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হতো না। এ কাজে জাতীয় পার্টিই ছিল মূল হাতিয়ার।”
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং কিভাবে জাতীয় পার্টিকে দিয়ে নির্বাচন করিয়েছিলেন। এরপর ২০১৮ বা ২০২৪ সালের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি জড়িত ছিল।
জিএম কাদের ও তার দলের ভূমিকা নিয়ে ফুয়াদ বলেন, “জিএম কাদের আপাদমস্তক ভারতকেন্দ্রিক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি তার দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাকিব রহমানকে কোনো নোটিশ ছাড়া সরিয়ে দেওয়া হয়। জিএম কাদের নিজেই বলেছেন, এটি ভারতের হাইকমিশনের নির্দেশে করা হয়েছে। একটি দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদককে যদি ভারতের নির্দেশে বরখাস্ত করা হয়, সেই দল বাংলাদেশের হতে পারে না। বরং সেটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।”
তিনি দাবি করেন, আশির দশক থেকে জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে কাজ করছে। এরশাদ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করেছে। তাই জাতীয় পার্টিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলা যায় না। তিনি মনে করেন, যারা বাংলাদেশপন্থী নয়, তাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে বা নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো অধিকার থাকা উচিত নয়।
জনগণ না চাইলে পিআর থেকে সরে আসবে জামায়াত: মিয়া গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, যদি জনগণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি না চায়, তাহলে তার দলও জনগণের সেই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানাবে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
'জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি' শীর্ষক এই সেমিনারটির আয়োজন করে এগ্রিকালচারিস্টস্ ফোরাম অব বাংলাদেশ (এএফবি)।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির পক্ষে জামায়াতের অবস্থান
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যেসব দল বেশিরভাগ ভোটার এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের কথা না শুনে কাদের কথায় পিআর পদ্ধতি দেওয়া হচ্ছে না, তা পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, "আমরা বলেছি, গণভোট দিন। গণভোটে যদি জনগণ পিআর পদ্ধতি চায়, তাহলে সব দলকে তা মানতে হবে। আর যদি জনগণ বলে পিআর লাগবে না, তাহলে আমরাও (জামায়াত) সেটাকে শ্রদ্ধা করি।"
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তারা এখনো সংশয়ে আছেন। তিনি বলেন, "সরকার গতকাল (বুধবার) আমাদের কাছে একটি খসড়া চেয়েছে যে, এর আইনি পথ দেখান। গতকাল রাতেই আমরা মিটিং করে একটি ড্রাফট তৈরি করেছি। আমরা সবসময় সরকারকে সহযোগিতা করতে রাজি আছি, আমরা কোনো সংকট চাই না।"
পিআর পদ্ধতির ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে কালো টাকা এবং পেশিশক্তির ব্যবহার কমে যাবে। এতে সংসদে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং সংসদ আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি আরও বলেন, যে দল ১% ভোটও পাবে, তারা তিনটি আসন পাওয়ার সুযোগ পাবে। এটি ছোট দলগুলোর জন্যও পার্লামেন্টে আসার সুযোগ তৈরি করবে। যারা একটি অংশগ্রহণমূলক সংসদ চান না এবং একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান, তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, "আমরা অবশ্যই নির্বাচনে যাব, তবে তার আগে পিআর-এর দাবি পূরণ করে ইনশাআল্লাহ আমরা নির্বাচনে যাব। এই দাবি আমাদের চলতেই থাকবে। আমাদের দাবি মানতে হবে, তারপরে আমরা নির্বাচনে যাব। সবাইকে বাদ দিয়ে যদি এককভাবে নির্বাচন করতে চান, তাহলে দেশের মানুষ আর তা হতে দেবে না।" তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, "একাই নির্বাচন করবেন, ওই চিন্তা করে আর ঘুম নষ্ট করার দরকার নেই।"
অন্য দলগুলোর প্রতি জামায়াতের প্রতিক্রিয়া
অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, বহু কষ্টের বিনিময়ে জনগণ দেশকে সংস্কারের সুযোগ পেয়েছে। কোনো দলীয় সরকার এলে এই সংস্কারের সুযোগ আর থাকবে না। তিনি বলেন, "ইতিমধ্যে একটি দলের স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেছেন, 'আপনারা যত সংস্কার আইনকানুন বদলান, আমরা ক্ষমতায় এলে সব মুছে দেব।'" এই মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "যাওয়ার আগেই যদি মুছে দেন, তাহলে ক্ষমতায় গেলে কী করবেন?"
সাবেক সেনা কর্মকর্তার মন্তব্য
সেমিনারে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির বলেন, "সশস্ত্র বাহিনীকে ভিপি নূরকে মারতে দেখছি। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কাউকে আটক করতে দেখিনি।" তিনি আরও বলেন, "সশস্ত্র বাহিনীর এই সমালোচনার কারণে তাদের জুলাই যোদ্ধাদের দিকে নজর দেওয়া উচিত। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আজ পর্যন্ত হয়নি। যে সেটআপ হাসিনা করেছেন, সেটাই আছে। তারা দ্রুত নির্বাচন চান যেন পলাতকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে পারেন।"
মূল প্রবন্ধের সারসংক্ষেপ
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই সনদ জনগণের ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ দলিল। এটি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আইনি ভিত্তি তৈরি করেছে, তবে এর অস্পষ্টতা এবং রাজনৈতিক ভিত্তির কারণে বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে ফ্রান্সের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
রাত ৯টায় খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাক্ষাতের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির হাতেই বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র সুরক্ষিত: আবু নাসের
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকার কথা তুলে ধরে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র বিএনপির হাতেই নিরাপদ। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বরিশালে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে নগরীর টাউন হলে আয়োজিত দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এরশাদের সময়ে সেই গণতন্ত্র আবারও হত্যা করা হয়, যেখান থেকে বেগম খালেদা জিয়া দেশকে উদ্ধার করে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে দেশের গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৭ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল হিসেবেই এ বছরের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। তার মতে, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দেশে পুনরায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
আবু নাসের রহমাতুল্লাহ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘যতবার বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশজুড়ে শান্তি বিরাজ করেছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তা পেয়েছে। সুতরাং বিএনপির হাতেই দেশ থাকবে সুরক্ষিত ও নিরাপদ।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আকন কুদ্দুসুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যারা নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে আপস করে দল ভারী করার চেষ্টা করছে, তারা বিএনপির উপকারের বদলে ক্ষতি করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, এসব অপকর্ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। একই সঙ্গে তিনি আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চুর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন খান, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন এবং সদস্য নুরুল আমিনসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. রফিকুল ইসলাম সেলিম।
মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে না, আসমানে হয়: নিরাপত্তা নিয়ে মুখ খুললেন ওসমান হাদি
গণআন্দোলনের মুখপত্র ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার অনুসারীরা। হাদি নিজেও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টায় তিনি এই পোস্টটি দেন।
ফেসবুকে হাদি লিখেছেন, “মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে নয়, আসমানে হয়।” তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহল থেকে তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এর জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে দখলদারদের আগ্রাসন যতদিন থাকবে, ততদিন এই মাটির সন্তানেরা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। তার মতে, “আমাদেরকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই লড়াই কোনোদিন বন্ধ হবে না।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ওরা এক আবরারকে হত্যা করলে ফের লক্ষ আবরার জন্মায় এই জমিনে।” হাদি আরও বলেন যে তিনি চলে গেলেও তার সন্তান এবং তার পরবর্তী প্রজন্ম এই লড়াই চালিয়ে যাবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “অধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে আমরা আমাদের কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দিব না।” তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে মাথা নত না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
পোস্টের শেষে তিনি বলেন, “মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা তো শাহাদাতের জন্যই মায়ের উদর হতে পৃথিবীতে পা রেখেছি।” তিনি তার পোস্টে আল্লাহর কাছে সাহস ও ইনসাফের জন্য প্রার্থনা করেন এবং ঘোষণা দেন, “লড়াই চলবে। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।”
/আশিক
পাঠকের মতামত:
- চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
- স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল বহিষ্কার, মালিবাগ হামলায় মামলা
- দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থায় আস্থা প্রকাশ করলেন জামায়াতের আমির
- হোয়াটসঅ্যাপে আসছে ইনস্টাগ্রাম ধাঁচের ‘ক্লোজ ফ্রেন্ড’ ফিচার
- দান করার যত ফজিলত
- কাবুলের পথে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ত্রাণবাহী বিমান
- বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হারে অস্থিরতা
- নেপালের কঠোর পদক্ষেপ ফেসবুক ও টুইটারের বিরুদ্ধে
- “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
- শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে সরকারের নতুন উদ্যোগ
- কুমিল্লা-৪ আসনে বিএনপির কোন্দল, হাসনাত আবদুল্লাহ কি চমক দেখাবেন?
- “মামার বাড়ির আবদার নয়”-রাকসু নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ উপাচার্যের
- তারাকান্দায় বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
- অনূর্ধ্ব-১৭ দল গঠনে চলছে বাছাই প্রক্রিয়া
- উদ্যোক্তাদের জন্য ৫৪ লাখ টাকার পুরস্কার
- ৭ সেপ্টেম্বর আকাশে চোখ রাখুন: দেখা মিলবে দীর্ঘস্থায়ী চন্দ্রগ্রহণের
- মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণেই ইহকাল ও পরকালের মুক্তি: তারেক রহমান
- নূর শুরু, নুর দিয়ে শেষ হবে না: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
- জনগণ না চাইলে পিআর থেকে সরে আসবে জামায়াত: মিয়া গোলাম পরওয়ার
- ডিম, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচের দামে লাগাম টানতে নতুন সুপারিশ
- জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ
- দেশে ফিরতে চাইলে তারেক রহমানকে সহায়তা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ডিএসই’র বাজার প্রতিবেদন: এক নজরে আজকের লেনদেন
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা
- পোস্টারবিহীন নির্বাচন, প্রচারে নতুন বিধান যুক্ত করল ইসি
- গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে ফ্রান্সের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই
- টিকিট বিক্রির তিন ধাপ, ফিফা জানাল বিস্তারিত পরিকল্পনা
- ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ
- নাচই বদলে দিল ধনশ্রীর জীবন
- জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি
- বিএনপির হাতেই বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র সুরক্ষিত: আবু নাসের
- মা-কন্যার অনন্য বন্ধন: সুস্মিতা সেনের পোস্টে মুগ্ধ ভক্তরা
- মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে না, আসমানে হয়: নিরাপত্তা নিয়ে মুখ খুললেন ওসমান হাদি
- অ্যাশেজে খেলতে ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত প্যাট কামিন্স
- বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
- আওয়ামী লীগের পদ ছাড়লেন ইউপি সদস্য, জানালেন তিনি সব সময় বিএনপির ‘একনিষ্ঠ কর্মী’
- দুইবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়নের স্বপ্নযাত্রা আবার শুরু
- ফজলুর রহমানকে ঘিরে নতুন বিতর্ক, ছাত্রদল নেতার বহিষ্কারের দাবি
- অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯
- ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার
- ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা
- একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
- হঠাৎ স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন! মোনালি ঠাকুরের সংসারে ভাঙনের সুর?
- কোরআনের আলোকে পরকাল: অবিশ্বাসীদের শেষ পরিণতি
- জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন
- পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি
- অভিষেক রাঙাতে পারলেন না কিউবা: এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুরুতেই হোঁচট খেলো বাংলাদেশ
- মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ
- যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
- জ্ঞান ফিরেছে নুরুল হক নুরের
- "জাতীয় নাগরিক পার্টি আসলে ইউনূসের দল, জামায়াতই দেশ চালাচ্ছে"
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ভ্যালু, ভলিউম ও ট্রেডে শীর্ষ ২০ কোম্পানি
- ডিএসই–৩০ সূচকের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর লেনদেনের চিত্র
- জুলাই সনদ নিয়ে মতভেদ চরমে, আজ তিন দলের সঙ্গে বৈঠক অন্তর্বর্তী সরকারের
- ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- শেয়ারবাজারে ফিরল স্বস্তি, শীর্ষে থাকা কোম্পানির তালিকা প্রকাশ
- ০১ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- সংসদ ভবনে আগুন দিল বিক্ষোভকারীরা
- নিহত গাজা সাংবাদিকের চিঠি পড়ে কেঁদে ফেললেন জাতিসংঘে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত
- ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০২৪ সালের নগদ লভ্যাংশ বিতরণ সম্পন্ন
- ডা. তাহেরের বিতর্কিত মন্তব্যে চিকিৎসক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া
- নোয়াখালীর সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুরের অবৈধ সম্পদের পাহাড়
- ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর আইন: অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিলেই কারাদণ্ড