৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা আজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০২ ০৮:২০:৫৩
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা আজ

আজ সোমবার (২ জুন) ঘোষিত হতে যাচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য জাতীয় বাজেট। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে পূর্ব-ধারণকৃত ভাষণে এই বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তাদের প্রথম বাজেট।

এই বাজেটে মূল ফোকাস থাকবে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, এবং আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ওপর। বাজেট ঘোষণার প্রেক্ষাপট এমন এক সময়ে, যখন দেশের অর্থনীতি দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের পথে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের মোট আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব বাজেট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির প্রায় ৩.৬২ শতাংশ।

বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশি ঋণ, অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা বেশি।

ব্যয় কাঠামো অনুযায়ী, বাজেটের প্রায় ৫৭ শতাংশ যাবে বেতন-ভাতা, প্রণোদনা, ভর্তুকি এবং ঋণ পরিশোধে। শুধু সরকারি বেতন-ভাতার খাতে বরাদ্দ হতে পারে ৮২ হাজার কোটি টাকা। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যাও বাড়ানোর কথা রয়েছে। বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন মহার্ঘ ভাতা চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি এবং ব্যাংক খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকছে। একই সঙ্গে কৃষি, সার ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে।

নতুন বাজেটে কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো, কর পরিপালন বাড়ানো, স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা, এবং সহজ ভ্যাট ব্যবস্থাপনার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে। সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট আইনে কিছু বিধান সরলীকরণ হতে পারে, যাতে করবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হয় এবং ব্যবসা পরিচালনার খরচ হ্রাস পায়।

এবারের বাজেটে মেগা প্রকল্প হিসেবে নতুন কিছু না থাকলেও মাতারবাড়ি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকবে। এটি জাপানের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং স্বল্পমেয়াদি উচ্চ-সুদের ঋণ এড়িয়ে চলা হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, বাজেট পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।

এই বাজেট ব্যবসা-বান্ধব হবে এবং এতে করনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করা হবে, যা বিনিয়োগ, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বাজেট ঘোষণার পর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের অর্থনৈতিক কৌশল সম্পর্কে ধারণা পাবেন, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত