যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত করল ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৮ ১০:৪৯:১৭
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত করল ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় নতুন সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। সাম্প্রতিক এক কূটনৈতিক স্মারকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোকে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনা ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ বহাল থাকবে বলে স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়াও, নতুন নির্দেশনার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থী ও বৈদেশিক বিনিময় কর্মসূচির আওতাধীন ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নজরদারি জোরদার করা হবে। এর ফলে দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে বাড়তি প্রশাসনিক চাপ, দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রক্রিয়াগত জটিলতা সৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ক টানাপোড়েনে রয়েছে। ট্রাম্প এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত বামপন্থী বলে অভিযুক্ত করছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষ ও বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর প্রশাসন ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য শত শত মিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থগিত করেছে এবং হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। তবে এসব পদক্ষেপের অনেকগুলো আদালতে স্থগিত করা হয়েছে।

সিবিএস নিউজে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবারের স্মারকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোকে জানানো হয়েছে যে, যেসব শিক্ষার্থী এখনো সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাননি, তাঁদের নাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ক্যালেন্ডার থেকে মুছে ফেলতে হবে। তবে যাঁদের সাক্ষাৎকারের তারিখ ইতোমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে, তাঁরা যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের ব্যাপারে স্মারকে বলা হয়েছে, এই যাচাইয়ের পরিধি আরও বিস্তৃত করা হবে এবং প্রত্যেক আবেদনকারীর প্রোফাইল খুঁটিয়ে দেখা হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “কে আমাদের দেশে প্রবেশ করছে, সেটি যাচাই করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই প্রক্রিয়া আরও কার্যকর ও কঠোরভাবে চালিয়ে যাব।”

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি-র উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে থাকে, কারণ বিদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণত মার্কিন শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি ফি প্রদান করেন। ফলে এই নতুন ভিসা নীতির ফলে হার্ভার্ড, এমআইটি, ইয়েলসহ অন্যান্য শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এরইমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। গত সপ্তাহে হার্ভার্ডের বিদেশি ছাত্র ভর্তি ও বিদেশি গবেষক আমন্ত্রণের অনুমোদন বাতিল করে হোয়াইট হাউস, যদিও একজন ফেডারেল বিচারক ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে রাজনীতিকরণ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে হোয়াইট হাউস মনে করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনপন্থী কার্যকলাপের আড়ালে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াতে দিচ্ছে।

এই জটিল পরিস্থিতিতে যারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য ভিসা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা ও আর্থিক সক্ষমতাও বড় ধাক্কা খেতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত