মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার: চট্টগ্রামে দুই খুনের রহস্য উন্মোচন

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১০ ১১:০৬:২৫
মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার: চট্টগ্রামে দুই খুনের রহস্য উন্মোচন

সত্য নিউজ: চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় গত ৩০ মার্চ রাতে ঘটে যাওয়া জোড়া খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে পাঁচটি মূল কারণ উঠে এসেছে। নিহতরা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধারণা করছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পোশাক কারখানা থেকে ঝুট কেনাবেচার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের দলের শক্তি প্রদর্শন, সাজ্জাদের ‘রাজত্ব’ টিকিয়ে রাখা এবং সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগিতা করার বিষয়গুলো প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করেছে।

ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, সাজ্জাদ হোসেনের অন্যতম সহযোগী মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এই তথ্য জানতে পারে। মেহেদী হাসানকে ৩ মে নোয়াখালীর হাতিয়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি এবং ১৩টি মামলা রয়েছে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন জানান, বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৫০টি শিল্পকারখানা রয়েছে, এবং এখানকার পোশাক কারখানাগুলো থেকে ঝুট কেনাবেচা নিয়ে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের এবং তার প্রতিপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। সাজ্জাদ ও তার অনুসারীরা এই ঝুটের বাজার নিজেদের কবজায় রাখতে চাইছেন। এই দ্বন্দ্বেরই ফলস্বরূপ মেহেদী হাসান প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে সরোয়ার হোসেনের দুই সহযোগী বখতিয়ার হোসেন এবং মো. আবদুল্লাহকে হত্যা করেন।

ঘটনার সময়, সরোয়ার হোসেনও ওই গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন, তবে তিনি বেঁচে যান। নিহতরা সরোয়ারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং তাদের পরিবার জানিয়েছে, খুনের পেছনে বড় কারণ হলো, সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়া এবং প্রতিপক্ষের ক্ষতি করা। এই হামলায় সরোয়ারকে লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা ছিল।

ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে সজীব ও হাসান জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্যে পুরো পরিকল্পনা ও খুনের বিস্তারিত বর্ণনা উঠে এসেছে। তারা পুলিশকে জানায় যে, ঘটনার আগে বায়েজিদ বোস্তামী কয়লার ঘর এলাকায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।

মেহেদী হাসানকে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি পিস্তল হাতে, কালো গেঞ্জি ও সাদা কেডস পরে ছিলেন এবং সিসিটিভি ক্যামেরায় তাকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদ, যিনি বিদেশে পলাতক, ছোট সাজ্জাদকে অস্ত্র সরবরাহ করেছেন এবং তার মাধ্যমে সন্ত্রাসী দল পরিচালনা করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরোধী অভিযান চালানোর পর পুলিশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি। তবে, সাজ্জাদ এবং তার সহযোগীদের অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

চট্টগ্রামের এই সন্ত্রাসী কিলিংয়ের ঘটনায় পুলিশ আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এবং এই জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের পুরো সিন্ডিকেট ধরার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত