“আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না: ওবায়দুল কাদের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৬ ১৬:৪১:৩৪
“আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না: ওবায়দুল কাদের

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল বলেই জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “আমি খুবই ভাগ্যবান। সেদিন আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না। মৃত্যু থেকে অনেক কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম।”

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এই প্রথম কোনো গণমাধ্যমে মুখ খুললেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, আমি যে বাসাটায় ছিলাম, তারা সে বাসাতেও হামলা করে। তারা জানত না, যে সেখানে আমি আছি। আমার বাসা তারা ‘লুটপাট’ করেছে, কিন্তু যে বাসায় আমি গিয়ে আশ্রয় নিলাম, সেখানে হামলা করবে আমি ভাবতে পারিনি। দেখলাম অনেক লোকজন ঢুকে পড়েছে। তারা ভাঙচুর ও ‘লুটপাট’ করতে থাকে। আমি আমার স্ত্রীসহ বাথরুমে লুকিয়ে ছিলাম। অনেকক্ষণ ছিলাম, প্রায় ৫ ঘণ্টা। তারপর একটা পর্যায়ে তারা বাথরুমে ভেতরেও কমোড-বেসিন এগুলো ‘লুটপাট’ করেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার স্ত্রী তখন বাথরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বারবার বলছিলেন যে আমি অসুস্থ, যাতে করে তাদের প্রবেশ ঠেকানো যায়। কিন্তু তারা জোরপূর্বক ভেতরে ঢোকার হুমকি দিতে থাকে, বাথরুমে কী আছে তা লুট করতে চায়। এই অবস্থায় আমার স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞাসা করে, কী করব? আমি বললাম, দরজা খুলে দাও।

এরপর ৭-৮ জন যুবক ভেতরে ঢোকে, এবং তারা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আচরণ করতে থাকে। হঠাৎ তারা আমার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘নেত্রী তো চলে গেলেন, আপনি যাননি কেন?’ আমি তখন কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু এর মাঝেই তারা আচরণ পাল্টে ফেলে। কেউ একজন বলে, ‘আপনার ছবি তুলব’, তারপর শুরু হয় ছবি তোলা, কেউ কেউ সেলফিও নেয়। ধারণা করি, এদের মধ্যে অনেকেই আমাকে চিনতো।

তিনি জানান, ঠিক কী কারণে প্রথমে তাদের মধ্যে এত আক্রমণাত্মক মনোভাব ছিল, আর কেন হঠাৎ করে সেই আচরণ শীতল হয়ে গেল- তা তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। আচমকাই তারা ঠান্ডা মাথায় কথা বলা শুরু করে। তাদের মধ্যেই একটা গ্রুপ তখন চাইছিল তাকে রাস্তায় নামিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে, আবার কেউ কেউ চেয়েছিল জনতার হাতে তুলে দিতে। এরপর তারা তাকে একটি শার্ট, লাল পতাকাসংবলিত ব্যাজ এবং মুখে কালো মাস্ক পরিয়ে সংসদ এলাকা থেকে গণভবন অভিমুখী বড় রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। হঠাৎ কোথা থেকে একটি খালি ট্যাক্সি বা ইজি বাইক এসে হাজির হয়- সেই মুহূর্তে রাস্তায় কোনো গাড়ি ছিল না। তিনি মনে করেন, এটি হয়তো তার ভাগ্যের বিষয় ছিল চেকপোস্টে তারা বলে, ‘চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’ এভাবেই তারা আমাদের অনেক দূরের এক জায়গায় নামিয়ে দেয়।”

কাদের বলেন, “এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত বিষয়। ভাবতেও পারিনি যারা কয়েক মিনিট আগে আমাকে লুকিয়ে থাকা বাথরুমে ঢুকে পড়েছিল, তারাই আমাকে রক্ষা করবে। এটা একেবারে পরম সৌভাগ্যের বিষয়।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমার মনে হয়েছে, এটা ছিল লুটপাটের লুম্পেন স্টাইলের অভ্যুত্থান। সেখানে রাজনৈতিক চেতনার চেয়ে বিশৃঙ্খলা ও দখল-পাল্টার সংস্কৃতিই বেশি ছিল।”

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত