খাদ্যে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্বের একমাত্র দেশ যেটি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৬ ১০:১৯:১৭
খাদ্যে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্বের একমাত্র দেশ যেটি

বর্তমান বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার অনিশ্চয়তার মধ্যে গায়ানা নজির স্থাপন করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP)-এর একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গায়ানাই বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেটি নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্যে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ‘নেচার ফুড’-এ প্রকাশিত গবেষণাটি চালিয়েছেন জার্মানির গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা ১৮৬টি দেশের খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা বিশ্লেষণ করেন ‘লাইভওয়েল ডায়েট’ মানদণ্ড অনুযায়ী।

গবেষণায় বলা হয়েছে, গায়ানা সাতটি মূল খাদ্য উপাদান—ফলমূল, সবজি, মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং শর্করা—সব ক্ষেত্রেই নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে দেশটির ৮ লাখের কিছু বেশি জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এই দিক থেকে গায়ানার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।

দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত গায়ানার উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে সুরিনাম, দক্ষিণে ব্রাজিল এবং পশ্চিমে ভেনেজুয়েলা। উর্বর ভূমি, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দেশটির কৃষিকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত।

গবেষণা অনুযায়ী, চীন ও ভিয়েতনাম সাতটি খাদ্য উপাদানের মধ্যে ছয়টিতে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে গায়ানার মতো সব উপাদানে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণতা কেউই অর্জন করতে পারেনি।

বিশ্বের মাত্র প্রতি সাতটি দেশের মধ্যে একটি দেশ পাঁচটির বেশি খাদ্য উপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদনে ৬৫% দেশ সক্ষম হলেও সবজি, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও শর্করার উৎপাদনে স্পষ্ট ঘাটতি রয়েছে বিশ্বব্যাপী।

গবেষণায় দেখা গেছে, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ম্যাকাও, কাতার ও ইয়েমেন—এই দেশগুলো একটিও খাদ্য উপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, আরব উপদ্বীপের দেশ এবং নিম্ন আয়ের রাষ্ট্রগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল।

গবেষণার প্রধান লেখক ড. জোনাস স্টেহল সতর্ক করে বলেন, “স্বয়ংসম্পূর্ণতা না থাকলেই যে তা খারাপ, তা নয়। তবে যুদ্ধ, মহামারি কিংবা পরিবহন সংকটের মতো বৈশ্বিক ধাক্কায় খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলো মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রমাণ করে দিয়েছে, একটি টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য সরবরাহব্যবস্থা গঠন এখন জরুরি। পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক প্রবণতা ও বৈদেশিক নির্ভরতা কমানোর কৌশলও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ