পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার গোপনে আধুনিকীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৬ ০৯:৫০:০০
পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার গোপনে আধুনিকীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

পাকিস্তান গোপনে তাদের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারকে আধুনিকীকরণে ব্যস্ত রয়েছে—এমনটাই দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)। ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। ডিআইএ-এর তথ্যমতে, ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রাপ্ত গোয়েন্দা উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনা হয়েছে।

ডিআইএ আরও জানিয়েছে, পাকিস্তান শুধু পরমাণু অস্ত্রের প্রযুক্তি উন্নয়নেই থেমে নেই, বরং তাদের পারমাণবিক কমান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেমের নিরাপত্তাও জোরদার করছে। এই কর্মকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, পাকিস্তান বর্তমানে সীমান্তবর্তী দেশগুলোর মধ্যে ভারতকেই সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে এবং সেই অনুসারে সামরিক ও পরমাণু প্রস্তুতিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান তাদের সামরিক ও পরমাণু শক্তিকে ভারতের তুলনায় আধুনিক এবং উন্নত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থাকে বিশ্লেষকরা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ‘নতুন পরমাণু প্রতিযোগিতার সূচনা’ হিসেবে দেখছেন, যা সামগ্রিক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার-এর ২০২৫ সালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের হাতে রয়েছে আনুমানিক ১৩০ থেকে ১৪০টি পরমাণু অস্ত্র। অন্যদিকে পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০টি অস্ত্র, অর্থাৎ সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তান সামান্য এগিয়ে আছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অস্ত্রের প্রযুক্তিগত মান, সরবরাহব্যবস্থা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দক্ষতা। এই তিনটি ক্ষেত্রেই দুই দেশই জোরালোভাবে প্রতিযোগিতা করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মাধ্যমে ভরাট হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের পরমাণু আধুনিকীকরণ কর্মসূচি শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তাকেই অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিতে এটি একটি গভীর উদ্বেগের কারণ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ