শাহবাগ অবরোধ চলছে, হাসনাতের আহ্বান—মহাসড়কে নয়

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১০ ০৯:৩১:৩২
শাহবাগ অবরোধ চলছে, হাসনাতের আহ্বান—মহাসড়কে নয়

সত্য নিউজ:আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে শনিবার সকালেও চলছে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার বিকেল থেকে অবরুদ্ধ রয়েছে শাহবাগ চত্বর। বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানগুলোকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করার সরকারি প্রজ্ঞাপন না দেওয়া পর্যন্ত তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। একই দাবিতে আজ শনিবার বেলা ৩টায় শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সারা দেশের ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের’ ঐতিহাসিক স্থানগুলোতেও গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে দেশজুড়ে সহিংসতা এড়াতে অন্যান্য মহাসড়কে অবরোধ না দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, “ঢাকার শাহবাগ ছাড়া ঢাকা বা সারাদেশের হাইওয়েগুলোতে ব্লকেড দিবেন না। জেলাগুলোতে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত করুন, সমাবেশ করুন। কিন্তু ব্লকেড না। ব্লকেড খুলে দিন।”

এনসিপির নেতারা বলছেন, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা 'দ্বিতীয় অভ্যুত্থান পর্ব' শুরু করছেন। শুক্রবার রাতভর শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা, সেখানে স্লোগান ও মিছিল চলে। আহত ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর অংশগ্রহণকারীরাও শাহবাগে জড়ো হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হুইলচেয়ারে বা স্যালাইন নিয়ে অবস্থান করছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে তিনটি মূল দাবি জানান:

  1. আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে;

  2. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলীয় বিচারের বিধান সংযোজন করতে হবে;

  3. জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।

এই দাবিগুলোর পক্ষে ইতোমধ্যেই এনসিপির দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের নেতৃবৃন্দ সামাজিক মাধ্যমে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

আন্দোলনের উদ্যোক্তারা বলেছেন, সরকার দাবি না মানলে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশজুড়ে বৃহত্তর ঢাকামুখী মার্চের ঘোষণা আসবে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি শাহবাগ এলাকায় বাড়ানো হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চালকদের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দ্রুত সমাধান না হলে জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

এই আন্দোলন কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা এখন সময়ই বলবে। তবে শাহবাগের অবরোধ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন মোড় হিসেবে ইতোমধ্যেই চিহ্নিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ