প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
উপদেষ্টাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক অস্থিরতায় উত্তাল দেশের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক গভীর তাৎপর্য বহন করছে।
শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বৈঠকটি শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত রয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের ১৯ সদস্য যারা দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অন্যতম মুখ্য ব্যক্তিত্ব।
বৈঠকটি শুরু হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে। সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া একনেক সভায় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষ হয় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে, এরপরই উপদেষ্টারা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বৈঠকে শুধুমাত্র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিবসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা একনেক সভা শেষে এনইসি কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান, যাতে উপদেষ্টাদের মধ্যে নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন আলোচনা সম্ভব হয়।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বৈঠককে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নির্বাচনী রোডম্যাপ, জাতীয় সংলাপ, সংবিধানিক দায়বদ্ধতা এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা এসব ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, একই দিনে বিকেলে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এক পৃথক সংলাপে বসার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠক ও বিকেলের সংলাপ মিলিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে রাজনৈতিক সমঝোতার একটি সম্ভাব্য পথনকশা তৈরি হতে পারে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এই বৈঠকগুলো একটি নির্ণায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কতটা বাস্তববাদী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত আসে এই রুদ্ধদ্বার আলোচনার টেবিল থেকে।
রাতে ফ্লাইট চালুর চেষ্টা চলছে: কার্গো ভিলেজের আগুন পরিদর্শনে উপদেষ্টা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনের ঘটনায় রাতের মধ্যেই ফ্লাইট চালুর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
জরুরি অগ্রাধিকার
বেসামরিক বিমান পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “এয়ারপোর্টের ফ্লাইট এই মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে। এখানে শুধু আমদানি কার্গোতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে, রপ্তানি কার্গো নিরাপদ আছে।”
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে তাদের কাছে সবচেয়ে জরুরি হলো: ১. বিমানবন্দরকে চালু করা এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা। ২. ক্ষয়ক্ষতির নির্ণয় করা। ৩. একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করে দুর্ঘটনার কারণ বের করা।
উপদেষ্টা জানান, “আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি।” ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে। পাশাপাশি সিভিল এভিয়েশন, সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ও বিজিবি'র সদস্যরাও কাজ করছেন।
কঠিন পরিণতির মুখোমুখি শেখ হাসিনা
চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে হতে পারে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এমনটাই লেখা হয়েছে। প্রতিবেদনে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের খালা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডের দাবি ও অভিযোগ
দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হলো:
তিনি রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার করার নির্দেশ দেন, যার ফলে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন।
প্রসিকিউশনের দাবি: প্রসিকিউশন দাবি করেছে, শেখ হাসিনার আদেশেই দমন অভিযানের সময় নিহতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং আহতদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
সাবেক আইজিপি’র স্বীকারোক্তি: সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে বলেছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশেই তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর হেলিকপ্টার ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিলেন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন।
চিফ প্রসিকিউটরের মন্তব্য: প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, “শেখ হাসিনা ১,৪০০ বার মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য। যেহেতু তা মানবিকভাবে সম্ভব নয়, তাই আমরা অন্তত একটি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি।” তিনি বলেন, “তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।”
বিচার ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
পরোয়ানা জারি: আদালত ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে তারা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
রায়ের সময়সীমা: রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবীরা তাদের যুক্তি উপস্থাপন শুরু করবেন। চূড়ান্ত রায় নভেম্বরের মধ্যভাগে ঘোষণা করা হতে পারে।
ক্ষতিপূরণ: অভিযোগ প্রমাণিত হলে শেখ হাসিনার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে, যার অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।
রাজনৈতিক অবস্থা: বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা, যেখানে শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি এখন ফেভারিট হিসেবে বিবেচিত। তবে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার নাকি রাজনৈতিক ভারসাম্যের পরীক্ষা?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শুক্রবারের দিনটি চিহ্নিত হলো এক নতুন অধ্যায়ে। রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ নানা রাজনৈতিক দলের নেতা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। বিকেল পাঁচটা পাঁচ মিনিটে শুরু হওয়া স্বাক্ষরপর্বে দুইজন করে রাজনৈতিক প্রতিনিধি সই করেন, পরে স্বাক্ষর করেন ড. ইউনূস নিজে। এই ঘটনাকে “নতুন বাংলাদেশের সূচনা” বলে আখ্যায়িত করেন প্রধান উপদেষ্টা, বলেন—“এই সনদ শুধু একটি দলিল নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।”
তবে সনদ স্বাক্ষরের আগে সংসদ ভবন এলাকায় সংঘর্ষ ও বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুরে “জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা” ব্যানারে শত শত মানুষ তিন দফা দাবিতে অবস্থান নেয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল জুলাই যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সংবিধানে সনদ অন্তর্ভুক্ত করা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইটপাটকেল, টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটে, আহত হন বহু মানুষ। সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, এরপর দেরিতে হলেও অনুষ্ঠান শুরু হয়।
ঐতিহাসিক এই আয়োজনে অংশ নেয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর বিতর্ক চলছে। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ হোসেন বলেন, “জুলাই সনদ এখনো পূর্ণাঙ্গ জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন নয়।” এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, তিন দফা দাবি না মানায় তারা আপাতত স্বাক্ষর করেননি, তবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার দ্বার খোলা রাখছেন। তাদের দাবি—সনদের আইনি বৈধতা নিশ্চিত করা, ড্রাফট আদেশের প্রাপ্তি ও গণভোটের মাধ্যমে সনদের অনুমোদন।
আখতার হোসেন বলেন, “দাবি পূরণ হলে আমরা স্বাক্ষর করবো, না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।” সরকার ও ঐকমত্য কমিশন এনসিপিকে অন্তর্ভুক্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও দলটি শেষ পর্যন্ত দূরত্ব বজায় রাখে, যা রাজনৈতিক ঐক্যের পূর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিক্ষোভের মুখে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন শুক্রবার দুপুরে জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফা সংশোধনের ঘোষণা দেয়। নতুন দফায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, “২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান কালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান, আহতদের পুনর্বাসন ও শহীদ পরিবারকে আইনি দায়মুক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।”
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ক্ষমা চেয়ে বলেন, “এই সংশোধনের মাধ্যমে আমরা শহীদ ও আহতদের প্রতি রাষ্ট্রের দায় স্বীকার করেছি।” তবে কিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এই সংশোধন রাজনৈতিক চাপের ফল এবং ভবিষ্যতে এর আইনি প্রয়োগই প্রকৃত পরীক্ষার জায়গা।
বিএনপিমহাসচিবমির্জাফখরুল ইসলাম আলমগীর এই ঐতিহাসিক সনদ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জুলাই সনদ কেবল একটি চুক্তি নয়, এটি জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।” এনসিপির অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় তারা কোথাও ভুল বুঝছে। এই সনদ কারও দলীয় অর্জন নয়, এটি সবার।” ফখরুল আরও যোগ করেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এই সনদের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায় শুরু হলো—যেখানে প্রতিহিংসা নয়, সংলাপ ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা হবে।” তার মতে, এই সনদের বাস্তবায়নই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ সত্যিই ‘নতুন পথে’ হাঁটতে পারছে কিনা।
অন্যদিকে সনদে স্বাক্ষর করলেও জামায়াতে ইসলামী এর আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখেই আমরা স্বাক্ষর করেছি। তবে বিলম্ব বা প্রতারণা জাতির সঙ্গে গাদ্দারি হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, নতুন সংকটের নামে কোনো হেজিমনি যেন সৃষ্টি না হয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এই শর্তযুক্ত অবস্থান একদিকে সরকারের প্রতি আস্থার ইঙ্গিত, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দরকষাকষির সম্ভাবনাও জিইয়ে রাখে।
স্বাক্ষরপর্ব শেষে বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম।” তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন উৎসবমুখর করার আহ্বান জানান। ড. ইউনূস বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে যদি নির্বাচনও হয়, তবে তা এমনভাবে হতে হবে যাতে জনগণ বিশ্বাস করতে পারে—দেশ বদলেছে।”তিনি প্রশ্ন রাখেন, “নিজেদের নির্বাচন নিজেরাই করবো, তাতে পুলিশ এসে কেন ধাক্কাধাক্কি করবে?” প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য অনেকের কাছে ছিল নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত—একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।
এই সনদে স্বাক্ষর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক মোড় নির্দেশ করে—যেখানে দীর্ঘ দমননীতির পর প্রথমবারের মতো বিভিন্ন মতাদর্শের দল এক ছাতার নিচে এসেছে। কিন্তু এনসিপির অনুপস্থিতি, দফা সংশোধনের চাপ এবং মাঠপর্যায়ের অস্থিরতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, জাতীয় ঐক্যের এই পথ এখনো মসৃণ নয়। অনেকের মতে, জুলাই জাতীয় সনদ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর—অথবা আরেকটি রাজনৈতিক পরীক্ষার সূচনা মাত্র।
ইইউ রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা: রাজনৈতিক ঐকমত্যে বাংলাদেশের অগ্রগতি
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সংস্কারের পথে ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে “গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। তাঁর মতে, এটি বাংলাদেশের আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এক তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে রাষ্ট্রদূত মিলার লিখেছেন, “জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা মৌলিক সংস্কার ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তি নির্ধারণ করেছে।” তিনি আরও বলেন, “দেশের রাজনৈতিক রূপান্তরের এ মুহূর্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক যাত্রার প্রতি ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকারের প্রতিফলন।”
গত শুক্রবার স্বাক্ষরিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’–এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৫টি রাজনৈতিক দল, যার মধ্যে বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে, একটি অভিন্ন সংস্কার-রূপরেখায় সম্মত হয়। এই উদ্যোগকে অনেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল এক ঐক্য প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি এই প্রক্রিয়ায় ইইউর অব্যাহত আগ্রহ ও সম্পৃক্ততার প্রতীক। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সুশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইইউ বারবার জোর দিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে আগ্রহী। এই লক্ষ্যে তারা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রয়োজনে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানোর সম্ভাবনাও বিবেচনা করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ‘জুলাই সনদ’ শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার ও সহযোগিতার নতুন দিগন্তই খুলে দেয়নি, বরং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক ইতিবাচক বার্তাও দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন এই প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করে তুলতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
-আহসান হাবিব
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তীব্র উত্তেজনা
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশি বাধা অতিক্রম করে দেওয়াল টপকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ এবং অতিথিদের জন্য বরাদ্দ করা চেয়ারে বসে পড়া ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ ধাওয়া দিয়ে সংসদ ভবন এলাকা থেকে বের করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও টিয়ার শেল
ভাঙচুর: বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধারা সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেট ভেঙে ফেলেন। তারা বাইরে বের হয়ে বেশ কয়েকটি ট্রাক ও বাসে ভাঙচুর করেন, যার মধ্যে দুটি ছিল পুলিশের গাড়ি।
সংঘর্ষ: গাড়ি ভাঙচুর করার সময় পুলিশ সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে এবং পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি ও নিরাপত্তা
‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঘিরে সকাল থেকে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও আহত বীর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে সকাল থেকে জুলাই যোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছেন।
নিরাপত্তা: বর্তমানে সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেটে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা সম্পূর্ণ এলাকা ঘিরে ফেলেছেন। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য।
জুলাই হত্যা মামলার আসামির মুক্তি: আদালত অঙ্গনে তোলপাড়
জুলাই হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি এবং বিতর্কিত স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী ও ধনকুবের দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। দ্রুত তার জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পর কঠোর গোপনীয়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দিলীপের এমন আকস্মিক কারামুক্তি নিয়ে আদালত অঙ্গনে তোলপাড় চলছে।
আইনজীবীদের অভিযোগ—রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া তার এত দ্রুত কারামুক্তি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ, বর্তমানে যেকোনো বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ক্লিয়ারেন্স লাগে। অথচ দিলীপের ক্ষেত্রে অজ্ঞাত কারণে কোনো ধরনের গোয়েন্দা রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।
গোপনীয়তা ও নেপথ্যের অভিযোগ
কারামুক্তি: গুলশান থানার একটি হত্যা মামলায় ২৭ সেপ্টেম্বর জামিন পান দিলীপ। এর তিন দিনের মাথায় ৩০ সেপ্টেম্বর কঠোর গোপনীয়তায় তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যান।
নীরবতা: কারা কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা ছিলেন নীরব।
পলাতক: সূত্র জানায়, কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরপরই দিলীপ গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি সীমান্ত পার হয়ে ওপারে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
একটি সূত্র যুগান্তর সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, দিলীপের মুক্তির নেপথ্যে রাষ্ট্রপক্ষের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা কলকাঠি নাড়েন, যার সঙ্গে দিলীপের ঘনিষ্ঠতা পুরোনো।
দিলীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রেক্ষাপট
রাজনৈতিক পরিচয়: দিলীপ আগরওয়ালা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য উপকমিটির নেতা ছিলেন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে এমপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি বিএনপিতে ভিড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি।
দুদকের মামলা: গত ৮ অক্টোবর বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দিলীপ ও তার স্ত্রী সবিতা আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
কারাজীবন: গ্রেফতারের পর বছরখানেক ধরে বন্দি থাকলেও, কারাজীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি ছিলেন হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে, যেখানে তিনি আরাম-আয়েশের মধ্যে ছিলেন।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
দিলীপ কুমার আগরওয়ালার কারামুক্তির ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “যে কাউকে জামিন দেওয়া আদালতের এখতিয়ার। তবে তার চূড়ান্ত কারামুক্তির বিষয়টি আমার জানা নেই।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। যথানিয়মে বেইলবন্ড কারাগারে পৌঁছানোর পর তিনি মুক্ত হন। এক্ষেত্রে অনিয়মের কিছু নেই।” তিনি জানান, দিলীপের পাসপোর্ট জব্দ থাকায় তার বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তিনি দেশেই আছেন।
এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিস্মিত করেছে, দায় এড়াতে পারে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল সবাইকে বিস্মিত করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, “এত দিন ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শিক্ষার প্রকৃত সংকট আড়াল করা হয়েছে। এই ফলের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না।”
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অসন্তুষ্টির কারণ
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবারের ফলকে সরকার আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছে। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের জন্য এবার ‘প্রাপ্য নম্বরই’ দেওয়া হয়েছে।
সংকটের বিষয়: বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির জানান, এবারের এইচএসসির ফলে বাস্তব চিত্র সামনে এসেছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন পড়ার টেবিল থেকে দূরে সরে গেছে।
ফেলের হার: বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, ইংরেজিতে পাসের হার ৭৭ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে।
শিক্ষক আন্দোলন ও সংস্কার
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সরকার শিক্ষকদের শতাংশভিত্তিক বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। এছাড়া সাত কলেজের বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর এইচএসসিতে পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন, “কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জুলাই সনদের গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনাদের দীর্ঘদিনের আলোচনার ফল হলো ‘জুলাই সনদ’। আপনারা অনেক ভেবে-চিন্তে মতামত দিয়ে জুলাই সনদকে একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে এনেছেন। এর মাধ্যমে আপনারা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন।”
তিনি আরও জানান, ‘জুলাই সনদ’-এর কপি সব দলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তিনি বলেন:
“আমি যতদিন এখানে আছি, আপনাদের তৈরি এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলো সংরক্ষণ ও প্রচারের কাজ করব। প্রত্যেকের কাছে কপি পৌঁছে দেব, যাতে আপনারা বুঝতে পারেন—কোন কোন বিষয়ে আপনারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। এই দলিলটি সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান, ‘জুলাই সনদ’-এ যেসব সিদ্ধান্ত এসেছে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবন এবং রাজনৈতিক চর্চায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংস্কারের পটভূমি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে ৬টি পৃথক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়—সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এই কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। তবে সনদে উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পরে কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ পেশ করবে।
সিইসির সঙ্গে অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর সাক্ষাৎ: নির্বাচনী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও বহুসাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী ড. অ্যান অ্যালি।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চলমান কার্যক্রম, প্রস্তুতি এবং প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “এটি ছিল মূলত একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ। তাঁরা আমাদের নির্বাচন আয়োজন, প্রস্তুতি এবং সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি নিজেদের অভিজ্ঞতাও ভাগ করেছেন।”
আলোচনায় নির্বাচনী সহযোগিতা ও প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়েও মতবিনিময় হয়। সচিব বলেন, “আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), তথ্যের অপব্যবহার, ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বিষয়ে কথা বলেছি। অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, তারাও এসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।”
অস্ট্রেলীয় মন্ত্রী আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কমিশনকে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার অনুরোধ জানান, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী ও স্বচ্ছ করা যায়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
-নাজমুল হাসান
পাঠকের মতামত:
- ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- কার্গো ভিলেজে আগুন: ক্ষতির আশঙ্কা বিলিয়ন ডলার
- ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক হুমকি দিলেন পাক সেনাপ্রধান
- সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডগুলো জননিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি: তারেক রহমান
- পায়ে সামান্য ব্যথা বা ঘা: নীরব ঘাতক ‘রক্তনালির ব্লকের’ সংকেত নয়তো?
- রাতে ফ্লাইট চালুর চেষ্টা চলছে: কার্গো ভিলেজের আগুন পরিদর্শনে উপদেষ্টা
- রিশাদ ম্যাজিক স্পিনে উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
- ঢাকার বিমানবন্দর অচল: ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে কার্গো ভিলেজ, ৫ ঘণ্টায়ও নেভেনি
- ৪০-৪৫ দিনের রেণুবিন্দু: বিজ্ঞান বনাম কোরআন, গর্ভের শিশুর নিয়তি কখন লেখা হয়?
- চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় সাফল্য,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে কৃত্রিম কিডনি
- সিইসি: ‘বিগত দিনের মতো নির্বাচন হবে না, হবে সম্পূর্ণ আলাদা’
- বিলাসবহুল জীবন থেকে জনকল্যাণ: দুবাইয়ের রাজকন্যা শেখ মাহরার যত কীর্তি
- সিন্ধু সভ্যতা থেকে পরমাণু পাকিস্তান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ভূরাজনীতি, ধর্ম ও টিকে থাকার পূর্ণাঙ্গ আখ্যান
- রক্ত দেওয়ার সময় আমরা, ক্ষমতার সময় অন্যেরা: হাসনাত আবদুল্লাহ
- শখের পোশাক বারবার ধোয়ার পরেও উজ্জ্বল থাকবে যে ৮ উপায়ে
- টেলিগ্রাম নিয়ে ভয়াবহ তথ্য! আপনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কি ঝুঁকিতে?
- জুলাই সনদ সইয়ের মতো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগোই: মির্জা ফখরুল
- অভিভাবকতন্ত্রের প্রলোভন: জেনারেল ভূঁইয়ার বয়ান ও গণতন্ত্রের ঘড়ি থামানোর বিপদ
- আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা: বাড়ছে আগুনের তীব্রতা,সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিমান
- যুদ্ধবিরতির ভয়াবহ লঙ্ঘন: গাজায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারের ১১ সদস্য নিহত
- বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা? মুক্তি দেবে এই ৮টি ঘরোয়া টোটকা
- মাইগ্রেনের সমস্যা: যে ৬টি অভ্যাস আজই আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে
- বয়স বাড়ার ছাপ: ৫টি অভ্যাস যা আপনার ত্বক ও চুলকে রাখবে তরতাজা
- ৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছেন ফেল করা শিক্ষার্থীরা
- শাহজালাল বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে আগুন
- ছবিতে ব্যাঙ না ঘোড়া? আপনি কেমন মানুষ—এই ছবিই দেবে উত্তর!
- আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭ জেলায় বজ্রসহ ঝড়ের পূর্বাভাস
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিক্ষোভ: ৩ দফা দাবিতে হাইকোর্টের সামনে সড়ক অবরোধ
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে শুরুতেই ধাক্কা,ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ
- ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলার তীব্র নিন্দা এনসিপি’র
- হতাশা কাটিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ
- ‘এখনই অস্ত্র ত্যাগ নয়’: গাজা পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে অনড় হামাস
- এনসিপি’র স্বাক্ষর না করা বিচক্ষণতার অভাব: ফখরুল
- যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় গোলাবর্ষণ
- কঠিন পরিণতির মুখোমুখি শেখ হাসিনা
- জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার নাকি রাজনৈতিক ভারসাম্যের পরীক্ষা?
- ইইউ রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা: রাজনৈতিক ঐকমত্যে বাংলাদেশের অগ্রগতি
- শীতকাল আসছে: সুস্থ থাকতে এখনই বর্জন করুন এই ৫টি অভ্যাস
- হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক: যে ৪টি মূল কারণে প্রায় ৯৯% ঝুঁকি বাড়ে
- খালি পেটে এলাচের পানি: যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- রাকসুতে নতুন নেতৃত্ব:নবনির্বাচিত জিএস ফিলিস্তিনের নির্যাতিতদের প্রতি উৎসর্গ করলেন বিজয়
- পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে হাঙ্গেরিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত
- ‘জুলাই সনদ’-এর ৫ নম্বর দফা সংশোধনের প্রস্তাব দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর জাতীয় ঐক্য নয়, জাতির সঙ্গে প্রতারণা: নাহিদ ইসলাম
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তীব্র উত্তেজনা
- ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- বন্ধুরূপী শত্রু: যে ৫টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার বন্ধুত্বের বন্ধন বিপদজনক
- পায়ের পাতায় লুকানো নীরব ইঙ্গিত: কিডনি বিকলের এই সংকেত অবহেলা করলেই বিপদ
- খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষির উন্নয়নে তারেক রহমানের ৬ দফা পরিকল্পনা
- চট্টগ্রাম সিইপিজেডের কারখানায় আগুনে ১০৫০ শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করল অ্যালার্ম!
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- ৪ বার সংশোধন হলো ট্রাইব্যুনাল আইন, যুক্ত হলো ‘নির্বাচনী অযোগ্যতা’ ধারা
- হামাস-ইসরায়েল চুক্তি কার্যকর: ধ্বংসস্তূপের মাঝে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
- আজ বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াই, টিভিতে নয় ২৫ টাকায় দেখুন অনলাইনে
- ১৪ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শি জিনপিং: সমাজে প্রকৃত সমতা চাইলে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে