নির্বাচনের আগে জোটের নতুন সমীকরণ: কোন পথে হাঁটছে বিএনপি-জামায়াত?

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট গঠনের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবার আলাদা পথেই হাঁটছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। উভয় দলই নিজেদের জন্য পৃথক জোট গঠনের পাশাপাশি আসন সমঝোতার জন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে। এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বামপন্থি দলগুলোরও জোট গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির জোট গঠনের কৌশল
আগামী নির্বাচনে কোনো দল এককভাবে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। বিএনপি তাদের যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোকে নিয়েই একটি বড় জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে। যুগান্তরের খবর অনুযায়ী, বিএনপি ডান, বাম ও ইসলামী দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনতে চায়। এর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) এবং ১২ দলীয় জোটসহ প্রায় বিশটি দলের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ কয়েকটি ইসলামি দলেরও বিএনপির সঙ্গে জোটে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “নির্বাচনের শিডিউল যখন ঘোষণা হবে, তখন আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করব। জোটের প্রয়োজন হলে জোট হবে। এখন সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা কঠিন।”
জামায়াত ও অন্যান্য দলের তৎপরতা
অন্যদিকে, জামায়াতও জোট ও আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে জামায়াতসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি এবং জাগপাসহ বেশ কয়েকটি ইসলামি দল অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করছে। তবে জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করছে, তা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই স্পষ্ট হবে বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “ইসলামপন্থি দলগুলো যাতে এক জায়গায় থাকতে পারে, সেই চেষ্টা করছি। আলাপ-আলোচনা চলছে।”
নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনা
এনসিপিও জোট গঠনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। দলটি উদারপন্থি বলে পরিচিত কয়েকটি দলের সঙ্গে জোট গঠন করতে পারে। এছাড়া, বাম ও ইসলামি দলগুলোর আরও দুটি পৃথক জোট গঠনের তৎপরতা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার নির্বাচনকে ঘিরে প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় বিএনপি এখন অপ্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থানে রয়েছে। তবে জোট গঠন বা সমঝোতার কৌশল সঠিকভাবে নিতে না পারলে নেতৃত্বে থাকা দল প্রত্যাশিত ফল নাও পেতে পারে।
কালো শকুনের হাতে দেশ, সতর্ক করলেন সারজিস আলম
দেশব্যাপী আবারও চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজি, লুটপাট, দখলদারি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, "আগের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আবারও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত হওয়া শুরু করেছে।"
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওই ইউনিয়নের এনসিপি কমিটি ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, "আগের যা সিস্টেম, ওই সিস্টেম আবার নতুন করে চালু হওয়া শুরু করেছে।" তিনি আরও বলেন, "কেউ কেউ সুযোগ পেয়ে তার চেয়ে খারাপ অবস্থা তৈরি করা শুরু করেছে।"
তিনি উল্লেখ করেন, গত বছরের আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি—এই ছয় মাস তারা কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। কিন্তু যখন দেখলেন, নতুন করে যদি রাজনীতির হাল না ধরা হয়, তাহলে ঘুরেফিরে আবার "কালো শকুনের হাতে বাংলাদেশ চলে যাবে", তখন তারা রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
এনসিপি নেতা বলেন, "একটা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরে আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।" তিনি আরও বলেন, যারা জীবন দিল, রক্ত দিল, তাদের এই দায়বদ্ধতাটা এনসিপি কর্মীদের জীবন শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পালন করতে হবে।
সারজিস আলম প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, "এই অপকর্মকারী যারা আছে, যেই দলের হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে।"
এ সময় পঞ্চগড় সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী নয়ন তানবীরুল বারীসহ এনসিপি এবং জাতীয় যুবশক্তির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
"বিএনপি নেতাদের হাতে হেনস্তার শিকার সালাউদ্দিন"
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শহীদ গাজী সালাউদ্দিন মৃত্যুর আগে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতে অপমানের শিকার হয়েছিলেন। তার এই ঘটনার মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নাহিদ ইসলাম মনে করেন, এই নিরাপত্তা সংকট শুধু কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় নয়, বরং এটি গোটা দেশের একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা, যেখানে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষগুলো এখনো প্রতিশোধ ও ভয়-ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় নিহত শহীদ সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এসময় নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের পাশে এনসিপি সবসময় থাকবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, শুধু তাদের দল নয়, বরং সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত এই শহীদ ও আহতদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ এই আন্দোলনের লড়াইয়ের ফলেই আজকের গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ছিল, কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এখনো আহতদের মৃত্যু ঘটছে, লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে, এবং শহীদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গাজী সালাউদ্দিনও ছিলেন সেই আহতদের একজন, যিনি শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন। নাহিদ ইসলাম সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেসব আহত যোদ্ধা এখনো কাতরাচ্ছেন, তাদের অবিলম্বে সর্বাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, “শুধু অল্প সময়ের চিকিৎসা নয়, তাদের এমন চিকিৎসা প্রয়োজন যা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে।”
নির্বাচনের প্রসঙ্গে এসে তিনি বলেন, “এখন যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তখন যেন আমরা আমাদের আহত ও শহীদ ভাইদের ভুলে না যাই।” তার মতে, তাদের প্রতি অবহেলা চলতে থাকলে সালাউদ্দিনের মতো আরও অনেক শহীদের নাম যুক্ত হবে তালিকায়। নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে আহত যোদ্ধাদের যে স্বাস্থ্যসুবিধার কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবে যথাযথভাবে কার্যকর নয় এবং এতে নানা অনিয়ম রয়েছে।
ভবিষ্যৎ নির্বাচনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং ৩০০টি আসনকেই লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে তিনি সম্মানের সঙ্গে জানান, গণতন্ত্র রক্ষায় খালেদা জিয়ার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, যে আসনগুলোতে তিনি প্রভাবশালী, সেখানে এনসিপি প্রার্থী দেবে না। বাকি আসনগুলোতে শাপলা কলি প্রতীকে তাদের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান করেছি, গডফাদারদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার সময় এখন। সমাজের সাধারণ, শিক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য মানুষদেরকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।” তার বক্তব্যে উঠে এসেছে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির আহ্বান, যেখানে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে যোগ্যতা, সততা ও মানুষের আস্থার ভিত্তিতে।
বক্তব্য শেষে নাহিদ ইসলাম গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, এবং জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি তুহিন খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে গাজী সালাউদ্দিন এক চোখের দৃষ্টি হারান এবং অপর চোখেও আংশিকভাবে অন্ধ হয়ে পড়েন। গলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তার শ্বাসনালিতেও জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘ ১৫ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু শুধু একটি পরিবার নয়, বরং পুরো জুলাই আন্দোলনের জন্য এক গভীর ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপি নেতারা।
-রফিক
১৫ নভেম্বরের মধ্যে এনসিপি’র প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা; এককভাবে ৩০০ আসনে লড়ার প্রস্তুতি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি ৩০০টি আসনে এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে জোটবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাকে তারা সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দেয়নি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত গাজী সালাহউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে এনসিপি'র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই তথ্য জানান।
নির্বাচনী জোটের প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, "সমঝোতা বা জোটের বিষয়টি কেবল আদর্শিক অবস্থান থেকে হতে পারে। জুলাই সনদে আমাদের যে সংস্কারের দাবিগুলো রয়েছে, কোনো দল যদি সেই দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে, তখনই আমরা জোটে যাওয়ার বিষয়ে ভাববো।"
তিনি বলেন, "আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য আমাদের।" তবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু আসনে তারা প্রার্থী দেবেন না, যেমনটা বেগম খালেদা জিয়ার আসনের ক্ষেত্রে কথা উঠেছে।
নাহিদ ইসলাম জানান, তাঁরা একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়তে চান। তিনি বলেন, "আমরা দেখি যাদের টাকা আছে, যাদের গডফাদারগিরি আছে, তারা নির্বাচনে দাঁড়ায়। আমরা এই সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই। আমরা গ্রহণযোগ্য মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, শিক্ষক, ইমাম, সামাজিক নেতৃবৃন্দদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।"
জুলাই আন্দোলনে নিহত গাজী সালাহউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নাহিদ ইসলাম তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, গাজী সালাহউদ্দিন আহত অবস্থায় গত ২৬ অক্টোবর মারা যান।
তিনি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, "এমন হাজারো জুলাই যোদ্ধা এখনো আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছে।" তিনি অভিযোগ করেন, আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ছিল, কিন্তু তারা তা করতে পারেনি—ফলে শহীদের সংখ্যা বাড়ছে।
নাহিদ ইসলাম সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করুন। অনেকের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। নির্বাচনি ব্যস্ততার মধ্যে যেন তাদের কথা আমরা না ভুলি।"
তিনি আরও বলেন, "পরবর্তী সরকার যেই আসুক, তাদের এই আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে। গাজী সালাহউদ্দিনের পরিবারের পাশে আমরা আছি, তবে রাষ্ট্র যেন তাদের দায়িত্ব নেয়—এটাই আমাদের দাবি।" তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মৃত্যুর কয়েকদিন আগে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতে গাজী সালাহউদ্দিন হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, এমন রাজনৈতিক চাপ জুলাই যোদ্ধাদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় চলছে, তাই সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে, কারণ তাদের লড়াইয়ের ফলেই জনগণ নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল আমিন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তামিম আহমেদ, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু এবং জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি তুহিন খান প্রমুখ।
আইনি লড়াইয়ে বড় মোড়: জিয়া অরফানেজ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে তাঁকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৯ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে, যা লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সর্বস্মতিক্রমে এই রায়টি দিয়েছিলেন।
বিদ্বেষমূলক মামলা ও খালাসের রায়
রায়ের পর ১৫ জানুয়ারি আপিল পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছিলেন, এই মামলার মধ্যে কোনো সারবত্তা ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, "ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে বলত, সেভাবে রায় হতো।" তবে আজকের রায়ে মনে হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।
তিনি জানান, আপিল বিভাগ রায়ে বলেছেন যে, আপিল মঞ্জুর (আপিল ইজ অ্যালাউ) করা হলো। একইসঙ্গে বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্ট বিভাগের যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আরও জানান, যারা আপিল করতে পারেননি, অর্থাৎ তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামি, তাদেরও আদালত খালাস দিয়েছেন। তিনি এই মামলাটিকে বিদ্বেষমূলক এবং প্রতিহিংসামূলক প্রসিকিউশন হিসেবে অভিহিত করেন, যা পুরো জিয়া পরিবার ও সারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসানও সে সময় রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মোট চারটি আপিল ছিল এবং সবগুলোই মঞ্জুর করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ এবং বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু আপিল বিভাগ পুরো মামলাটাকেই 'ম্যালিসাস প্রসিকিউশন' (বিদ্বেষপূর্ণ কার্যধারা) বলে অভিহিত করেছেন, তাই যারা আপিল করতে পারেননি—তারেক রহমান ও কামাল সিদ্দিকীসহ অন্যান্য আসামিরাও এ সুবিধা পেয়ে খালাস পেলেন।
মামলার প্রেক্ষাপট ও আপিল প্রক্রিয়া
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
তবে পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের করা আপিল খারিজ করেছিলেন আদালত। গত বছরের ১১ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে আপিলের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর খালেদা জিয়া আপিল করেন, যার চূড়ান্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ প্রকাশিত হলো।
আদালতে আপিলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভুঁইয়া ও মাকসুদ উল্লাহ। কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
জামায়াত আমিরের স্পষ্ট বার্তা ও দলের প্রস্তুতি
জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে যদি সময়মতো নির্বাচন না হয়, তবে তা নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তার মতে, ভোটহীন পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে, যা জনগণের জন্যও ক্ষতিকর।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই সমস্যা সমাধানের জন্য দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং সমর্থকদের একত্রিত হয়ে ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু ও সময়মতো নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি মনে করান, জনগণের ভোটের মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপকালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, দলের নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী জামায়াত গণভোটকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করে, এবং ভবিষ্যতেও এ নীতি অনুসরণ করবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরও জানান, জামায়াত কোনো রাজনৈতিক জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং ভবিষ্যতেও তা করার পরিকল্পনা নেই। তবে সমমনা বা অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা করার ক্ষেত্রে দল প্রস্তুত রয়েছে। তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, দল শুধুমাত্র জনগণের ভোটের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সময়মতো নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তৃতীয়বারের মতো জামায়াতের আমির নির্বাচিত হওয়ার পর, ডা. শফিকুর রহমান দুই দিনের সাংগঠনিক সফরের জন্য বুধবার সকালে সিলেটে পৌঁছান। বিমানবন্দরে দলীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। সফরের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে তিনি দলের সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা, স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক এবং নির্বাচনী কৌশল চূড়ান্ত করা উল্লেখ করেন।
জামায়াতের এই সফর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দেশের নির্বাচনী পরিবেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় নেতারা আশা করছেন, সফরের মাধ্যমে দলের অবস্থান জনগণ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে স্পষ্টভাবে জানানো সম্ভব হবে। এছাড়াও, এটি ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করবে।
-শরিফুল
এনসিপিকে যে কয়টি আসন দিতে পারে বিএনপি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি প্রাথমিকভাবে ২৩৭টি আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে তালিকায় কিছু আসন এখনও খালি রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্রদের নাম অনুপস্থিত থাকায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রায় ৬৩টি আসন জোট ও শরিকদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, বিএনপি যদি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করে, তবে তাদের জন্য প্রায় ১০টি আসন বরাদ্দ করতে পারে দলটি।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, খালি রাখা আসনগুলো সবকটিই জোটের জন্য সংরক্ষিত নয়। কিছু আসনে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী থাকার কারণে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। তবে শরিক দলগুলোর জন্য আসন বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বাধিক মূল্যায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন নেতারা। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, এবার বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা ধানের শীষ প্রতীক পাবেন না এবং তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চার-পাঁচজন নেতা ছাড়া বেশিরভাগ শরিক দলের নিজস্ব ভোটব্যাংক নেই। ফলে তাদের জয়ের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। এর ফলে অমীমাংসিত আসনগুলোতে বিএনপির অন্য প্রার্থী সুবিধা নিতে পারে।
বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে ৫০টির বেশি দল অংশগ্রহণ করেছে। এসব দলের প্রার্থী ও জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাইয়ের পর ২৫ থেকে ৩০টি আসন তাদের জন্য সংরক্ষিত হতে পারে। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি জোটে যুক্ত হলে প্রায় ১০টি আসন তাদের জন্য সংরক্ষিত হতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমাদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ৬৩টি আসন খালি রাখা হয়েছে। সব আসন জোটের জন্য রাখা হয়নি। কিছু আসনে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী থাকার কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। অমীমাংসিত আসনগুলো শিগগির চূড়ান্ত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। তারা কোন আসনে ভোটে অংশ নেবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে এবং দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
এনসিপির সঙ্গে জোট হলে প্রায় ১০টি আসন ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১, সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১, দক্ষিণের হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঢাকা-১৮, তাসনিম জারা ঢাকা-৯, সারোয়ার তুষার নরসিংদী-২, হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬, আদিবুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
-রাফসান
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নির্বাচনী পরিকল্পনা ফাঁস
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি বর্তমানে চারটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তার ভাষায়, এই চার ভাগের মধ্যে জি. এম. কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই অংশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই টাকা-পয়সার লেনদেনও সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বক্তব্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জি. এম. কাদেরের নেতৃত্বে তাদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি আসন রয়েছে, এবং তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে মিলে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, এই প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনও হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে নামতে পারছে না, অংশগ্রহণের পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। উপরন্তু, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য চাপ আসছে।”
তিনি বলেন, “আমরা মনে করছি নির্বাচন সহজ হবে, কিন্তু বাস্তবে এটি মোটেও সহজ নয়। তারেক রহমান বারবার বলেছেন, আপনারা নির্বাচনকে যতটা সহজ ভাবছেন, বাস্তবে সেটি ততটাই কঠিন। কারণ, এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে নানা ধরনের চাপ— পার্শ্ববর্তী দেশের প্রভাব, আওয়ামী লীগের চাপ, জাতীয় পার্টির প্রভাব এবং গোপন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চাপ।”
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “গতকাল রাতে আমাদের দলীয় এমপি প্রার্থীদের মনোনয়ন তালিকা ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য অনেক দল অনেক আগেই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমেছে। তারা কেউ কেউ তাবলিগ জামাতের নাম ব্যবহার করে নারী সদস্যদের দিয়েও ভোট চাইছে।”
নিজ দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিলেই হবে না, এখন ঘরে ঘরে যেতে হবে। জনগণের সঙ্গে কথা বলতে হবে, বুঝিয়ে বলতে হবে কেন ভোট দিতে হবে, কাকে ভোট দিতে হবে, এবং ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন আনাটা কেন জরুরি।”
ভোটের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন এমন এক অবস্থায় এসে পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট যেন অতীতের গল্প হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ভোট হয়েছে রাতে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন না হয়ে হয়েছে সিলেকশন। এর মাধ্যমে অনুপযুক্ত ব্যক্তিদের এমপি বানানো হয়েছে, ফলে পবিত্র সংসদ অপবিত্র হয়েছে।”
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।
-রাফসান
ক্ষমতায় গেলে জনগণ বুঝবে কত ধানে কত চাল, বিএনপিকে হুঁশিয়ারি ফয়জুল করীমের
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম মন্তব্য করেছেন যে, বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে তারা বিরোধী দলকে সহ্য করতে পারে না। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই তাদের নেতাকর্মীরা যে ধরনের আচরণ শুরু করে দিয়েছে, তাতে তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের জনগণ "কত ধানে কত চাল হয়" তা হারে হারে বুঝতে পারবে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে নরসিংদীর পলাশের বিএডিসি বাসস্ট্যান্ড মোড়ে উপজেলা ইসলামী আন্দোলন শাখার আয়োজিত এক গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগ
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "বিগত সময় যেসব দল ক্ষমতায় ছিল, তারা কেউ দেশের উন্নতি করেনি, করেছে লুটপাট আর দুর্নীতি।"
তিনি বিশেষ করে বিএনপির শাসনামলের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশ তিন-তিনবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
এই সময় তিনি দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী নির্বাচনে সবাইকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান।
গণ-সমাবেশে অন্যান্য বক্তব্য
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ ইঞ্জিনিয়ার মুহসীন আহমেদের সভাপতিত্বে এই গণ-সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আরিফ বিন মেহের উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা সেক্রেটারি রাকিবুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী শাকিল, পলাশ উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব সোলায়মান ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক ইকরাম হোসেনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
'জয় বাংলা' বলে মনোনয়ন হারালেন বিএনপি প্রার্থী কামাল জামান
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। যদিও বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন স্থগিতের কোনো কারণ উল্লেখ করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, 'জয় বাংলা' বলে স্লোগান দেওয়ার কারণেই তার মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আগে সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন, তখন মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের মনোনয়নপ্রার্থী হিসেবে কামাল জামান মোল্লার নামও ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে এই মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই কামাল জামান মোল্লার একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়। সেই পোস্টে থাকা এক ভিডিওতে দেখা যায়, কামাল জামান মোল্লা উপস্থিত লোকজনকে বলছেন, "আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, সবাই ভালো থাকবেন। তারেক রহমান জিন্দাবাদ, ম্যাডাম খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ, জয় বাংলা।" স্লোগানটি দেওয়ার পরই তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নিজের জিহ্বায় কামড় দেন, যা ছিল একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
এই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই তার মনোনয়ন স্থগিতের খবর এলো, যা রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি করেছে।
পাঠকের মতামত:
- মনোনয়ন ঘোষণার একদিন পরই হামলা; চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ
- ইতিহাসের একমাত্র অপরাজিত বীর খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ):তাঁর রণকৌশলে বদলে যায় পৃথিবীর মানচিত্র!
- গরু চোরাচালানকারী ধরতে গ্রেনেড: লালমনিরহাটে বিএসএফের কাণ্ডে উত্তেজনা
- মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ, নতুন তথ্য ফাঁস
- রাজনৈতিক এজেন্ডায় দুর্নীতি: জয়-পুতুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের গুরুতর মামলা
- গ্রেফতার হতে পারেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা
- হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন
- বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে ফিরবেন কি সাকিব আল হাসান
- লক্ষ্যপূরণ কঠিন: মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের ব্যয় এখন গ্রামের চেয়ে বেশি
- মাইলস্টোন বিমান বিধ্বস্ত: দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি দায়ী, জানালেন প্রেস সচিব
- কালো শকুনের হাতে দেশ, সতর্ক করলেন সারজিস আলম
- সিনেমার পর ক্রিকেট সাম্রাজ্য: বিপিএল-এর নতুন আসরে শাকিব খানের দলের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি
- আবহাওয়ার জরুরি বার্তা: দেশের চার অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস
- জাতীয় দলের নতুন ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল: জানালেন দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জের কথা
- সুষ্ঠু নির্বাচন হলেই স্থিতিশীল হবে দেশ: সেনাসদর থেকে বার্তা
- ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী গ্রামে সৌদি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- বুক ধড়ফড়ের নেপথ্যে পানিশূন্যতা: হৃদস্পন্দন দ্রুত হলে যা করবেন, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- শ্রীবরদীতে অবৈধভাবে মজুদ ১০৬ বস্তা সরকারি সার জব্দ
- পদত্যাগ করে রাজনীতিতে: অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান
- "বিএনপি নেতাদের হাতে হেনস্তার শিকার সালাউদ্দিন"
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এনসিপি’র প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা; এককভাবে ৩০০ আসনে লড়ার প্রস্তুতি
- জোহরান মামদানির জয়ে উচ্ছ্বাসে মাতলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
- জাকির নায়েকের সফর স্থগিত করলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- এদের সরাতে লাঠি হাতে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই: ডাকসু সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা
- আইনি লড়াইয়ে বড় মোড়: জিয়া অরফানেজ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- এবিবি ব্যাংক লিমিটেড এর কুপন পেমেন্ট ও রেকর্ড ডেট সম্পর্কিত ঘোষণা
- দেশের ছয় অঞ্চলে ঝড়ের সম্ভাবনা, নৌবন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত জারি
- APEXFOODS-এর Q1 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- জামায়াত আমিরের স্পষ্ট বার্তা ও দলের প্রস্তুতি
- মামদানির জয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিই ফেডারেল তহবিল বন্ধ করবেন এবার
- ইতিহাস সৃষ্টিকারী কে এই জোহরান মামদানি? যিনি প্রথম মুসলিম ও সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হতে চলেছেন
- উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ,যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা
- এনসিপিকে যে কয়টি আসন দিতে পারে বিএনপি
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নির্বাচনী পরিকল্পনা ফাঁস
- জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত
- যুদ্ধ ও মহানুভবতা: সুলতান সালাউদ্দিন যেভাবে জেরুজালেম জয় ও শত্রুর মন জিতেছিলেন
- দুই বন্ধুর ক্ষমতার লড়াইয়ে রক্তগঙ্গা সুদানে: লাশের গন্ধে ভারী বাতাস, দেড় কোটি মানুষ ঘরছাড়া
- বিচার বিভাগে বড় পরিবর্তন: ২৬৭ জনকে জেলা জজ পদে পদোন্নতি
- রোজ এক কোয়া কাঁচা রসুন: এক মাস পর শরীরে দেখা যায় ৪টি আশ্চর্য পরিবর্তন
- কারা পাবেন বিনা হিসাবে জান্নাত? হাদিসের আলোকে জানুন সৌভাগ্যবানদের বিশেষ গুণাবলী
- শততম টেস্টের হাতছানি মুশফিকের: আয়ারল্যান্ড সিরিজের দল ঘোষণা করল বিসিবি
- ক্ষমতায় গেলে জনগণ বুঝবে কত ধানে কত চাল, বিএনপিকে হুঁশিয়ারি ফয়জুল করীমের
- জুলাইয়ে হামলায় জড়িত ৪০৩ ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ নোটিশ দিল ঢাবি
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
- 'জয় বাংলা' বলে মনোনয়ন হারালেন বিএনপি প্রার্থী কামাল জামান
- খুলনার ৫টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড








