শেখ হাসিনা দুর্নীতি মামলা
শেখ হাসিনা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠার প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়েরকৃত তিনটি মামলায় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আসামিরা আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, পৃথক তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, অন্যটিতে শেখ হাসিনা ও জয়সহ ১৭ জন এবং তৃতীয়টিতে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত ২০ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই মামলাগুলো বিচার কার্যক্রমের জন্য বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাসহ রাজউকের একাধিক সাবেক সদস্য, পরিচালক ও উপপরিচালক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবংশেখ হাসিনার একান্ত সচিব সালাহউদ্দিন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, সরকারের শীর্ষ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কের ছয়টি প্লট নিজেদের নামে বরাদ্দ নেন, যদিও তারা সেই বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না।
মামলায় দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ৪০৯ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, বরাদ্দ পাওয়া ছয়টি প্লটের মধ্যে শেখ হাসিনা ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০০৯) ২০২২ সালের ৩ আগস্ট বরাদ্দ পান। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০১৫) ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর বরাদ্দ পান এবং নভেম্বরের ১০ তারিখে মালিকানা রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০১৭) একই বছরের ২ নভেম্বর বরাদ্দ পান।
এছাড়াও শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামেও ওই এলাকায় প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
/আশিক
বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল

শেখ তাইজুল ইসলাম
আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট অব বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত শত্রুতা, সম্পত্তি বিরোধ, পারিবারিক কলহ কিংবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রায়ই নিরপরাধ মানুষ মিথ্যা মামলার শিকার হন। মিথ্যা মামলা শুধু অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে না, বরং মানসিক চাপ, আর্থিক ক্ষতি এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় ভোগান্তির কারণ হয়। তবে আইন মিথ্যা মামলার শিকারদের জন্য প্রতিরক্ষা ও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রেখেছে। এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা, ধৈর্য এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।
প্রাথমিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
১. সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন:যদি আশঙ্কা থাকে যে আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতে পারে, তাহলে থানায় জিডি করুন। এটি ভবিষ্যতে প্রমাণ করবে যে আপনি আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছিলেন।
২. প্রমাণ সংরক্ষণ করুন:যে কোনো ঘটনা বা সম্পর্কিত বিষয়ে চ্যাট, ফোন কল রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ, লেনদেনের কাগজপত্র সংরক্ষণ করুন। এগুলো ভবিষ্যতে আপনার নির্দোষিতা প্রমাণ করতে সহায়ক হবে।
৩. বিশ্বাসযোগ্য আইনজীবীর পরামর্শ নিন:প্রাথমিক পর্যায়েই একজন দক্ষ আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করুন। এতে আপনার প্রতিরক্ষা কৌশল আগে থেকেই পরিকল্পিত হবে।
মিথ্যা মামলা হলে তাৎক্ষণিক করণীয়
১. জামিনের ব্যবস্থা করুন: মামলার ধরণ অনুযায়ী দ্রুত জামিনের আবেদন করুন। এতে অপ্রয়োজনীয় হয়রানি ও কারাবাস এড়ানো সম্ভব।
২. আইনি কৌশল নির্ধারণ করুন: অভিযোগকারীর অভিযোগ খণ্ডন করার মতো সব তথ্য, কাগজপত্র ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করুন। আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে প্রতিটি অভিযোগের যৌক্তিক জবাব দিন।
৩. মানসিক দৃঢ়তা বজায় রাখুন:মিথ্যা মামলা মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার জন্য করা হয়। তাই ভয় না পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
বিশেষ উদাহরণ: যৌতুকের মিথ্যা মামলা
বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮-এর অধীনে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়। এ ক্ষেত্রে—আসামি যদি সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন, তবে তিনি খালাস পাবেন। খালাস পাওয়ার পর অভিযুক্ত চাইলে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮-এর ৬ ধারা অনুযায়ী অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে পারেন। এ ধারায় দোষী প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০,০০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
পাল্টা আইনি ব্যবস্থা
১. মানহানি মামলা: অভিযোগকারীর মিথ্যা অভিযোগে আপনার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলে মানহানির মামলা করা যায়।২. ক্ষতিপূরণ দাবি: দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় আপনার আর্থিক ক্ষতি হলে সিভিল কোর্টে ক্ষতিপূরণ দাবি করা সম্ভব।৩. দণ্ডবিধির আওতায় ব্যবস্থা: বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ২১১ ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি জেনে শুনে মিথ্যা অপরাধমূলক অভিযোগ করে, তবে তারও শাস্তি হতে পারে।
প্র্যাকটিক্যাল গাইডলাইন চেকলিস্ট (Step-by-Step করণীয়)
১. মামলা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে (প্রতিরোধমূলক ধাপ):
- থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন।
- ঘটনার সাথে সম্পর্কিত কাগজপত্র, অডিও-ভিডিও, চ্যাট লগ সংরক্ষণ করুন।
- একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
২. মামলা হলে (প্রথম পদক্ষেপ):
- ভীত না হয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
- দ্রুত জামিনের জন্য আবেদন করুন।
- পুলিশের কাছে সহযোগিতা করুন, তবে ভীতি বা চাপে স্বীকারোক্তি দেবেন না।
৩. মামলার বিচার চলাকালীন:
- সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করুন।
- প্রত্যেক শুনানিতে আইনজীবীর মাধ্যমে শক্ত প্রতিরক্ষা দিন।
- আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন, কিন্তু আপনার অধিকার নিয়ে সচেতন থাকুন।
৪. খালাস পাওয়ার পর:
- অভিযোগকারী/বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে পারেন (যেমন: যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮-এর ৬ ধারা বা দণ্ডবিধির ২১১ ধারা)।
- মানহানি মামলা বা ক্ষতিপূরণের দাবি করতে পারেন।
৫. দীর্ঘমেয়াদে:
- ভবিষ্যতে এ ধরনের হয়রানি থেকে বাঁচতে সবসময় আইনগত দলিল, লেনদেনের রেকর্ড ও যোগাযোগের প্রমাণ সংরক্ষণ করুন।
- ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিরোধে লিখিত সমঝোতা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মিথ্যা মামলা বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আইন সচেতনতা, প্রস্তুতি, দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ ও সঠিক সময়ে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে একজন নির্দোষ ব্যক্তি শুধু নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন না, বরং অভিযোগকারীকে শাস্তিও দিতে পারবেন। মনে রাখতে হবে, মিথ্যা মামলা মোকাবিলায় আতঙ্ক নয়, বরং জ্ঞান, প্রস্তুতি ও দৃঢ়তা—এই তিনটিই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনটি খারিজ করে এই রায় দেন।
এর আগে গত ১ জুন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। দীর্ঘদিন ধরে আপিলের শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত আদেশ দেন আদালত।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে তারেক রহমান ও বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট সে সময় রায়ে মন্তব্য করেন যে, মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না এবং চার্জশিটও আইনত গ্রহণযোগ্য ছিল না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এই হামলায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ দলের শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন, যাদের অনেকেই এখনো গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
/আশিক
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তি ভাগাভাগির নিয়ম
বাংলাদেশসহ মুসলিম প্রধান সমাজে জমি কিংবা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন বা ফরায়েজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আইন মূলত কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুসারে প্রণীত, যেখানে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য অংশ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত থাকে।
পুত্র ও কন্যার অংশ
মৃত ব্যক্তির পুত্র ও কন্যা উভয়েই উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অধিকারী হন। তবে ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থায় সাধারণত পুত্র সন্তান কন্যার দ্বিগুণ অংশ প্রাপ্ত হন। এই নিয়মের মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বণ্টনের বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে।
দাদা-দাদী ও নানী-নানীর অংশ
যদি মৃত ব্যক্তির পিতা-মাতা জীবিত না থাকেন, তবে দাদা, দাদী কিংবা নানীও উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অংশীদার হওয়ার সুযোগ পান। তবে এ ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য অংশ নির্ভর করে অন্য ওয়ারিশদের উপস্থিতি ও প্রাপ্য অংশের ওপর।
মায়ের সম্পত্তির বণ্টন
মৃত মায়ের সম্পত্তি ভাগ করার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। যদি মা জীবিত না থাকেন, তবে তাঁর সন্তানরা সমানভাবে উত্তরাধিকার হবেন। এখানে ছেলেমেয়ের অনুপাতে দ্বিগুণ-অর্ধেকের নীতি কার্যকর হয়। অর্থাৎ, ছেলে সন্তান কন্যার তুলনায় দ্বিগুণ অংশের দাবিদার হন।
ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজনীয়তা
ব্যবহারিক বাস্তবতায় সম্পত্তি ভাগাভাগি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি। ওয়ারিশ সনদে নির্ধারিত হয় কে কে বৈধ উত্তরাধিকারী এবং কার কত অংশ পাওনা। এই সনদ ছাড়া সরকারি বা আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পত্তি হস্তান্তর বা নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।
আইনি প্রক্রিয়া ও মামলা
যদি উত্তরাধিকার বণ্টন নিয়ে কোনো মতবিরোধ বা জটিলতা দেখা দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট আদালতে "বণ্টন মামলা" বা ব্যাটওয়ারা মামলা দায়ের করতে হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী সম্পত্তির অংশীদারদের মধ্যে যথাযথভাবে জমি বা সম্পত্তি ভাগ করা হয়।
প্রযোজ্য আইন
বাংলাদেশে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন ১৯৬১ একটি প্রধান রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই আইনে উত্তরাধিকার বণ্টনের বিস্তারিত কাঠামো বর্ণিত আছে। তবে কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা জটিলতার ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া সবসময়ই যুক্তিসঙ্গত।
শেখ হাসিনার মামলার বিচার শেষ পর্যায়, রায় শীঘ্রইে
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিচার এখন শেষ পর্যায়ে। মাত্র ৯ দিনে ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জন শহীদ আন্দোলনকারীর বাবা-মা ও ভাইসহ আহত আন্দোলনকারী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন। সাক্ষীরা সবাই এক কণ্ঠে বলেছেন—হাজারো মানুষ হত্যার জন্য শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মামলায় আরও অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন সাক্ষী আদালতে হাজির হবেন। অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগতে পারে। এরপর উভয় পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে। প্রসিকিউশনের মতে, সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার কথা। এরপর ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য দিন ঘোষণা করবে।
এই মামলায় মোট সাক্ষী রয়েছেন ৮১ জন, যাদের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ও একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকও আছেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষ হবে এবং এরপর আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করবে।
তিনি আরও জানান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যেই দোষ স্বীকার করেছেন এবং রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আইনজীবীরা চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করবেন।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট ৫টি অভিযোগে বিচার শুরু করার আদেশ দেয়। অভিযোগগুলো হলো: ১,৪০০ আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনা, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’।
এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। চৌধুরী আল-মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ করছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এছাড়া, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর একটি হলো আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনা, অন্যটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত।
ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর আইন: অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিলেই কারাদণ্ড
বাংলাদেশে দ্রুত প্রসারমান ই-কমার্স খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে এবং ক্রেতাদের অধিকার সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুনভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ’, যেখানে অনলাইন বিক্রেতাদের প্রতারণা ও অনিয়ম ঠেকাতে কড়া শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। নির্ধারিত সময়ে পণ্য বা সেবা সরবরাহ না করলে মূল্যের কয়েক গুণ জরিমানা আরোপ করা হবে। নিষিদ্ধ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১–২২ সালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার কারণে হাজার হাজার গ্রাহক পণ্য না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তখন টাকা ফেরতের দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ পর্যন্ত হয়েছিল। এসব ঘটনা বিবেচনায় নিয়েই নতুন আইন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায় এ খসড়ার অনুমোদন হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখন অন্তর্বর্তী সরকার খসড়াটি নতুন করে সামনে এনেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া অধ্যাদেশ ইতোমধ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। এরপর যাবে ‘আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান কমিটি’র বৈঠকে। যদিও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিষয়টি এখনো তার নজরে আসেনি, তবে তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।
খসড়ায় বলা হয়েছে, যেকোনো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে পণ্য ও সেবা কেনাবেচাকে ‘ডিজিটাল বাণিজ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা নিজস্ব নামে ওয়েবসাইট, মার্কেটপ্লেস বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য বা সেবা বিক্রি বা প্রদর্শন করবে, তাদেরই ‘ডিজিটাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে গণ্য করা হবে। অনুমতি ছাড়া গিফট কার্ড, ওয়ালেট, ক্যাশ ভাউচার বা ডিজিটাল ভাউচার চালু করলে জরিমানা করা হবে। অনলাইন লটারির আয়োজন করলেও বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স ও ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন নিতে হবে। প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে কর্তৃপক্ষ তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।
অধ্যাদেশ পাস হলে গঠিত হবে ডিজিটাল বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ, যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এর প্রধান দায়িত্ব হবে ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রসার ও শৃঙ্খলা রক্ষা, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি, প্রতারণা ও অপরাধ প্রতিরোধ, অনলাইন কার্যক্রম পরিদর্শন, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি ঠেকানো এবং ভোক্তা প্রতারণা রোধে তদারকি। এই কর্তৃপক্ষের কাঠামোতে থাকবেন একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্যমন্ত্রী বা বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রধান করে গঠন করা হবে উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইন ব্যাংকিং, আর্থিক সেবা, মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম, অনলাইন জুয়া, লটারি, যৌন উত্তেজক দ্রব্য বা অনলাইন এসকর্ট সেবা এ আইনের আওতার বাইরে থাকবে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্যমতে, দেশে ই-কমার্স কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে, তবে পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে এবং ২০১৪ সালের পর থেকে খাতটির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটে। ২০১৮ সালে প্রণয়ন করা হয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা, যা ২০২০ সালে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত করে সংশোধন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ই-কমার্স খাতে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা ও অনিয়ম চললেও কার্যকর কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই একটি শক্তিশালী আইন এবং কর্তৃপক্ষ গঠন এখন অত্যন্ত জরুরি, যা কার্যকর হলে অনলাইন কেনাবেচার নানা সমস্যা সমাধানে বাস্তব অগ্রগতি হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে খালাস পেলেন ইলিয়াস হোসেন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পেশকার মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া জানান, মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ ও প্রচারের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের দায়ের করা মামলায় আদালত সাংবাদিক ইলিয়াসকে খালাস দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায় থেকে তাকে এই খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও তার বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
একইসঙ্গে, অপর দুই আসামি সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও বাবুলের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত বাবুলের ভাই মো. হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি দেন এবং ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার শুরু করেন। এই মামলায় বিচার চলাকালে ১৩ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
/আশিক
ভূতের মুখে রাম নাম,তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান শেখ হাসিনাও: অ্যাটর্নি জেনারেল
বাংলাদেশের রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। তার মতে, এটি ‘ভূতের মুখে রাম নাম।’ বুধবার (২৭ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে একটি ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শুনানির অনুমতি দিয়েছে।
দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আজকে আদালতে বলেছি, এখন আবার আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরতে চাই। আমরা মনে করি, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসবে। এর ফলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো মা-বাবা তার সন্তান হারাবেন না। আর কখনো রক্ত দিয়ে ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আগের সরকার বলতো কখনো অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার নিজেই ছিল অনির্বাচিত। আমরা তো তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পক্ষে ছিলাম। এখন আবার ভূতের মুখে রাম নাম। আওয়ামী লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চায়।”
/আশিক
তৌহিদ আফ্রিদির মামলা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আইনজীবি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদের জিম্মি করে তাদের নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোমবার (২৫ আগস্ট) এ অভিযোগ তোলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নয়ন। শুনানি শেষে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নয়ন আদালতে বলেন, বহুদিন ধরে পুলিশ তৌহিদ আফ্রিদিকে খুঁজছিল। অবশেষে সিআইডি গত রবিবার বরিশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আফ্রিদি ছাত্রদের জিম্মি করে নগ্ন ভিডিও তৈরি করতেন এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখতেন। সোমবার দুপুরে সিআইডি তাকে আদালতে হাজির করলে তদন্ত কর্মকর্তা খান মো. এরফান সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা, বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আদালত তাকে এ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। এই মামলায় আফ্রিদি এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি এবং তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী ২২ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তায় মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন মো. আসাদুল হক বাবু। ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে বাবুর বুকে ও শরীরের ডান পাশে আঘাত লাগে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে নিহত বাবুর বাবা জয়নাল আবেদীন ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলার তদন্তে উঠে আসে বাবুর হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক প্রভাব, সহিংসতা এবং পরিকল্পিত হামলার নানা দিক।
-শরিফুল
হাইকোর্টে নতুন বিচারক সারজিস আলমের শ্বশুর
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সম্প্রতি ২৫ জনকে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে ৯৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকদের কার্যকাল সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত হবে এবং তা শপথ গ্রহণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
এই ২৫ জন নতুন বিচারকের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ৯ জন আইনজীবী এবং ৭ জন আইন কর্মকর্তা। এতে বিচার বিভাগের নানা স্তর থেকে আসা অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আদালতের কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমান, যিনি পূর্বে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের শ্বশুর।
এছাড়াও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম (শাহীন), আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা, আইনজীবী রাজিউদ্দিন আহমেদ ও ফয়সাল হাসান আরিফ, যুগ্ম সচিব এস এম সাইফুল ইসলাম, আইনজীবী মো. আসিফ হাসান ও মো. জিয়াউল হক, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিহিদার মাসুম কবীর, হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব মুরাদ–এ–মাওলা সোহেল, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন, সলিসিটর (সিনিয়র জেলা জজ) মো. রাফিজুল ইসলাম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, মো. রেজাউল করিম, ফাতেমা আনোয়ার, মাহমুদ হাসান, আবদুর রহমান, সৈয়দ হাসান যুবাইর, এ এফ এম সাইফুল করিম, উর্মি রহমান এবং এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ।
পাঠকের মতামত:
- অবরুদ্ধ গাজায় মৃত্যু-ক্ষুধার মিছিল
- ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে সমুদ্রপথে প্রতিবাদ, গাজাগামী নৌবহরে যোগ দিল গ্রিসের দুটি জাহাজ
- বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের আরেক গৌরব: নাসার STEM দূত ড. আহসান
- ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল
- দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষোভ প্রশমনে ট্রাম্পের ‘ওপেন ডোর’ নীতি
- উন্নয়নের মুখোশ না মহা লুটপাট? শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৫ লাখ কোটি টাকার রহস্য
- টিকটক বন্ধ নাকি বাঁচবে? স্পেনের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকেই মিলবে সিদ্ধান্ত
- যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের
- জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ
- নেপালের গণঅভ্যুত্থান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা: বৈধতার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ
- মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার
- গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ
- শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অস্ত্র মামলায় নতুন মোড়
- উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- ব্লক মার্কেটে রেকর্ড লেনদেন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) বাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- তারেক জিয়ার কেন দেশে ফেরা কেন জরুরি?
- উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা
- গুলিবর্ষণের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল দিশা পাটানিকে
- ডিএসই–৩০ সূচকে মিশ্র লেনদেন
- গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা
- ছুটির মুডে অনন্যা পাণ্ডে: ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য নতুন অনুপ্রেরণা
- সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ
- ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত
- ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল
- PRIME1ICBA ফান্ডের সাপ্তাহিক এনএভি প্রকাশ
- মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩
- ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম জয় পেল আতলেতিকো
- এমবাপ্পের ঝলকে রিয়াল মাদ্রিদের টানা চতুর্থ জয়
- ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, ২৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা
- ঢাকায় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল, শুল্ক কমানোতে নতুন আশার আলো
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি
- ক্যাম্পাস হবে জ্ঞান ও নেতৃত্ব বিকাশের স্থান: শিবির
- এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে
- আজকের ক্রীড়া সূচি (শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর)
- ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
- শ্রীলঙ্কার ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ, ৩২ বল বাকি থাকতেই লঙ্কানদের দাপুটে জয়!
- কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন
- জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!
- বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল
- শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
- বাজার ব্যবস্থাপনায় টেকসই সরবরাহই স্থিতিশীলতার মূলমন্ত্র: শেখ বশির উদ্দিন
- নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
- অপারেশন থিয়েটারের আলো: ছায়াহীন বিস্ময়ের বৈজ্ঞানিক রহস্য
- আজকের মুদ্রা বিনিময় হারের বিশ্লেষণ
- বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
- জাকসু নির্বাচনের ফলাফল দেওয়ার সময় জানা গেল
- দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ: আতঙ্কে পরিবার, কঠোর নিরাপত্তায় বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট