শেখ হাসিনা দুর্নীতি মামলা

শেখ হাসিনা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 

২০২৫ জুলাই ৩১ ১২:১০:৩৬
শেখ হাসিনা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 
ছবি: সংগৃহীত

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠার প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়েরকৃত তিনটি মামলায় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

আসামিরা আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।

দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, পৃথক তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, অন্যটিতে শেখ হাসিনা ও জয়সহ ১৭ জন এবং তৃতীয়টিতে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই মামলাগুলো বিচার কার্যক্রমের জন্য বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।

মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাসহ রাজউকের একাধিক সাবেক সদস্য, পরিচালক ও উপপরিচালক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবংশেখ হাসিনার একান্ত সচিব সালাহউদ্দিন।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, সরকারের শীর্ষ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কের ছয়টি প্লট নিজেদের নামে বরাদ্দ নেন, যদিও তারা সেই বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না।

মামলায় দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ৪০৯ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, বরাদ্দ পাওয়া ছয়টি প্লটের মধ্যে শেখ হাসিনা ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০০৯) ২০২২ সালের ৩ আগস্ট বরাদ্দ পান। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০১৫) ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর বরাদ্দ পান এবং নভেম্বরের ১০ তারিখে মালিকানা রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও ১০ কাঠার একটি প্লট (নম্বর ০১৭) একই বছরের ২ নভেম্বর বরাদ্দ পান।

এছাড়াও শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামেও ওই এলাকায় প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

/আশিক


সাগর-রুনি হত্যা মামলা: তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২১:৩২:৪৩
সাগর-রুনি হত্যা মামলা: তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
ছবিঃ সংগৃহীত

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত দীর্ঘ দিনেও শেষ না হওয়ায় হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “সাগর-রুনির হত্যার ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে?”

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

ছয় মাসের আল্টিমেটাম

আদালত বলেন, “দুইজন মানুষ হত্যা হয়েছেন। তাদের কে হত্যা করল, কিছুই জানা যায়নি। সারাদেশের মানুষ এই মামলার দিকে তাকিয়ে আছে।”

হাইকোর্টের নির্দেশ: আদালত উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শেষবারের মতো ছয় মাস সময় দিয়ে আদেশ দেন।

তদন্তের অগ্রগতি: পিবিআই কর্মকর্তা আজিজুল হক আদালতকে তদন্তের অগ্রগতি জানান।

পরিবারের উদ্বেগ: সাগর-রুনির পরিবারের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতকে বলেন, “এই মামলার তদন্ত দীর্ঘ দিনেও শেষ না হওয়ায় আমরা বাইরে মুখ দেখাতে পারছি না। সবাই জানতে চায় তদন্ত কবে শেষ হবে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই তদন্ত শেষ হওয়া উচিত।”

টাস্কফোর্স কমিটি

গত বছরের ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের জন্য পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার একজন পুলিশ প্রতিনিধি, সিআইডি ও র‍্যাবের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়।


শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আইনজীবীর যুক্তি

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২১:২৫:৫৩
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আইনজীবীর যুক্তি
ছবিঃ সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন—বলে মন্তব্য করেছেন তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

পলাতক না বাধ্য

পলাতকের অভিযোগ: আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, আজ রাষ্ট্রপক্ষ যে বক্তব্য দিয়েছে, সে প্রেক্ষাপটে তারা শেখ হাসিনাকে ‘পালিয়ে গেছেন’ বলে উল্লেখ করেছে।

আমির হোসেনের ব্যাখ্যা: “আমি বলেছি যে, আমার আসামি পালিয়ে যাননি। উনি এই দেশ থেকে যেতে চাননি, তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ সব জায়গায় এসেছে। উনি (শেখ হাসিনা) এ কথাও বলেছেন যে—আমাকে প্রয়োজনে এখানে মাটি দেন, হত্যা করেন, তবু আমি যাবো না। কিন্তু প্রেক্ষাপট এমন দাঁড়িয়েছে, উনাকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। উনি হেলিকপ্টারে গেছেন। দেশের মানুষ দেখেছে। অতএব পালিয়ে যাওয়া বলে চোরের মতো লুকিয়ে যাওয়াটাকে আমি ডিফেন্ড করেছি।”

গণহত্যা ও বিচারের দাবি

আমির হোসেন বলেন, এই মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে হলে একটি সম্প্রদায়কে বা একটি গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া থাকতে হয়, যা হিটলার ইহুদিদের ক্ষেত্রে করেছিল। তিনি বলেন, “কিন্তু এখানে প্রযোজ্য নয়। এটাই আমার মূল বক্তব্য।”

খালাসের প্রত্যাশা: আইনজীবী মনে করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়নি। তাই তারা ‘সসম্মানে খালাস’ পাবেন।

ন্যায়বিচার: তিনি বলেন, “বাদিপক্ষ যেমন ন্যায়বিচার চান, আসামিপক্ষে আমরাও ন্যায়বিচার চাই। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের।”

রায়ের দিন ধার্য

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণের জন্য আগামী ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।


১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১৪:২৩:১৪
১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। টানা পাঁচ দিনের যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।

মৃত্যুদণ্ড ও ক্ষতিপূরণের দাবি

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল প্যানেলে চিফ প্রসিকিউটর এই আবেদন জানান।

হত্যার দায়: চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন মানুষকে হত্যার দায়ে যদি একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তবে ১ হাজার ৪০০ মানুষের হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত। তবে আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয়।” এই কারণে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছেন।

রাজসাক্ষী: রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তির বিষয়টি আদালতের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেন রাষ্ট্রপক্ষের এই প্রধান প্রসিকিউটর।

ক্ষতিপূরণ: অপরাধীদের সম্পত্তি বিক্রি করে শহীদ ও আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও করেছে প্রসিকিউশন।

তাজুল ইসলাম বলেন, এই দণ্ড কার্যকর হলে দেশের জনগণ ন্যায়বিচার পাবে। আগামী সোমবার এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। সেটি শেষ হলে মামলাটি রায়ের দিকে যাবে।


সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে জটিলতা: খসড়ায় ক্ষুব্ধ বিচারকরা

২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১১:২৬:১৪
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে জটিলতা: খসড়ায় ক্ষুব্ধ বিচারকরা
ছবিঃ সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৫-এর খসড়া নিয়ে বিচারকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খসড়ায় বিচারকদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত কমিটিতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলকে রাখার প্রস্তাবে এই ক্ষোভের সৃষ্টি। এর ফলে আজ বৃহস্পতিবার খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠছে না বলে সূত্র জানিয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল কেন আপত্তির কারণ

সারাদেশের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে:

“প্রস্তাবিত কমিটিতে অ্যাটর্নি জেনারেলের অন্তর্ভুক্তি সংবিধানের ১১৬নং অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মূলনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।”

বিজেএসএ বলেছে, সংবিধানের ১১৬ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জেলা আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত। বিচারকদের বদলি ও পদায়নের কমিটিতে নির্বাহী বিভাগের কোনো প্রতিনিধির অংশগ্রহণ সংবিধানের এই বিধানের পরিপন্থী। অ্যাটর্নি জেনারেল সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হওয়ায় তার অংশগ্রহণ ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ তৈরি করবে।

আইন উপদেষ্টার বক্তব্য ও খসড়ার বিবরণ

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের অন্যতম প্রস্তাব ছিল। তিনি বলেন, “কিছু বিষয়ে এখনো কিছু মতভিন্নতা আছে। সেটা নিয়ে আরেকটু আলাপের প্রয়োজন রয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অধ্যাদেশটা উপদেষ্টা পরিষদে পেশ করা হবে।”

কমিটির কাঠামো: খসড়ার ৮ নম্বর ধারায় সাত সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে, যার প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতি। কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সচিব সদস্য হিসেবে থাকবেন।

হাইকোর্টের রায়: সম্প্রতি হাইকোর্ট এক রায়ে সংবিধানের বিদ্যমান ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল করে বাহাত্তরের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন। এই রায়ের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরে এসেছে।

বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতার বিষয়টি পৃথক সচিবালয়ের হাতেই রাখা হয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির কমিটিতে নির্বাহী বিভাগের প্রতিনিধি রাখা হলে তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।


দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের’ আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৪:৪১:১৬
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের’ আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু
ছবি: সংগৃহীত

দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ বিচারের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে একজন কর্মকর্তাকে এই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অন্য কোনো দলের নাম এলে তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম এই তথ্য জানান।

তদন্তের পরিধি ও অন্য দল

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করছি। এটি পুরোদমে শুরু হলে বিষয়টি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে, তা আমরা তখন জানাতে পারব।”

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এই মুহূর্তে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, ক্রমান্বয়ে তদন্ত যখন আরও এগোবে, তখন যদি প্রয়োজন মনে হয় যে—আরও কোনো দল এর সঙ্গে জড়িত আছে এবং তাদের ব্যাপারেও তদন্ত হওয়া দরকার, তাহলে তদন্ত সংস্থা সেই অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অভিযোগ ও মামলার অগ্রগতি

এর আগে, গত বছরের ২ অক্টোবর এনডিএম-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে দায়ী।

এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ শেষ সাক্ষীর ৩য় দিনের জেরা অনুষ্ঠিত হবে। গতকালও মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে দিনভর জেরা করা হয়। জেরায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, কোনো চাপে নয়, সত্য উদঘাটনের স্বার্থেই তিনি রাজসাক্ষী হয়েছেন।


এ সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটবে: গুম মামলা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের ইঙ্গিত

২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৬:১৮:৪৯
এ সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটবে: গুম মামলা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের ইঙ্গিত
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। সোমবার (৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই ইঙ্গিত দেন।

গুম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন

তাজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আলোচিত গুমের কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দাখিল করা হবে। বিচারে দেরি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তদন্তের জন্য যে সময় প্রয়োজন ছিল, তা শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন:

“এখন একের পর এক মামলার ফরমাল চার্জ দাখিল করা হচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং অনেক মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তাই জনগণের প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যেই এই মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

ওবায়দুল কাদের ও শেখ হাসিনার মামলা

ওবায়দুল কাদেরের মামলা প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সব মামলা একসঙ্গে হবে না। ধাপে ধাপে সব মামলা এগোচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “কেউ দায় এড়িয়ে যাবেন—এমন আশা করা বৃথা। ন্যায়বিচার তার নিজস্ব গতিতে চলবে।”

শেখ হাসিনা এ মামলার প্রধান আসামি কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বাকিটা খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন।”


জুলাই আন্দোলন দমনে পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখের বেশি গুলি ছুড়েছিল

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ২০:৫৭:৫৬
জুলাই আন্দোলন দমনে পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখের বেশি গুলি ছুড়েছিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ/ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে তৎকালীন পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ১১ রাউন্ড গুলি ছুড়েছিল। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকা শহরেই ব্যবহার করা হয়েছিল ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড গুলি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী, তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান।

তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের দ্বিতীয় দিনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে শুনানি মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত প্যানেলে এই জবানবন্দি দেওয়া হয়।

ব্যবহৃত মারণাস্ত্র ও নির্দেশনার অভিযোগ

তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, তার তদন্তকালে তিনি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার ওপর ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি সংক্রান্ত ২২৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পান। এতে দেখা যায়, এলএনজি, চাইনিজ রাইফেল, শর্টগান, রিভলবার ও পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।

আলমগীর জানান, তিনি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও পেয়েছেন। এছাড়া র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টার ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন পান গত ১৪ জানুয়ারি।

তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দিতে অভিযোগ করেন, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে আন্দোলন দমনে শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক মাত্রায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।


সাকিবের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৬:১৪:৫০
সাকিবের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেনকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এর আগে সাকিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তথ্য পেতে দুদক বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছিল।

মামলার তদন্তে যুক্ত হচ্ছে নতুন অভিযোগ

চলতি বছরের জুনে শেয়ারবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করার অপরাধে সাকিব আল হাসানসহ মোট ১৫ জনের নামে মামলা করে দুদক। সেই মামলায় শেয়ারবাজার থেকে ২৫৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

এবার নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে সেই মামলার তদন্তের সঙ্গে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।


কারাগারে মহিলা লীগ নেত্রী লিমাসহ ১০

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৯:১৩:৫৫
কারাগারে মহিলা লীগ নেত্রী লিমাসহ ১০
মহিলা লীগ নেত্রী লিমা।

রাজধানীর পৃথক তিন থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আমতলী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুসরাত জাহান লিমাসহ ১০ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়

আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আনিসুর রহমান, পাথরঘাটা উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. রিপন, আওয়ামী লীগ নেতা মো. নেছার আলী, ছাত্রলীগ নেতা কাজী আইনুল ইসলাম আশিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আল সনেট, মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আরশেদ আলী বিশ্বাস, রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অবিমন্যু বিশ্বাস অভি, আমিনুল হক ফয়সাল ও মো. বেলাল হোসেন তুহিন।

কোন মামলায় গ্রেপ্তার

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বনানী থানার এক মামলায় চারজন, ধানমণ্ডি থানার এক মামলায় দুজন এবং শাহজাহানপুর থানার এক মামলায় চারজনকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগ

মামলার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডি, শাহজাহানপুর ও বনানী থানাধীন এলাকায় মিছিল করেন। তারা একত্রিত হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তথা রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধন করে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেয় ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অপরাধ করে। এসব ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মো. আকিব নূর, গত ১৯ মে শাহজাহানপুর থানায় এবং গত ২ সেপ্টেম্বর বনানী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত