তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে রায়, উত্তরার বাড়িতে ফিরছেন মা-ভাই

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ০৫ ১৩:১৩:৩৪
তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে রায়, উত্তরার বাড়িতে ফিরছেন মা-ভাই

সত্য নিউজ:রাজধানীর উত্তরার রেসিডেনসিয়াল মডেল টাউনের একটি পাঁচতলা বাড়িতে বসবাসের অধিকার হারিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। সোমবার (৫ মে) আপিল বিভাগ তার মায়ের পক্ষে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখায় তিনি ওই বাড়িতে বসবাসের অধিকার হারান। এর ফলে বাড়িটিতে এখন বসবাসের বৈধতা পেলেন তার মা শামসুন্নাহার বেগম ও ভাই শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারিক আদালতে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলায় তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আখতার হামিদ। অপরদিকে, তার মা ও ভাইয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার ও অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম জোবায়ের। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

পটভূমি

উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে বিরোধের সূত্রপাত ২০১৭ সালে। এর আগে, ২০০২ সাল থেকে শামসুন্নাহার বেগম ও শিশির আহমেদ ওই বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তবে তুরিন আফরোজ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের ওই বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

বাড়ির ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে পরে দুই ভাইবোন পৃথকভাবে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর আদালত বাড়ির বিষয়ে ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রাখার আদেশ দেন। পরবর্তীতে একাধিক ধাপে মামলা উচ্চ আদালতে গড়ায়।

২০২৩ সালের ২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন একটি রুল জারি করে জানতে চান, উক্ত স্থিতাবস্থা কেন বাতিল হবে না। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চে গেলে ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থিতাবস্থা বাতিল করে হাইকোর্ট রায় দেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেন তুরিন আফরোজ, যা আজ আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন।

জমি ও মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব

মামলার আরজিতে তুরিন দাবি করেন, তার মা শামসুন্নাহার ১৯৯১ সালে উক্ত বাড়ির জমি কিনেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে তার বাবা তসলিম উদ্দিন হেবা দলিলের মাধ্যমে তুরিনকে জমিটি দান করেন।

অপরদিকে শামসুন্নাহার ও তার ছেলে শাহনেওয়াজ আদালতে লিখিত জবাব দিয়ে বলেন, তসলিম উদ্দিন কখনও মেয়েকে সম্পত্তি দান করেননি। বরং ১৯৯৭ সালে শামসুন্নাহার তার ছেলে শাহনেওয়াজকে হেবা করে দেন এবং ১৯৯৯ সালে নামজারি করে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে ঋণ নিয়ে ২০০২ সাল থেকে তারা সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।

পরবর্তী ধাপ

আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে বাড়িটির বর্তমান দখল ও বসবাসের অধিকার মা ও ছেলের পক্ষে বহাল থাকল। তবে মালিকানা সংক্রান্ত মূল দেওয়ানি মামলাগুলো বিচারিক আদালতে চলবে এবং সেখানেই বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।

আপনার পোর্টালের নির্দিষ্ট পাঠকগোষ্ঠী অনুসারে এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ও উপ-শিরোনামে আরও কৌশলী পরিবর্তন প্রয়োজন হলে জানাতে পারেন।


উল্টো পথে রিকশা, সিসিটিভিতে ধরা পড়লো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১০:৩০:২৭
উল্টো পথে রিকশা, সিসিটিভিতে ধরা পড়লো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা
ছবিঃ সংগৃহীত

সাভারের আশুলিয়া এলাকায় একটি ট্রাকচাপায় নারী ও শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায়। নিহতদের সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।

নিহতরা হলেন—আলতাফ হোসেন (৫০), একজন ব্যবসায়ী; নুরজাহান (২৪); এবং তার চার বছরের শিশু পুত্র আবদুল্লাহ। তাঁরা সাভারের আশুলিয়ার বালিভদ্র এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময় তাঁরা একটি রিকশায় করে যাচ্ছিলেন।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, রিকশাটি বাইপাইল থেকে ইপিজেডগামী উল্টো পথে চলছিল। একটি জলাবদ্ধ ড্রেনের পাশে পৌঁছে রিকশাটি ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের ওপর উঠে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান এবং বাকি দুজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, “একজন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন এবং দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা পুরো ঘটনা নিশ্চিত হয়েছি।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মহাসড়কে উল্টো পথে যান চলাচল এখন যেন স্বাভাবিক একটি দৃশ্য। বিশেষ করে রাতে রিকশা, অটোরিকশা ও কিছু ছোট যানবাহন প্রায়ই উল্টো পথে চলাচল করে, যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা দ্রুত কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের দাবি, রাস্তায় সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো।

এই দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, শুধু চালকদের দায়িত্ববোধ নয়, সড়ক ব্যবস্থাপনাতেও আরও কঠোরতা ও প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি জরুরি। বিশেষ করে সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনা ধরা পড়ার পর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মত দেন সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

-নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ২০:৩৫:৫১
নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা এলাকায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ৩টায় নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ড. একেএম এমদাদুল হক এই রায় দেন।

রায়ে ধর্ষণের মামলায় তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন—অপু চন্দ্র সরকার (২০), মামুন আকন্দ (২৫) ও সুলতান মিয়া (২২)। এদের মধ্যে অপু চন্দ্র সরকার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নুরুল কবীর রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র ও আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই তিন যুবক এক কিশোরীকে মাছের খামারের একটি ঘরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। মেয়েটির মা রাতে কৌশলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।

কিন্তু ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে অপমান ও মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে কিশোরী নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানা বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে মামলা রেকর্ড করে। কিশোরীর মা ধর্ষণের মামলা দিতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি এবং তাকে অপমান করে থানায় থেকে বের করে দেয়। পরে এলাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের মুখে তৎকালীন ওসি আমীর তৈমুর ইলিকে প্রত্যাহার করা হয়।

পরে কিশোরীর মা পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন—একটি ধর্ষণ, অপরটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে। আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয় এবং তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

/আশিক


শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ১২:৫৬:৫৪
শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ
ছবি:দৈনিক জনকণ্ঠ

শেরপুর সদর উপজেলার কুসুমহাটি কৃষি ব্যাংক শাখার সেকেন্ড অফিসার শামসুন্নাহার ‘আশা’-এর বিরুদ্ধে কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া এবং ঋণপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দালালের সহযোগিতায় গ্রামীণ অশিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন এবং ঋণ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করছেন।

বলায়েরচর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের খাদিজা খাতুন বলেন, "আমি ভেবেছিলাম ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। দালাল ইসমাইল ঘুষ হিসেবে ৪৫ হাজার টাকা নেন। পরে জানতে পারি আমার নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ অনুমোদন হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল—তা কেউ বলেনি।”

একই ইউনিয়নের হেজাক মিয়া জানান, “২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ পেয়েছি, অথচ হাতে পেয়েছি মাত্র ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা দালাল ও কর্মকর্তার পকেটে গেছে।”

ডোবারচর গ্রামের কৃষক আব্দুল করিমের অভিযোগ, "৫০ হাজার টাকার ঋণ নিতে গিয়ে জানতে পারি ব্যাংক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছে আমার নামে। অথচ আমাকে কিছুই জানানো হয়নি, কাগজপত্রও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।”

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, এই প্রতারণা চালানো হয় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে—যার মূল দুই ব্যক্তি হলেন ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ‘আশা’ এবং স্থানীয় দালাল ইসমাইল।

২০ জুলাই বিকেলে ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক কুসুমহাটি ব্যাংক প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানান। পরে রাত সাড়ে বারোটায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং তিনজন গ্রাহককে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে। বাকি ৬০ হাজার টাকার জন্য ব্যাংক ম্যানেজার অভিযুক্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি চেক গ্রহণ করেন এবং আশ্বাস দেন যে আজকের মধ্যে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে কর্মকর্তাকে ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।

শেরপুর জেলা তাতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, “নিরীহ কৃষকদের সঙ্গে এমন প্রতারণা শুধু অনৈতিক নয়, বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

স্থানীয় নেতারা বলেন, “অডিটে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রমাণও মিলেছে। তদন্ত করে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”


বিএনপি নেতার হাতে ধরা পড়লেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সন্ত্রাসী

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৫:২৭:১২
বিএনপি নেতার হাতে ধরা পড়লেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সন্ত্রাসী

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে মিছিল ও বাজার দখলের মহড়া দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের বৃন্দাবন এলাকা থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সহায়তায় জাহাঙ্গীরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার তেলিহাটী এলাকার বাসিন্দা নূরুল ইসলামের ছেলে। তিনি আগে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শ্রীপুরের এমসিবাজার এলাকায় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মিছিল ও মহড়া দেওয়ার ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেদিন বাজারে তার নেতৃত্বে চালানো হয় ভয়ভীতি প্রদর্শন, মাইকে চাঁদা দাবির ঘোষণা এবং একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠে। ঘটনার ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাতেই বিএনপি তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করে।

এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। এক মামলায় জামিন পেলেও আরেকটিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, শুধু ওই দুটি মামলাই নয়, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আরও সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিল।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, “সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ কিংবা জুলুমবাজ বিএনপির কোনো কর্মী হতে পারে না। জাহাঙ্গীর আলম মাইকে ঘোষণা দিয়ে চাঁদাবাজি করেছে, অস্ত্র হাতে মিছিল করেছে—এমন অপকর্মকারীদের জায়গা বিএনপিতে নেই।” তিনি আরও জানান, নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারেন জাহাঙ্গীর ওই এলাকায় আত্মগোপনে আছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই ঘটনাকে ঘিরে শ্রীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের ভেতর থেকে অপরাধীকে চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা বিরল হলেও অনেকেই এটিকে বিএনপির অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।


নরসিংদীতে অস্ত্রোপচারে মারাত্মক গাফিলতি: প্রসূতির পেটে রয়ে গেল ১৮ ইঞ্চি কাপড়

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১৮:০৮:০৭
নরসিংদীতে অস্ত্রোপচারে মারাত্মক গাফিলতি: প্রসূতির পেটে রয়ে গেল ১৮ ইঞ্চি কাপড়

নরসিংদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় এক প্রসূতির পেটে ভুলবশত ১৮ ইঞ্চি দীর্ঘ একটি রক্ত মোছার কাপড় রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ওই নারী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগী লিমা আক্তারের বয়স ২৮ বছর। ১৭ জুন প্রসবব্যথা নিয়ে তিনি ভর্তি হন নরসিংদী সিটি হাসপাতালে। ওই দিনই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। ২১ জুন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর থেকেই তিনি পেটব্যথায় ভুগতে শুরু করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২৫ জুন তাকে আবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার পরীক্ষায় কিছু ধরা না পড়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়।

ঢাকায় বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন, অস্ত্রোপচারের সময় লিমার পেটে কাপড় রেখেই সেলাই করা হয়েছিল। এরপর ৩ জুলাই গভীর রাতে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারে তার পেট থেকে সেই ১৮ ইঞ্চির কাপড়টি বের করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এইচ এম শাখাওয়াত হোসেন।

লিমার বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জানান, “বোনের পেট ফুলে গেছে, দুর্গন্ধ হচ্ছে, ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয় পাঁচদিন। এখনো সে সংকটাপন্ন। নবজাতক সন্তানও বিপদে আছে, মায়ের সেবা ও দুধ পাচ্ছে না।” তিনি জানান, তারা নরসিংদীর সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, বিএমডিসিতেও অভিযোগ করেছেন এবং আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক শিউলী আক্তারকে দায়ী করেছেন লিমার স্বজনরা। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন মিয়া বলেন, “ভুল হয়েছে, সেটা মেনে নিচ্ছি। আমরা সমঝোতার চেষ্টা করেছি এবং চিকিৎসার খরচ বহনের প্রস্তাবও দিয়েছি।” তিনি জানান, পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা আরও অর্থ দাবি করায় সমঝোতা হয়নি।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. আমিরুল হক শামীম বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৫:১৬:০১
গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে রাতের আঁধারে একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা, একইসঙ্গে গুরুতর আহত করা হয়েছে আরেক যুবককে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ককোয়ালিকান্দি গ্রামে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা, যা শুক্রবার দুপুরে প্রকাশ্যে আসে।

নিহত কলেজছাত্রের নাম মাসুদ (১৯)। তিনি ককোয়ালিকান্দি গ্রামের সম্রাট প্রামাণিকের ছেলে এবং স্থানীয় তেঘুরিয়া শাহেদ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন। মাসুদের পাশাপাশি আহত যুবক রুবেল (২৬), একই এলাকার বাসিন্দা ও আলতাফুর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, দুজনেই বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করতেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জগলুল হক রিমু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রুবেলের পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকায় তিনি প্রতিবেশী মাসুদকে তার ঘরে এনে রাত কাটান। পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় আশেপাশের লোকজন সন্দেহ করে তাদের ডাকাডাকি শুরু করে। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারাত্মক দৃশ্যের মুখোমুখি হন—মাসুদ নিথর দেহে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন, আর রুবেল গলায় গুরুতর জখম নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন।

আহত রুবেলকে প্রথমে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে, তবে এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এমন নির্মম ঘটনাকে অভূতপূর্ব ও গভীর উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে। স্থানীয়ভাবে মাসুদ একজন নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার হঠাৎ এইভাবে প্রাণ হারানোতে এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অপরদিকে, আহত রুবেলের জ্ঞান ফিরলে ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্বের পরিণতি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে তদন্তকারী দল কাজ শুরু করেছে। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, আশপাশের এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়।


শহীদ জিয়া: ক্ষমতার মসনদে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত

মো. অহিদুজ্জামান
মো. অহিদুজ্জামান
শিক্ষক ও রাজনৈতিক গবেষক
২০২৫ জুলাই ০৫ ১৫:৫৩:৫৪
শহীদ জিয়া: ক্ষমতার মসনদে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (১৯৩৬–১৯৮১) বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন প্রবাদপ্রতীম নেতা, যিনি তাঁর অপরিসীম দেশপ্রেমের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সততা ও নিঃস্বার্থ নেতৃত্বের জন্য স্মরণীয়। স্বাধীনতার ঘোষক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়া শুধু সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নন, বরং সুনাগরিক ও রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সত্যনিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা এবং মিতব্যয়িতার উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। তাঁর শাসনামলে সরকারি পদে থেকেও তিনি ব্যক্তিগত সুবিধাভোগ বা আত্মীয়প্রীতি থেকে বিরত থেকে অনন্য সততার দৃষ্টান্ত রেখেছেন। নিচে তার সততার বিভিন্ন দিক সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ আলোচনা করা হলো।

ব্যক্তিগত জীবনে সততার প্রমাণ ও উদাহরণ

জিয়াউর রহমানের জীবনধারা ছিল অত্যন্ত সহজ-সরল ও মিতব্যয়ী, যা তাঁর সততার পরিচায়ক। রাষ্ট্রপতির উচ্চপদে থেকেও তিনি বিলাসিতা পরিহার করে সাধারণ জীবনযাপন করতেন। উদাহরণস্বরূপ, এক সহকর্মীর স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায় যে জিয়া বাড়িতে পুরোনো ছেঁড়া স্যান্ডেল পরতেন এবং ১৯৮১ সালে হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তাঁর ছোট্ট স্যুটকেসে মাত্র কয়েক জোড়া সাধারণ পোশাক এবং একটি ছেঁড়া বানিয়ান পাওয়া যায়। এসব ঘটনা ইঙ্গিত করে যে তিনি রাষ্ট্রপতির মতো সম্মানজনক পদেও ব্যক্তি জীবনে কোনো ব্যক্তিগত সম্পদের পেছনে ছুটেননি।

সরকারি সম্পদের ব্যবহারেও জিয়া ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক। তিনি রাষ্ট্রপতির জন্য বরাদ্দ বিলাসবহুল মার্সিডিজ গাড়ি নিজে ব্যবহারের বদলে সাধারণ একটি টয়োটা করোলা গাড়ি অফিসিয়াল যানবাহন হিসেবে বেছে নেন এবং সেই মার্সিডিজগুলো কেবল বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের করার জন্য সংরক্ষণ করেন। বঙ্গভবনে তাঁর কর্মকালীন অফিসিয়াল ডিনার ছিল অতি সাধাসিধে – ভাত/রুটি, এক ধরনের ভাজি, এক প্রকার তরকারি ও ডাল পর্যন্ত সীমিত থাকত, যা তাঁর ব্যক্তিগত মিতব্যয়িতার পরিচায়ক।

জিয়া আত্মীয়স্বজনের জন্য রাষ্ট্রীয় সুবিধা নেওয়া বা তাদের অযথা প্রভাব খাটাতে মোটেও প্রশ্রয় দেননি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি নির্দেশ জারি করেছিলেন যে তাঁর পরিবার-পরিজনের কেউ ব্যক্তিস্বার্থে কোনো অনুরোধ নিয়ে সরকারি দফতরে গেলে সাথে সাথে যেন তা তাঁকে জানানো হয়। একবার তাঁর ভাই মিজানুর রহমান এক পুলিশ কর্মকর্তার বদলির অনুরোধ করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করতে চেয়েছিলেন। এ খবর জানা মাত্রই মাঝরাতে জিয়া সেই পদস্থ কর্মকর্তাকে ফোন করে কঠোর ভাষায় জিজ্ঞাসা করেন, “শুনেছি- আমার ভাই তোমার কাছে গেছে?” – এবং পুরো বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেন। এ ঘটনায় পরিষ্কার যে নিজের ভাইয়ের অনুরোধও তিনি ক্ষমা করেননি, বরং এ ধরনের তদবিরকে কঠোর হস্তে দমন করেছেন।

আবার এক সরকারি সফরে জাম্বিয়া গিয়ে রাষ্ট্রদূত তাঁর ছোট ভাই রেজাউর রহমানের সাথে অফিসিয়াল সূচিতে সাক্ষাতের সময় রাখেন। জিয়া সেটা দেখে অসন্তুষ্ট হয়ে বলেন, “আমার ভাই এখানে আছে জানি, কিন্তু ওর সঙ্গে দেখা করা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সরকারী কর্মসূচিতে তা রেখো না।”

উল্লেখযোগ্য আরেকটি দিক হলো, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য অর্থসম্পদ সঞ্চয় করার কোনো চেষ্টাই করেননি। ১৯৮১ সালে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল অকিঞ্চিৎকর। তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনে যে সম্পদ বিবরণী দেন, তাতে দেখা যায় জিয়াউর রহমানের নামে ব্যাংক হিসাবে মাত্র ২,৩৫৯ টাকা জমা ছিল। তাঁর জীবদ্দশায় নিজের কেনা উল্লেখযোগ্য সম্পদের তালিকায় কেবল সাভারে ১০ কাঠার একটি জমি ছিল।

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস দেয়াল-এও চরিত্রের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে: “জিয়া মানুষটা সৎ ছিলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই... তিনি বাহ্যিক নয়, প্রকৃত অর্থেই সৎ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর দেখা গেছে জিয়া পরিবারে কোনো সঞ্চয় ছিল না।” এসব তথ্য প্রমাণ করে যে জিয়া রাষ্ট্রপতি হিসেবে অপরিমেয় ক্ষমতার অধিকারী হয়েও ব্যক্তিগত সম্পদ আহরণ বা বিলাসিতা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন।

শাসনামলে সততা: জনমত ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তার সততা সম্পর্কে জনমত ছিল অত্যন্ত ইতিবাচক। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায় যে সততা ও দেশপ্রেম ছিল জিয়ার নেতৃত্বের মূল ভিত্তি। তাঁর কঠোর স্বচ্ছ জীবনযাপন ছিল কিংবদন্তিতুল্য, যার বিরোধীরাও প্রশংসা করেছেন। একজন সেনানায়ক থেকে রাষ্ট্রীয় শাসক হয়েও তিনি দুর্নীতিমুক্ত ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পেরেছিলেন এবং এতে যথেষ্ট সাফল্যও অর্জন করেছিলেন।

আবার বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনায় বক্তারা উল্লেখ করেন যে শহীদ জিয়ার সততা ও দেশপ্রেম ছিল “সকল প্রশ্নের ঊর্ধ্বে ও ঈর্ষণীয়” – তাঁর চরম শত্রুও কখনো তাঁর সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেনি। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা যায়, জিয়ার প্রশাসন দুর্নীতি বা আত্মীয়করণ থেকে মুক্ত থাকা নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল। একজন সমকালীন সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন, যারা কোনোদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার কথা কল্পনাও করেননি, সেই সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল কর্মীর চোখেও জিয়া ছিলেন নায়কের মতো – মূলত তাঁর সততা এবং জনকল্যাণে আত্মনিবেদিত নেতৃত্বের গুণেই।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, নিজে সর্বোচ্চ সততা অনুসরণ করলেও তিনি অধস্তন নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুর্নীতি রোধে কিছুটা শিথিল ছিলেন বলে সমালোচনা হয়েছে। সমালোচকদের মতে, মন্ত্রী ও রাজনীতিকদের দুর্নীতি দমনে তিনি যথেষ্ট কঠোরতা দেখাননি। তবে অন্য বিশ্লেষকদের মতে, স্বীয় সততার কারণে তিনি দুর্নীতির বিষয়টি প্রশ্রয় দেননি; বরং রাষ্ট্রক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে রাজনৈতিক সমর্থন অটুট রাখার কৌশলে কিছুটা নমনীয় ছিলেন।

তা সত্ত্বেও জিয়ার ব্যক্তিগত সততা এতটাই প্রশ্নাতীত ছিল যে বিরোধী রাজনীতিবিদরাও তাঁর অর্থনৈতিক নির্ভীকতা ও সৎ ইমেজের প্রশংসা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি সংসদীয় বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের এক বর্ষীয়ান নেতা জিয়ার জানাযায় জনতার অভূতপূর্ব সমাবেশের কথা উল্লেখ করে তাঁর জনগণের সাথে গভীর সম্পৃক্ততার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত সেই ভালোবাসা তাঁর সততা ও আন্তরিকতার প্রতি মানুষের আস্থারই বহিঃপ্রকাশ।

সততা বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ভাবমূর্তি

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমান কেবল দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও একজন সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা হিসেবে সম্মান পেয়েছিলেন। তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা ও স্বচ্ছতার কারণে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী আসন লাভ করে। একই সময়ে জিয়া জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির ধারা শক্ত করে তোলেন এবং চীন, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন। ইরাক-ইরান যুদ্ধ থামাতে তিনি শান্তিদূতের ভূমিকা পালন করেন, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁর নিষ্ঠা ও নৈতিক অবস্থানের পরিচায়ক।

জিয়াউর রহমান ব্যক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক মহলে সৎ ও নির্ভরযোগ্য নেতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন বলেই বিভিন্ন দেশ তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া, মিশর, ইউগোশ্লাভিয়া সহ একাধিক রাষ্ট্র তাঁকে তাঁদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করে। তাঁর সততা ও কর্মনিষ্ঠার উদাহরণ এতটাই উজ্জ্বল ছিল যে তাঁকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে “সততার আলোকবর্তিকা” বলে অভিহিত করা হয়।

জিয়ার মৃত্যুর পরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়—যা প্রমাণ করে যে একজন সত্যিকার দেশপ্রেমিক, সৎ ও বিশ্বস্ত নেতার প্রতি বিশ্বমঞ্চেও ছিল গভীর শ্রদ্ধা।

সততা প্রসঙ্গে সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের প্রশংসাসূচক মন্তব্য

জিয়াউর রহমানের সততা সম্পর্কে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছেন। তাঁর সমসাময়িক প্রবীণ রাজনীতিবিদ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী শুরু থেকেই জিয়াকে সমর্থন জানিয়েছিলেন এবং বলেছেন, “জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত সততা ও নিরপেক্ষতা অতুলনীয়। এমন সৎ নেতৃত্ব এ অঞ্চলে বিরল।” একজন সাংবাদিককে ভাসানী বলেছিলেন, “তুমি এমন একজন লোকের নাম বলো তো, যে জিয়ার মতো সৎ, নির্দোষ ও দেশপ্রেমিক?”

বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর উপন্যাসে জিয়াউর রহমানকে সৎ ও নির্মোহ নেতা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। উপন্যাসের এক স্থানে বলা হয়েছে: “জিয়া সৎ মানুষ ছিলেন, এতে কোন সন্দেহ নেই… এমনকি তার মৃত্যুর পর দেখা গেছে, তার পরিবার কোনো অর্থবিত্ত জমাতে পারেনি।” সাহিত্যের পাতায় জিয়ার এই সততার স্বীকৃতি মূলত ঐতিহাসিক বাস্তবতার প্রতিফলন।

এছাড়া স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে অনেক রাজনীতিক ও বিশ্লেষক জিয়ার সততার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। বিএনপি-প্রধান হিসেবে পরবর্তীতে খালেদা জিয়াও তাঁর সততা ও দেশপ্রেমের কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। সাম্প্রতিক আলোচনা ও গবেষণায় জোর দিয়ে বলা যায়, জিয়ার “গভীর দেশপ্রেম, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দূরদর্শিতা” তাঁকে এমন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল যা আজও বিরল।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবন ও নেতৃত্ব সততা, দেশপ্রেম ও ন্যায়পরায়ণতার এক বিরল উদাহরণ। ব্যক্তিগত আচরণে মিতব্যয়িতা ও সচ্চরিত্র, সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতি এবং পরিবার-পরিজনের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতহীন কঠোরতা—এই গুণের সমন্বয়ে জিয়া এক অবলৌকিক সততার মানদণ্ড স্থাপন করেছিলেন। তিনি প্রমাণ করেছিলেন, রাষ্ট্রনায়ক হওয়া মানেই শুধু ক্ষমতা নয়, বরং আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতিচ্ছবি হওয়া।

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায়, যেখানে শুদ্ধাচারের সংকট প্রকট, সেখানে শহীদ জিয়ার সততার দৃষ্টান্ত একটি জীবন্ত অনুপ্রেরণা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা কেবল ইতিহাস নয়—একটি নৈতিক রোডম্যাপ।


ওয়ারিতে কেমিক্যাল গুদামে আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেল ওয়ারির ৫২ পরিবার

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ১১:৫০:০৩
ওয়ারিতে কেমিক্যাল গুদামে আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেল ওয়ারির ৫২ পরিবার

রাজধানীর ওয়ারি এলাকায় অবস্থিত একটি আবাসিক-কমার্শিয়াল ভবনের কেমিক্যাল গুদামে ভোরে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়লে ৫২টি পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রায় দুই ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, আজ সকাল ৫টার দিকে ওয়ারির হাতখোলা রোডের ১২ তলা ভবন ‘মামুন প্লাজা’-এর তৃতীয় তলায় অবস্থিত একটি কেমিক্যাল গুদামে আগুন লাগে। এরপর মুহূর্তেই ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো ভবন। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস।

সকাল ৭টার দিকে চারটি ইউনিটের যৌথ অভিযানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মোট ৫২টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল গুদাম রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটি স্পষ্টভাবেই অগ্নিনিরাপত্তা বিধিমালা লঙ্ঘন।”

তথ্য অনুযায়ী, মামুন প্লাজার নিচের তিনটি তলা বাণিজ্যিক ব্যবহারে, আর উপরের নয়টি তলায় রয়েছে আবাসিক ফ্ল্যাট। কেমিক্যাল ব্যবসাটি ছিল অবৈধ এবং সেখানে DRSP (Data Reporting Service Provider) নামক কোনো অগ্নি-নিরাপত্তা সিস্টেম ছিল না—যা কেমিক্যাল গুদাম পরিচালনায় একটি মৌলিক শর্ত।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই DRSP ব্যবস্থা না থাকলে কোন ধরনের আগুনে কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হবে, তা নির্ধারণ করা কঠিন—ফলে বিপদ আরও বেড়ে যায়।

ভবিষ্যতে এ ধরনের অবৈধ কেমিক্যাল গুদামের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সালেহ উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, “আবাসিক এলাকায় রকমারি রাসায়নিক ব্যবসা, বিশেষ করে ভবনের ভেতরে গুদামজাতকরণ, নগরবাসীর জন্য এক অঘোষিত মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করছে।”

ঘটনায় কেউ প্রাণ হারাননি বলে নিশ্চিত করা হলেও একজন ফায়ার সার্ভিসকর্মী উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিতে গিয়ে হাতে আঘাত পান—তাঁর আঙুলের দুটি অংশ কেটে যায়।

তবে আগুনের মূল কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি তদন্তাধীন।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপট:

ওয়ারি, চকবাজার, আরামবাগ—রাজধানীর বহু পুরনো এলাকা এখনও কেমিক্যাল গুদাম ও বাজারের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। চকবাজার ট্র্যাজেডি বা নিমতলীর ভয়াবহতা থেকে শিক্ষা নিয়েও আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল সংরক্ষণের প্রবণতা থামেনি। আজকের এই ঘটনা যেন আবারও সেই সতর্কবার্তাই সামনে এনে দিল।

-সুত্র বি এস এস


ঘরের চুলা থেকেই বিভীষিকা, নিভে গেল মিথিলা

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৭ ২১:৪৮:০৯
ঘরের চুলা থেকেই বিভীষিকা, নিভে গেল মিথিলা

রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দীর্ঘ ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ শিশু মিথিলা আক্তার। শুক্রবার (২৭ জুন) ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মিথিলা ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বাঙ্গনামাড়ি ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের মাজাহারুল ইসলামের মেয়ে। পরিবার নিয়ে সে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার মজনু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকত।

কীভাবে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি?

মৃত্যু শিশুর মামা সজিব মিয়া (২৩) জানান, ১৭ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিথিলার মা-বাবা কর্মস্থলে ছিলেন। তখন তিনি ভাগ্নিকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ঘরের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ টের পেয়ে চুলার কাছে যান এবং সিলিন্ডারের পাইপে লিকেজ দেখতে পান। লিকেজ বন্ধ করার চেষ্টা করতেই মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়লে মিথিলা দগ্ধ হয় এবং তাকেও বাঁচাতে গিয়ে মামা সজিবও দগ্ধ হন।

স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিভিয়ে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের পাঠানো হয় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

শেষ নিঃশ্বাস, অপমৃত্যু মামলা

চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে শুক্রবার ভোরে মিথিলা না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়। তার মামা এখনও ঢাকায় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন এবং তার অবস্থাও গুরুতর।

ঘটনার বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদ জানান, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

—সত্য প্রতিদিন/আশিক

পাঠকের মতামত: