তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে রায়, উত্তরার বাড়িতে ফিরছেন মা-ভাই

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ০৫ ১৩:১৩:৩৪
তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে রায়, উত্তরার বাড়িতে ফিরছেন মা-ভাই

সত্য নিউজ:রাজধানীর উত্তরার রেসিডেনসিয়াল মডেল টাউনের একটি পাঁচতলা বাড়িতে বসবাসের অধিকার হারিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। সোমবার (৫ মে) আপিল বিভাগ তার মায়ের পক্ষে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখায় তিনি ওই বাড়িতে বসবাসের অধিকার হারান। এর ফলে বাড়িটিতে এখন বসবাসের বৈধতা পেলেন তার মা শামসুন্নাহার বেগম ও ভাই শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারিক আদালতে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলায় তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আখতার হামিদ। অপরদিকে, তার মা ও ভাইয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার ও অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম জোবায়ের। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

পটভূমি

উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে বিরোধের সূত্রপাত ২০১৭ সালে। এর আগে, ২০০২ সাল থেকে শামসুন্নাহার বেগম ও শিশির আহমেদ ওই বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তবে তুরিন আফরোজ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের ওই বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

বাড়ির ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে পরে দুই ভাইবোন পৃথকভাবে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর আদালত বাড়ির বিষয়ে ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রাখার আদেশ দেন। পরবর্তীতে একাধিক ধাপে মামলা উচ্চ আদালতে গড়ায়।

২০২৩ সালের ২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন একটি রুল জারি করে জানতে চান, উক্ত স্থিতাবস্থা কেন বাতিল হবে না। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চে গেলে ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থিতাবস্থা বাতিল করে হাইকোর্ট রায় দেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেন তুরিন আফরোজ, যা আজ আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন।

জমি ও মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব

মামলার আরজিতে তুরিন দাবি করেন, তার মা শামসুন্নাহার ১৯৯১ সালে উক্ত বাড়ির জমি কিনেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে তার বাবা তসলিম উদ্দিন হেবা দলিলের মাধ্যমে তুরিনকে জমিটি দান করেন।

অপরদিকে শামসুন্নাহার ও তার ছেলে শাহনেওয়াজ আদালতে লিখিত জবাব দিয়ে বলেন, তসলিম উদ্দিন কখনও মেয়েকে সম্পত্তি দান করেননি। বরং ১৯৯৭ সালে শামসুন্নাহার তার ছেলে শাহনেওয়াজকে হেবা করে দেন এবং ১৯৯৯ সালে নামজারি করে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে ঋণ নিয়ে ২০০২ সাল থেকে তারা সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।

পরবর্তী ধাপ

আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে বাড়িটির বর্তমান দখল ও বসবাসের অধিকার মা ও ছেলের পক্ষে বহাল থাকল। তবে মালিকানা সংক্রান্ত মূল দেওয়ানি মামলাগুলো বিচারিক আদালতে চলবে এবং সেখানেই বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।

আপনার পোর্টালের নির্দিষ্ট পাঠকগোষ্ঠী অনুসারে এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ও উপ-শিরোনামে আরও কৌশলী পরিবর্তন প্রয়োজন হলে জানাতে পারেন।


ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ০৯:৪১:১০
ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে নির্ধারিত আটটি ভোটকেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি করেছে আলাদা উত্তেজনা ও প্রত্যাশার পরিবেশ।

নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি

ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। টিএসসি এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ, যাতে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। সকাল থেকেই স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করছে পুলিশ ও প্রশাসন।

ভোটার ও প্রার্থী সংখ্যা

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ৬২ জন ছাত্রী। অন্যদিকে ১৮টি হলে ১৩টি করে মোট ২৩৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। ফলে পুরো নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা ও প্রতিযোগিতা দুই-ই প্রবল।

ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া

ভোটাররা তাদের সুবিধাজনক সময়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট দেবেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ড বা পে-ইন স্লিপ এবং অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, বিশ্ববিদ্যালয় আইডি বা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় প্রমাণ করবেন। এরপর আঙুলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হবে এবং ভোটার তালিকায় সই করার পর ব্যালট প্রদান করা হবে।ভোটাররা গোপন কক্ষে প্রবেশ করে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেবেন। ব্যালট ভাঁজ না করে তা নির্ধারিত বাক্সে ফেলতে হবে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স রাখা হয়েছে। এবারের ব্যালট পেপারের আকারও বড়—ডাকসুর জন্য পাঁচ পৃষ্ঠা এবং হল সংসদের জন্য এক পৃষ্ঠার ব্যালট ব্যবহার করা হচ্ছে।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট

প্রথমবারের মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। যারা ব্রেইল পড়তে সক্ষম নন, তারা অন্যের সহযোগিতা নিয়ে ভোট দিতে পারবেন। এই কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।

ভোটার ও প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা

সকালের দিকে টিএসসি, কার্জন হলসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। অনেক শিক্ষার্থী জানান, জীবনে প্রথমবার ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে ভিন্ন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ রাত জেগে প্রার্থী বাছাই করেছেন বলে জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে, যা প্রমাণ করে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ে আন্তরিক।

অন্যদিকে ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের জন্য আলাদা কোনো কার্ড তৈরি করা হয়নি, ফলে অনেক কেন্দ্রেই তারা প্রবেশে সমস্যায় পড়ছেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মোস্তাক গাউসুল হক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্যানেল

মোট ১০টির মতো আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শীর্ষ তিন পদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য এবং বামপন্থী সাত সংগঠন সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভোটকেন্দ্র ও সময়

এবারই প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কার্জন হল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, টিএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, সিনেট ভবন, উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এই আটটি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত, তবে যারা চারটার মধ্যে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবেন, তারা সবাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন।

সব মিলিয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও অংশগ্রহণমূলক চেতনার এক গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।


কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফের হামলা ও ভাঙচুর

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ০৭:২৩:১৪
কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফের হামলা ও ভাঙচুর
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আবারও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

রমনা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাজ্জাদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যার কিছু পর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন লোক জড়ো হয়। পরে তাদের মধ্য থেকেই একটি দল কার্যালয়ে ঢুকে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে।

অতীতের প্রেক্ষাপট

এর আগে, গত ৩১ আগস্ট রাজধানীর একই কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেদিন একদল বিক্ষোভকারী মিছিল থেকে বের হয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আক্রমণ চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই হামলার ঘটনায় কার্যালয়ের ভেতরকার বিভিন্ন কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্থানীয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আরও আগে, গত ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় একই স্থানে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল অতিক্রম করার সময় উভয় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে হস্তক্ষেপ করে এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক গুরুতর আহত হন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

একই কার্যালয়ে অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিকবার হামলার ঘটনা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অস্থিরতাকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পুনরাবৃত্ত হামলা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে বারবার হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

-রাফসান


ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু আজ থেকে

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৬ ০৮:২৫:৫৪
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু আজ থেকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

২১ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ২১ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, “আমরা চাই নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে। কোনো প্রকার বৈষম্য বা আচরণবিধি ভঙ্গের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে সব ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা করতে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠক পরিচালনা করবেন ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।

ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী ভোটার তালিকায় নিজেদের ছবি প্রকাশ করতে চান না, তারা আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে চিফ রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিতে পারবেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সর্বসাধারণের জন্য সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট হল ও প্রশাসনিক দপ্তরের কাছে তালিকাটি উন্মুক্ত থাকবে।

আচরণবিধি ও প্রচারের নিয়ম

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, আজ ২৬ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত প্রার্থীরা হলে বা ক্যাম্পাসে ব্যক্তিগত বা সংগঠনের ব্যানারে প্রচার চালাতে পারবেন। তবে এ সময়ের মধ্যে কোনো ধরনের সামাজিক, আর্থিক বা সেবামূলক কার্যক্রম, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় স্থানে প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এসব কর্মকাণ্ড আচরণবিধির ধারা ১৭ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাতিল মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা

পূর্বে বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রগুলোর বিরুদ্ধে দাখিল করা আপিলের প্রেক্ষিতে পুনরায় যাচাই-বাছাই শেষে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ভোটের তারিখ

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৮তম ডাকসু নির্বাচন, যা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্ররাজনীতির আয়োজন হিসেবে ছাত্রসমাজ ও জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।


উল্টো পথে রিকশা, সিসিটিভিতে ধরা পড়লো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১০:৩০:২৭
উল্টো পথে রিকশা, সিসিটিভিতে ধরা পড়লো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা
ছবিঃ সংগৃহীত

সাভারের আশুলিয়া এলাকায় একটি ট্রাকচাপায় নারী ও শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায়। নিহতদের সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।

নিহতরা হলেন—আলতাফ হোসেন (৫০), একজন ব্যবসায়ী; নুরজাহান (২৪); এবং তার চার বছরের শিশু পুত্র আবদুল্লাহ। তাঁরা সাভারের আশুলিয়ার বালিভদ্র এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময় তাঁরা একটি রিকশায় করে যাচ্ছিলেন।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, রিকশাটি বাইপাইল থেকে ইপিজেডগামী উল্টো পথে চলছিল। একটি জলাবদ্ধ ড্রেনের পাশে পৌঁছে রিকশাটি ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের ওপর উঠে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান এবং বাকি দুজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, “একজন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন এবং দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা পুরো ঘটনা নিশ্চিত হয়েছি।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মহাসড়কে উল্টো পথে যান চলাচল এখন যেন স্বাভাবিক একটি দৃশ্য। বিশেষ করে রাতে রিকশা, অটোরিকশা ও কিছু ছোট যানবাহন প্রায়ই উল্টো পথে চলাচল করে, যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা দ্রুত কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের দাবি, রাস্তায় সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো।

এই দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, শুধু চালকদের দায়িত্ববোধ নয়, সড়ক ব্যবস্থাপনাতেও আরও কঠোরতা ও প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি জরুরি। বিশেষ করে সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনা ধরা পড়ার পর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মত দেন সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

-নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ২০:৩৫:৫১
নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা এলাকায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ৩টায় নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ড. একেএম এমদাদুল হক এই রায় দেন।

রায়ে ধর্ষণের মামলায় তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন—অপু চন্দ্র সরকার (২০), মামুন আকন্দ (২৫) ও সুলতান মিয়া (২২)। এদের মধ্যে অপু চন্দ্র সরকার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নুরুল কবীর রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র ও আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই তিন যুবক এক কিশোরীকে মাছের খামারের একটি ঘরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। মেয়েটির মা রাতে কৌশলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।

কিন্তু ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে অপমান ও মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে কিশোরী নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানা বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে মামলা রেকর্ড করে। কিশোরীর মা ধর্ষণের মামলা দিতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি এবং তাকে অপমান করে থানায় থেকে বের করে দেয়। পরে এলাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের মুখে তৎকালীন ওসি আমীর তৈমুর ইলিকে প্রত্যাহার করা হয়।

পরে কিশোরীর মা পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন—একটি ধর্ষণ, অপরটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে। আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয় এবং তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

/আশিক


শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ১২:৫৬:৫৪
শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ
ছবি:দৈনিক জনকণ্ঠ

শেরপুর সদর উপজেলার কুসুমহাটি কৃষি ব্যাংক শাখার সেকেন্ড অফিসার শামসুন্নাহার ‘আশা’-এর বিরুদ্ধে কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া এবং ঋণপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দালালের সহযোগিতায় গ্রামীণ অশিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন এবং ঋণ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করছেন।

বলায়েরচর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের খাদিজা খাতুন বলেন, "আমি ভেবেছিলাম ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। দালাল ইসমাইল ঘুষ হিসেবে ৪৫ হাজার টাকা নেন। পরে জানতে পারি আমার নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ অনুমোদন হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল—তা কেউ বলেনি।”

একই ইউনিয়নের হেজাক মিয়া জানান, “২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ পেয়েছি, অথচ হাতে পেয়েছি মাত্র ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা দালাল ও কর্মকর্তার পকেটে গেছে।”

ডোবারচর গ্রামের কৃষক আব্দুল করিমের অভিযোগ, "৫০ হাজার টাকার ঋণ নিতে গিয়ে জানতে পারি ব্যাংক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছে আমার নামে। অথচ আমাকে কিছুই জানানো হয়নি, কাগজপত্রও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।”

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, এই প্রতারণা চালানো হয় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে—যার মূল দুই ব্যক্তি হলেন ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ‘আশা’ এবং স্থানীয় দালাল ইসমাইল।

২০ জুলাই বিকেলে ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক কুসুমহাটি ব্যাংক প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানান। পরে রাত সাড়ে বারোটায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং তিনজন গ্রাহককে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে। বাকি ৬০ হাজার টাকার জন্য ব্যাংক ম্যানেজার অভিযুক্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি চেক গ্রহণ করেন এবং আশ্বাস দেন যে আজকের মধ্যে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে কর্মকর্তাকে ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।

শেরপুর জেলা তাতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, “নিরীহ কৃষকদের সঙ্গে এমন প্রতারণা শুধু অনৈতিক নয়, বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

স্থানীয় নেতারা বলেন, “অডিটে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রমাণও মিলেছে। তদন্ত করে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”


বিএনপি নেতার হাতে ধরা পড়লেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সন্ত্রাসী

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৫:২৭:১২
বিএনপি নেতার হাতে ধরা পড়লেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সন্ত্রাসী

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে মিছিল ও বাজার দখলের মহড়া দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের বৃন্দাবন এলাকা থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সহায়তায় জাহাঙ্গীরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার তেলিহাটী এলাকার বাসিন্দা নূরুল ইসলামের ছেলে। তিনি আগে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শ্রীপুরের এমসিবাজার এলাকায় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মিছিল ও মহড়া দেওয়ার ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেদিন বাজারে তার নেতৃত্বে চালানো হয় ভয়ভীতি প্রদর্শন, মাইকে চাঁদা দাবির ঘোষণা এবং একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠে। ঘটনার ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাতেই বিএনপি তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করে।

এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। এক মামলায় জামিন পেলেও আরেকটিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, শুধু ওই দুটি মামলাই নয়, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আরও সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিল।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, “সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ কিংবা জুলুমবাজ বিএনপির কোনো কর্মী হতে পারে না। জাহাঙ্গীর আলম মাইকে ঘোষণা দিয়ে চাঁদাবাজি করেছে, অস্ত্র হাতে মিছিল করেছে—এমন অপকর্মকারীদের জায়গা বিএনপিতে নেই।” তিনি আরও জানান, নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারেন জাহাঙ্গীর ওই এলাকায় আত্মগোপনে আছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই ঘটনাকে ঘিরে শ্রীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের ভেতর থেকে অপরাধীকে চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা বিরল হলেও অনেকেই এটিকে বিএনপির অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।


নরসিংদীতে অস্ত্রোপচারে মারাত্মক গাফিলতি: প্রসূতির পেটে রয়ে গেল ১৮ ইঞ্চি কাপড়

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১৮:০৮:০৭
নরসিংদীতে অস্ত্রোপচারে মারাত্মক গাফিলতি: প্রসূতির পেটে রয়ে গেল ১৮ ইঞ্চি কাপড়

নরসিংদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় এক প্রসূতির পেটে ভুলবশত ১৮ ইঞ্চি দীর্ঘ একটি রক্ত মোছার কাপড় রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ওই নারী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগী লিমা আক্তারের বয়স ২৮ বছর। ১৭ জুন প্রসবব্যথা নিয়ে তিনি ভর্তি হন নরসিংদী সিটি হাসপাতালে। ওই দিনই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। ২১ জুন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর থেকেই তিনি পেটব্যথায় ভুগতে শুরু করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২৫ জুন তাকে আবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার পরীক্ষায় কিছু ধরা না পড়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়।

ঢাকায় বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন, অস্ত্রোপচারের সময় লিমার পেটে কাপড় রেখেই সেলাই করা হয়েছিল। এরপর ৩ জুলাই গভীর রাতে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারে তার পেট থেকে সেই ১৮ ইঞ্চির কাপড়টি বের করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এইচ এম শাখাওয়াত হোসেন।

লিমার বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জানান, “বোনের পেট ফুলে গেছে, দুর্গন্ধ হচ্ছে, ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয় পাঁচদিন। এখনো সে সংকটাপন্ন। নবজাতক সন্তানও বিপদে আছে, মায়ের সেবা ও দুধ পাচ্ছে না।” তিনি জানান, তারা নরসিংদীর সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, বিএমডিসিতেও অভিযোগ করেছেন এবং আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক শিউলী আক্তারকে দায়ী করেছেন লিমার স্বজনরা। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন মিয়া বলেন, “ভুল হয়েছে, সেটা মেনে নিচ্ছি। আমরা সমঝোতার চেষ্টা করেছি এবং চিকিৎসার খরচ বহনের প্রস্তাবও দিয়েছি।” তিনি জানান, পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা আরও অর্থ দাবি করায় সমঝোতা হয়নি।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. আমিরুল হক শামীম বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

ঢাকা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৫:১৬:০১
গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে রাতের আঁধারে একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা, একইসঙ্গে গুরুতর আহত করা হয়েছে আরেক যুবককে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ককোয়ালিকান্দি গ্রামে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা, যা শুক্রবার দুপুরে প্রকাশ্যে আসে।

নিহত কলেজছাত্রের নাম মাসুদ (১৯)। তিনি ককোয়ালিকান্দি গ্রামের সম্রাট প্রামাণিকের ছেলে এবং স্থানীয় তেঘুরিয়া শাহেদ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন। মাসুদের পাশাপাশি আহত যুবক রুবেল (২৬), একই এলাকার বাসিন্দা ও আলতাফুর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, দুজনেই বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করতেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জগলুল হক রিমু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রুবেলের পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকায় তিনি প্রতিবেশী মাসুদকে তার ঘরে এনে রাত কাটান। পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় আশেপাশের লোকজন সন্দেহ করে তাদের ডাকাডাকি শুরু করে। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারাত্মক দৃশ্যের মুখোমুখি হন—মাসুদ নিথর দেহে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন, আর রুবেল গলায় গুরুতর জখম নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন।

আহত রুবেলকে প্রথমে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে, তবে এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এমন নির্মম ঘটনাকে অভূতপূর্ব ও গভীর উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে। স্থানীয়ভাবে মাসুদ একজন নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার হঠাৎ এইভাবে প্রাণ হারানোতে এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অপরদিকে, আহত রুবেলের জ্ঞান ফিরলে ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্বের পরিণতি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে তদন্তকারী দল কাজ শুরু করেছে। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, আশপাশের এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়।

পাঠকের মতামত: